বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০১৯, ১০:২৫:৪৫

একটি কৃত্রিম পায়ের জন্য আয়েশার আকুতি

একটি কৃত্রিম পায়ের জন্য আয়েশার আকুতি

সাতক্ষীরা: চার বছর আগে দুই ইঞ্জিনচালিত ভ্যানের চাপায় ডান পা থেঁতলে যায় আয়েশা খাতুনের। চিকিৎসার পর ডান পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলেন চিকিৎসকরা। এরপর থেকেই ক্রাচ দিয়ে চলাফেরা করতে শুরু করে মেয়েটি। চিকিৎসকরা একটি কৃত্রিম পা লাগানোর পরাম’র্শ দেন। তবে অভাব-অনটনের কারণে একটি কৃত্রিম পা লাগানোর টাকা জোগাড় করতে পারেননি আয়েশার বাবা।

সাতক্ষীরার তালা সদরের আগোলঝাড়া গ্রামের বাসিন্দা আয়েশা খাতুন। বর্তমানে আগোলঝাড়া দাখিল মাদরাসায় অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে সে। তার বাবা ওম’র আলী শেখ দিনমজুর। একটি ধানের চাতালে কাজ করেন। মাদরাসাছাত্রী আয়েশা খাতুন জানায়, চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ালেখা করার সময় পার্শ্ববর্তী ডুমুরিয়া থানার চুকনগর এলাকায় দুটি ইঞ্জিনচালিত ভ্যানের মাঝখানে চাপা পড়ে তার ডান পা থেঁতলে যায়। পরে চিকিৎসকরা পা কেটে বাদ দেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন- একটি কৃত্রিম পা লাগালে সে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারবে। তবে তার দিনমজুর বাবার পক্ষে আজও একটি পা লাগানোর ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি।

আয়েশা বলে, আগোলঝাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৩৩ পেয়ে পাস করেছি। বর্তমানে আগোলঝাড়া দাখিল মাদরাসায় অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছি। ক্রাচ দিয়ে চলাফেরা করতে হয়। এভাবে চলাফেরা করতে খুব ক’ষ্ট হয়। আপনারা আমা’র একটি কৃত্রিম পায়ের ব্যবস্থা করেন। খুব খুশি হবো।

আয়েশার ফুফা মোড়ল শাহিন উদ্দীন বলেন, বিভিন্ন মানুষদের কাছে সহযোগিতার জন্য গিয়েছি, কিন্তু কোনো ফল হয়নি। সাভারের সিআরপি হাসপাতালে কথা বলেছি, সেখানকার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন কৃত্রিম পা লাগাতে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হবে। টাকা জোগাড় না হওয়ার কারণে এখনো পা লাগানো হয়নি।

তিনি আরও বলেন, জে’লা সমাজসেবা কার্যালয়ে সহযোগিতার জন্য যাওয়া হয়েছিল। তারা জানিয়েছেন দেড় থেকে দুই হাজার টাকা সহযোগিতা দেয়া হবে। তবে সেটিও মৌখিকভাবে বলেছেন। আবেদন করেও কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। আয়েশার বাবা ওম’র আলী শেখ বলেন , আমি কখনো ধানের চাতাল আবার কখনো মানুষের জমিতে শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাচ্ছি। অভাবের সংসারে ৩০ হাজার টাকা একত্রে করা সম্ভব হয়নি আজও। হৃদয়বান কোনো মানুষ সহযোগিতা করলে আমা’র মেয়েটি আবার স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারবে।

আয়েশার প্রতিবেশী আইনজীবীর সহায়ক বাবলুর রহমান জানান, পরিবারটি খুব অসহায়। টাকার অভাবে মেয়েটির একটি কৃত্রিম পা লাগাতে পারছেন না তার শ্রমিক বাবা।

তালা উপজে’লা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রাজীব সরদার বলেন, কৃত্রিম পা কিনতে ২০-২৫ হাজার টাকা লাগতে পারে বা তার কমবেশিও হতে পারে। রাজধানীতে কৃত্রিম পা কিনতে পাওয়া যায়। তবে সেটা চিকিৎসকের পরাম’র্শ নিয়েই কিনতে হবে। সেটি চিকিৎসকরাই প্রতিস্থাপন করবেন।

আয়েশা খাতুনের সার্বিক বিষয় জেনে সাতক্ষীরা জে’লা প্রশাসক মোস্তফা কামাল বলেন, সহযোগিতা চেয়ে মেয়েটি জে’লা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করলে তার স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে