বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৫:৫৩

টাকার অভাবে ঢাবিতে ভর্তি অনি'শ্চিত দিনমজুরের ছেলের

টাকার অভাবে ঢাবিতে ভর্তি অনি'শ্চিত দিনমজুরের ছেলের

কুড়িগ্রাম: ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন অনিক মিয়া। জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে অপে'ক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন তিনি। অথচ টাকার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি অনি'শ্চিত তার।

অনিক মিয়া কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের তালুক শিমুলবাড়ি গ্রামের দিনমজুর আব্দুস ছালামের ছেলে। তার মায়ের নাম রেনুকা বেগম। তিন ভাইয়ের মধ্যে অনিক বড়। ছোট দুই ভাই ৫ম ও ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থী। পাঁচ বছর আগে একমাত্র বোনের বিয়ে হয়ে যায়।

অনিক মিয়া জানান, তার স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। কিন্তু তার সে স্বপ্ন বোধহয় পূরণ হবে না। কারণ, বাবার পক্ষে তার ও তার দুই ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ চালানো কঠি'ন। তার বাবা আব্দুস ছালাম ঢাকায় একটি রাইসমিলে শ্রমিকের কাজ করেন।

জানা যায়, ২০১৭ সালে শিমুলবাড়ির মিয়াপাড়া নাজিমউদ্দিন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপি-৪.৭৩ এবং ২০১৯ সালে রংপুর সরকারি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসিতে জিপি-৪.৪২ পেয়ে উর্ত্তীর্ণ হন অনিক। আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীর কাছ থেকে ধা'রদে'না নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা অংশ নেন তিনি। এরই মধ্যে ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। পাশাপাশি জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অপেক্ষ'মাণ তালিকায় রয়েছেন তিনি।

অনিক বলেন, এখন পর্যন্ত একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি ঠিকই, কিন্তু আমার স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। তবে এখনো ভর্তির টাকা জোগাড় করতে পারিনি আমি।

নিজের হ'তা'শার কথা জানাতে গিয়ে অনিক বলেন, আমার বাবার তেমন আয় নেই। তিনি সামান্য দিনম'জুরের কাজ করে সংসার চা'লান। জানি না, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারব কি-না। কেমন করে কি করব, বুঝতে পারছি না।

অনিকের গৃহিণী মা রেনুকা বেগম বলেন, জমানো টাকা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি অনি'শ্চিত হয়ে পড়েছে আমার ছেলের। ভিটেবাড়ি ছাড়া কোনো সম্পদ নেই। অভা'বের কারণে ছেলের পড়াশোনা চালাতে পারব কিনা জানি না।

অনিকের বাবা আব্দুস ছালাম বলেন, স্ত্রী ও তিন সন্তানের পড়ার খরচ জোগাতে ঢাকায় একটি রাইসমিলে দিনমজুরের কাজ করি। এই টাকায় সংসারই ঠিকমতো চলে না। অনিককে কেমন করে ঢাকায় পড়াব? ছেলেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ থাকা-খাওয়ার খরচ জোগাড় করা আমার মতো অস'হা'য় গরিবের পক্ষে অস'ম্ভব।

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুমা আরেফীন বলেন, অনিকের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়া ও ভর্তির টাকা জোগাড় না হওয়ার বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। অনিক বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ যোগাযোগ করলে তার ভর্তির ব্যাপারে যথাযথ সহায়তা করা হবে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে