বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই, ২০২১, ০৪:০৮:৫০

কালীমন্দিরে দরজায় গরুর ভুঁড়ি! ক্ষমা চেয়ে দৃষ্টান্ত দেখালো স্থানীয় মুসলিমরা

কালীমন্দিরে দরজায় গরুর ভুঁড়ি! ক্ষমা চেয়ে দৃষ্টান্ত দেখালো স্থানীয় মুসলিমরা

সুনামগঞ্জ থেকে : সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার দুর্গম নিজশাল্লা গ্রামের আলীনগর পাড়ার কালীমন্দিরের দরজায় গরুর ভুঁড়ি দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে গেছে দুর্বৃত্ত। এ ঘটনায় সনাতন ধর্মীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঈদুল আজহার পরদিন রাতে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি স্থানীয়রা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও ঘটনার ৮ দিন পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

এদিকে, খবর পেয়ে নিজশাল্লা গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল লেইছ চৌধুরী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এসময় তারা সাম্প্রদায়িক এমন কাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান। একই সঙ্গে গ্রামবাসী (মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন) এ ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের কাছে ক্ষমা চান। তারা এ ঘটনার সঙ্গে যে বা যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনবেন বলেও ঘোষণা দেন। গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক এমন আচরণে তারা লজ্জিত বলে জানান।

অন্যদিকে, ঘটনা পর তাৎক্ষণিক বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মোক্তাদীর হোসেন ও থানার ওসি মো. নূর আলমকে অবগত করা হয়। ঘটনার প্রায় ৮ দিন পরে তারা আজ ঘটনাস্থলে আসবেন বলে জানা গেছে। সেখানে গিয়ে এই বিষয়সহ এলাকার অন্যান্য বিষয়ে তারা মতবিনিময় ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে জানানো হয়েছে।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিজশাল্লা গ্রামের আলীনগর পাড়ায় এখন প্রায় ৫০ পরিবার হিন্দু সম্প্রদায়ের বসবাস। ঈদুল আজহার এক সপ্তাহ আগে গ্রামের জয়দেব দাসকে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মারধর করেন গ্রামের প্রভাবশালী আব্দুস সালাম। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ঈদের পরদিন রাতের আধারে দুর্বৃত্তরা আলীনগর গ্রামের রাখাল দাসের বাড়ির কালীমন্দিরের দরজায় গরুর ভুঁড়ি বেঁধে রেখে যায়। সকালে বিষয়টি দেখে ক্ষুব্দ হন সনাতনধর্মীরা।

আলীনগর কালিমন্দিরের পার্শবর্তী বসতঘরের বাসিন্দা প্রাণেশ দাস বলেন, আমরা শত বছর ধরে এই এলাকায় বসবাস করছি। আমাদের অনেকেই নানা কারণে এলাকা ছেড়ে ধিরে ধিরে চলে যাচ্ছেন। অতীতে কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি। এভাবে আমাদের পবিত্র মন্দিরে কোরবানির গরুর ভুঁড়ি দড়ি দিয়ে বেঁধে মন্দিরের দরোজায় রেখে যাবে আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। তবে এই কৃতকর্মের জন্য গ্রামবাসী আমাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তারা আশ্বাস দিয়েছেন, দোষীকে খুঁজে বের করবেন।

শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূর আলম বলেন, এই বিষয়টি শুনেছি। গ্রামবাসী আনুষ্ঠানিকভাবে হিন্দুসম্প্রদায়ের কাছে এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন। আমরা আজ বিট পুলিশিং করে এ বিষয়সহ এলাকার শান্তি ও সম্প্রীতি বিষয়ে মতবিনিময় করব।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে