মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০২২, ১০:০২:০৩

মামির সঙ্গে মামার পরকীয়া দেখে ফেলায় নির্মম কান্ড!

মামির সঙ্গে মামার পরকীয়া দেখে ফেলায় নির্মম কান্ড!

এমটি নিউজ ডেস্ক : মামির সঙ্গে মামার পরকীয়া দেখা ফেলায় নির্মম কান্ড! শিশু আলিফ হোসেন ফারহানের দুই চোখ, মুখ, গলা ও ঠোঁট কেটে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রানী বেগম ও তার দেবর আজ মঙ্গলবার বিকেলে সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রাকিবুল ইসলামের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর সন্ধ্যায় তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়। এদিকে শিশু আলিফের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে মঙ্গলবার সকালে ঢাকা চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ বিকেলে তার দুই চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত রানী বেগম (২২) সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার চরবালিথা গ্রামের আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী ও আশিকুর রহমান একই গ্রামের হাচিম সরদারের ছেলে। শিশুটির বাবা সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়ার মঈনুদ্দিন সরদার জানান, মা-হারা আলিফ তার মামি রানী বেগমকে মা বলে ডাকত। তিনি বলেন, ছোট মামা আশিকুর ও বড় মামি রানী বেগমের পরকীয়া দেখে ফেলায় আলিফকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করা হয় বলে পরে তিনি জানতে পেরেছেন।

এ ঘটনায় নির্যাতিত শিশুটির বাবা মঈনুদ্দিন সরদার বাদী হয়ে আজ মঙ্গলবার রানী বেগম ও আশিকুরের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। এরপর বিকেলে রানী ও আশিকুর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রাকিবুল ইসলামের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে আলিফকে হামলার জন্য একজন অপরজনকে দায়ী করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুজনকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

মঈনুদ্দিন বলেন, তিনি ঢাকার হেমায়েতপুরে কীটনাশক প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাগ্রোমিন লিভার কম্পানিতে গাড়িচালক হিসেবে কাজ করতেন। ঢাকায় থাকার সুবাদে তার স্ত্রী শারমিন একমাত্র সন্তান আলিফকে নিয়ে বাপের বাড়ি দেবহাটা উপজেলার চরবালিথায় থাকতেন। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে শারমিন মারা যান। এর পর থেকে আলিফ তার নানির কাছে থাকে এবং চরবালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। ছয় মাস আগে তার চাকরি চলে গেলে মঈনুদ্দিন সাতক্ষীরায় ফিরে আসেন। দুই মাস আগে তিনি কলারোয়া উপজেলার গখালি গ্রামে বিয়ে করে সেখানেই অবস্থান করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুর ১টার দিকে আলিফকে রক্তাক্ত অবস্থায় খোলপেটুয়া নীর বেড়িবাঁধের পাশে একটি পানিবিহীন পুকুরে পড়ে থাকতে দেখে লোকজন তাকে উদ্ধার এবং সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই চোখ খুঁচিয়ে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত করা হয়েছে। তার চোখের আশপাশ, মুখমণ্ডলে, নাকে-মুখে-ঠোঁটেও জখম পাওয়া গেছে বলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. পারভিন আক্তার জানিয়েছেন। আলিফকে হত্যার উদ্দেশ্যে নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে দাবি তার বাবার।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দেবহাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. তুহিনুজ্জামান জানান, সদর থানার পুলিশ ও দেবহাটা থানার পুলিশ যৌথভাবে রানী বেগমকে সোমবার রাত ৮টার দিকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, দেবর আশিকুরের সঙ্গে রানী বেগমের পরকীয়ার ঘটনা দেখে ফেলায় আলিফকে ছুরি দিয়ে জখম করা হয়। এরপর সোমবার রাত ১২টার দিকে আশিকুরকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে