আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাড়ি বিক্রি হয়ে গেছে। সঞ্চয়ও অবশিষ্ট নেই। অবশিষ্ট নেই গয়নাও! ছেলে, ছেলের বউ তার সবকিছু নিয়ে ফেলে চলে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সে কারণে অর্থাভাব এবং নানা কারণে বছরখানেক ধরে বারবার ঠাঁইহারা হচ্ছিলেন হাওড়ার পানিয়াড়া উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত বাংলার শিক্ষিকা শেফালি মজুমদার।
শেষ পর্যন্ত মহালয়ার সকালে ৭০ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধার ঠাঁই হয়েছে আন্দুল স্টেশনের প্রতীক্ষালয়ের একপাশে। সঙ্গে প্লাস্টিকে মোড়া কিছু কাপড় আর এক বোতল পানি। পেট ভরছে যাত্রীদের বাড়িয়ে দেওয়া খাবারে!
চারিদিকে যখন উৎসবের আবহ, বৃদ্ধার তখন চোখে জল! তবু ছেলে আর ছেলের বউয়ের বিরুদ্ধে থানায় যাননি। আদতে হাওড়ার শিবপুরের বাসিন্দা শেফালিদেবী এখনো বলছেন, কেউ আমার ছেলে-বউমাকে খুঁজে দিক। আমি ওদের কাছেই ফিরতে চাই।
ঘটনার কথা জেনে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা সঞ্জয় ঘোষ অবশ্য বলেন, রেল পুলিশকে বলছি আপাতত বৃদ্ধার দেখভাল করতে। প্রয়োজনে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে। তারপর কোথাও তার থাকার ব্যবস্থা করা হবে।
শেফালিদেবীর স্বামী বিজয়রতন মজুমদার ২০ বছর আগে মারা যান। দুই ছেলেকে নিয়ে সংসার ছিল বৃদ্ধার। ২০০৩ সালে বড় ছেলে মারা যান। ৩৫ বছর শিক্ষকতার পর ২০০১ সালে অবসর নেন শেফালিদেবী। এককালীন পেনশেনের টাকায় শিবপুরে নতুন বাড়ি করে ভাড়াবাড়ি ছেড়ে বসবাস শুরু করেন। ২০০৬ সালে ছেলের বিয়ে দেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সুবীরের বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়। পরের বছর ফের ছেলের বিয়ে দেন শেফালিদেবী।
প্রথম ধাক্কাটা আসে তার পরের বছর। শেফালিদেবীর অভিযোগ, ব্যবসার জন্য টাকা লাগবে বলে ছোট ছেলে বাড়ি বিক্রি করিয়েছিল। ব্যবসার উপার্জনে কলকাতায় ফ্ল্যাট কিনবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেইমতো বাড়ি বিক্রি করে তারা মৌড়িগ্রামে ভাড়া চলে যান। কয়েক সপ্তাহ সেখানে কাটানোর পরে একদিন সকালে তার গয়না-টাকা নিয়ে ছেলে-বউমা বেরিয়ে যায়। আর ফেরেনি।