শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৯, ০৪:৫৩:৫৭

কাশ্মীরে ভয়ে পালাচ্ছেন আপেল ব্যবসায়ীরা

কাশ্মীরে ভয়ে পালাচ্ছেন আপেল ব্যবসায়ীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফের উ'ত্ত'প্ত হয়ে উঠেছে জম্মু-কাশ্মীর। হঠাৎই তৎপর হয়ে উঠেছে বি'চ্ছি'ন্নতাবাদীরা। বসে নেই ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীও। রাতদিন অব্যাহতভাবে অভিযান-ত'ল্লা'শি চালাচ্ছে। গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সেখানে ছয়জনের প্রা'ণ ঝ'রে গেছে। 

বুধবার তিন বি'চ্ছি'ন্নতাবাদী স'ন্ত্রা'সীকে হ'ত্যার কথা জানিয়েছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। একইদিনে স'ন্দে'হভাজন বি'চ্ছি'ন্নতাবাদী স'ন্ত্রা'সীদের গুলিতে একজন আপেল ব্যবসায়ীসহ নিহ'ত হয়েছে তিন বেসামরিক নাগরিক।

সম্প্রতি পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বি'চ্ছি'ন্নতাবাদী আর নিরাপত্তা বাহিনীর এই গো'লাগু'লির মধ্যে ফের থমকে গেছে জনজীবন। সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। ক্ষেতে-খামারের কাজে যেতে পারছে না কৃষক-মজুর। 

আপেল সংগ্রহের ভর মৌসুম শুরু হলেও ভয়-শ'ঙ্কা ও নিরাপত্তার অভাবে কাশঈর ছেড়ে পালাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। কুলবন্ত সিং, বয়স ৪৫। গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে কাশ্মীরে আপেল ব্যবসা করে আসছেন। পাঞ্জাব রাজ্যের অমৃতস্বরের ছোট্ট গ্রাম গাগোমালের বাসিন্দা কুলবন্ত।

প্রতিবছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকেন, কবে অক্টোবর মাস আসবে। এই সময়টা উপত্যকার আপেল তোলার ভরা মৌসুম। তার জন্য সবচেয়ে লাভজনক সময় এটাই। কুলবন্তের ভাষায়, ‘সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কাশ্মীরে যাতায়াত করি। আপেল কিনি আর ট্রাক বোঝাই করে দেশের অন্যান্য শহরে বিক্রি করি।’

কিন্তু ব্যবসার সবচেয়ে ভালো সময়টাই এ বছর তার জন্য দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। কুলবন্ত এবং তার মতো আরও অনেক ব্যবসায়ী গত দুই মৌসুম ধরে সোপিয়ান জেরার হাওয়াল এলাকায় একটি সেনা ক্যাম্পের নিকটেই ট্রাক ভিড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত আপেলের একটা চালানও নিতে পারেননি।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ আপেল উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোর অন্যতম কাশ্মীর। উপত্যকার রফতানি পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে কদর আপেলের। সেই কদরের চিন্তা করেই অনেক আগ্রহ নিয়ে আপেল চাষ করেন সেখানের চাষিরা। প্রতিবছর অঞ্চলটিতে শত শত মিলিয়ন ডলার আয় হয় আপেল বিক্রি থেকে। 

কাশ্মীরের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আপেল চাষে জড়িত। কাশ্মীরের স্থানীয় অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেই আপেল এখন গাছে পচছে। আড়াই মাস ধরে কাশ্মীর কার্যত অবরুদ্ধ। আগস্টে এর বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার পর থেকেই অ'স্থি'তিশীলতার আ'শ'ঙ্কায় সেখানে সেনা প্রহরা বাড়ানো হয়েছে। 

যোগাযোগ ব্যবস্থা অ'ব'রু'দ্ধ করে দেয়ায় কাশ্মীর কার্যত এখন ভারতের অন্য শহর ও বহির্জগৎ থেকে বি'চ্ছি'ন্ন। এমন পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে আপেল শিল্প। কাশ্মীরে আরোপ করা নি'ষে'ধা'জ্ঞার তুলে নেয়া হয়েছে ধীরে ধীরে। 

এরই অংশ হিসেবে ৭২ দিন পর গত সোমবার প্রিপেইড মুঠোফোনের সংযোগ চালু করা হয়। নি'ষে'ধা'জ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে পর্যটকদের ওপর থেকে। ওইদিন সন্ধ্যাতেই সোপিয়ান-শ্রীনগর মহাসড়কে রাজস্থানের এক ট্রাকচালককে গু'লি করে হ'ত্যা করে সন্দেহভাজন দুই বি'চ্ছি'ন্নতাবাদী স'ন্ত্রা'সী। 

পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে আরও দুজনকে হ'ত্যা করা হয়। একজন ছত্তিশগড়ের শ্রমিক। আরেকজন পাঞ্জাবের আপেল ব্যবসায়ী। একের পর এক হ'ত্যাকাণ্ডে উপত্যকার আপেলের বাজারগুলোতে ভীতি ও শ'ঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে। 

সোপিয়ানের ফল ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘ফ্রুট মান্দি’র সভাপতি মোহাম্মদ আশরাফ ওয়ানির গলায় সেই শ'ঙ্কাই ফুটে উঠল। তিনি বলেন, ‘আপেল বেচা-কেনা ও বহনের জন্য অন্য রাজ্যের পরিবহনের ওপরেই আমরা নির্ভরশীল। কিন্তু এখন প্রত্যেকে খুবই ভ'য়ের মধ্যে আছি। কেউই আপেল কিনতে আসছেন না। সব পচে যাচ্ছে।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে