বুধবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৯, ০১:৩১:১৬

দেবরের হাতে র'ক্তা'ক্ত হয়ে থানায় ভাবি, মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে নড়েচলে বসলো পুলিশ

দেবরের হাতে র'ক্তা'ক্ত হয়ে থানায় ভাবি, মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে নড়েচলে বসলো পুলিশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মাথা থেকে অঝোরে র'ক্ত ঝরছে। কোনও রকমে মাথায় হা'তচা'পা দিয়ে সেই অবস্থাতেই থানায় দৌড়েছিলেন বছর বিয়াল্লিশের রানি পান্ডে। মহিলাকে র'ক্তা'ক্ত অবস্থায় দেখে, কলকাতার রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশকর্মীরাই তাকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। 

চিকিৎসা করিয়ে থানায় অভিযোগ জানাতেও বলেন তারা। সেই মতো রানি বাঙুর হাসপাতালে গিয়ে নিজের চিকিৎসা করান। তার পর ফের থানায় আসেন। পুলিশের কাছে করা অভিযোগে রানি জানান, দীর্ঘ দিন ধরেই দেবর দিবাকর পান্ডের সঙ্গে পারিবারিক একটি বিষয়ে স'ম'স্যা রয়েছে তাদের। 

রবিবার সন্ধ্যায় দিবাকরের সঙ্গে সেই বিষয় নিয়েই তার কথা কা'টাকা'টি শুরু হয়। সেই সময় রানির গলা টি'পে ধরেন দিবাকর। তারপর একটি ভারী কাঠের ডা'ন্ডা দিয়ে তার মাথায় আ'ঘা'ত করেন তিনি। তাতে মাথা ফেটে যায় রানির। তার দাবি, সেদিন পুলিশের কাছে তিনি বার বার জানিয়েছিলেন, দিবাকর তাকে খু'নের চে'ষ্টা করেছিলেন।

ঘটনাটি যখন ঘটে রানি তখন একাই ছিলেন বাড়িতে। তার মেয়ে রিঙ্কির কথায়, ‘কথা কা'টাকা'টির মাঝেই কাকা হঠাৎ মাকে ধা'ক্কা মা'রে। ঘরে ঢুকে মা'র'তে থাকে। প্রাণ বাঁ'চাতে মা চিৎকার করলে তার গ'লা টি'পে ধরে কাকা। তারপর একটা ভা'রী কাঠের ডা'ন্ডা দিয়ে মায়ের মাথায় মা'রে।” 

তিনি জানান, ওই আ'ঘা'তে তার মায়ের কপাল থেকে মাথার মাঝখান পর্যন্ত গভীর ক্ষ'ত তৈরি হয়। এম আর বাঙুল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনটি সেলাই পড়ে। যদিও মাথার মাঝখানের ক্ষ'তে সেলাই করা যাবে না বলে জানান চিকিৎসকরা। 

রানির ছেলে প্রভাকর জানান, থানায় গিয়ে গোটা ঘটনা জানান তারা। পুলিশকে মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখানো হয়। ওই রাতেই পুলিশ গ্রে'ফ'তার করে দিবাকরকে। কিন্তু পর দিন অর্থাৎ সোমবার দিবাকরকে আদালত থেকে জা'মি'নে ছাড়া পেতে দেখে অ'বা'ক হয়ে যায় প্রভাকর।

খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন, পুলিশ খু'নের চেষ্টার বদলে অপেক্ষাকৃত কম ধারায় মামলা করেছে দিবাকরের বি'রু'দ্ধে। ভোঁতা কোনও কিছু দিয়ে আ'ঘা'ত করলে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৪ ধারায় মামলা করা হয়। এ ক্ষেত্রেও দিবাকরের বিরুদ্ধে সেই লঘু ধারাতেই মামলা করা হয়েছে।

সাধারণত ছোটখাটো মা'রামা'রির ক্ষেত্রে এই ধারা প্রয়োগ করে পুলিশ। এবং তা জামিনযোগ্য অ'পরা'ধ। জামিনের কথা জানতে পেরে এর পরপ্রভাকর স্থানীয় ৯৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়কে গোটা ঘটনার কথা জানান। এর পরেই ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়। মিতালি পুরো বিষয়টি জানান রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে।

এ ব্যাপারে মঙ্গলবার মিতালির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি তো রানির ছেলের কথা শুনে অ'বা'ক হয়ে যাই! ওর মাথায় তো গুরুতর আ'ঘা'ত লেগেছে। এত বড় ঘটনা। তারপর পুলিশ এ রকম কেন করল বুঝতে পারলাম না।” 

মন্ত্রীকে জানানোর বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি রানির আ'ঘা'তের ছবি নিয়ে সোজা চলে যাই অরূপদার কাছে। মন্ত্রীকে দেখাই। তিনিই তারপর রিজেন্ট পার্ক থানায় যোগাযোগ করেন। শুধু তাই নয়, রানির শা'রী'রিক অবস্থাও খা'রা'প ছিল। কিন্তু হাসপাতাল ভর্তি নিচ্ছিল না। অরূপদার সাহায্য নিয়েই সোমবার ওকে হাসপাতালে ভর্তি করাই।”

মন্ত্রীর ফোনেই যে পুলিশের ট'ন'ক নড়ে, তা প্রমাণ হয় সোমবার রাতেই। এমআর বাঙুর হাসপাতালে ছুটে যায় রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ। রানির বয়ান রেকর্ড করা হয়। মামলায় নতুন ধারা যোগ করতে চেয়ে মঙ্গলবার আদালতে আবেদনও জানায় তারা। দিবাকরকে ধরতেও তার বাড়িতে যায় পুলিশ। কিন্তু তত ক্ষণে তিনি চ'ম্প'ট দিয়েছেন।

কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তাও যেমন এটাকে বাহিনীর গাফিলতি হিসেবেই দেখছেন। তার কথায়, ‘পুলিশ কমিশনার বার বার বলছেন, থানার কর্মকর্তাদের পারফর্ম করতে। অথচ রিজেন্ট পার্কের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ থানায় এমন দায়সারা মনোভাব কেন দেখানো হল, বুঝতে পারছি না।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে