শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৮:৩৯

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে কী হবে মামলার রায়? দু'শ্চি'ন্তায় অংসান সু চি!

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে কী হবে মামলার রায়? দু'শ্চি'ন্তায় অংসান সু চি!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নেদারল্যান্ডসের হেগে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে তিন দিনের শুনানির পর যত দ্রুত সম্ভব এ মামলার রায় দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন বিচারকরা। তবে সেজন্য নির্দিষ্ট কোনো তারিখের কথা জানাননি আইসিজের বিচারক প্যানেলের প্রধান আবদুলকোই আহমদ ইউসুফ।

সাধারণত চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে রায় দেওয়ার একটি রীতি আছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাঁ'ধাধ'রা কোনো নিয়ম নেই। তাই শুনানি শেষ হওয়া মাত্র বিশ্বব্যাপী জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে কী থাকবে আদালতের রায়ে। ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের (আইসিজে) ১৫ বিচারকের সঙ্গে প্যানেলে আছেন গাম্বিয়া ও মিয়ানমারের মনোনীত দুই বিচারক। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে তারা সিদ্ধান্ত দেবেন। 

আদালত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইসিজের মামলাটি করা হয়েছে মিয়ানমারের বি'রু'দ্ধে, সু চির বি'রু'দ্ধে নয়। তারপরও দু'শ্চি'ন্তায় অংসান সু চি! আইসিজে কোনো ব্যক্তিবিশেষকে সাজা দিতে পারে না, যেমনটি পারে আন্তর্জাতিক অ'পরা'ধ আদালত (আইসিসি)। আইসিসি আলাদাভাবে রোহিঙ্গাদের বিষয়টি তদন্ত করছে। 

আইসিজের বিধি অনুসারে, জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত এক দেশ অন্য দেশের বি'রু'দ্ধে আন্তর্জাতিক আইন ভ'ঙ্গের অ'ভিযো'গ তুলতে পারে। গাম্বিয়ার করা এ মামলায় গ'ণহ'ত্যা প্র'তিরো'ধ ও এর শা'স্তিবিধানে ১৯৮৪ সালে স্বাক্ষরিত কনভেনশন ল'ঙ্ঘ'নের অভিযোগ করা হয়েছে মিয়ানমারের বি'রু'দ্ধে। ১৯৫৬ সালে ওই ‘জেনোসাইড কনভেনশনে’ সই করেছিল মিয়ানমার। গাম্বিয়াও এ কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ। 

এ কনভেনশনের আওতায় দেশগুলো শুধু গ'ণহ'ত্যা থেকে বিরত থাকাই নয়, বরং এ ধরনের অ'পরা'ধ প্র'তিরো'ধ করা এবং এমন অ'পরা'ধের জন্য শা'স্তিবি'ধানেও বাধ্য। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, এই আদালতের সিদ্ধান্ত মানার আইনি বাধ্যবাধকতা আছে এবং এর বি'রু'দ্ধে আপিল করার কোনো সুযোগ নেই। 

যদিও সিদ্ধান্ত মানতে বা'ধ্য করার কোনো ক্ষ'ম'তা নেই এ আদালতের এবং সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করার বহু উদাহরণ রয়েছে। গাম্বিয়ার পক্ষ থেকে শুনানিতে রোহিঙ্গাদের সু'র'ক্ষা ও তাদের ন্যা'য়বি'চার নিশ্চিত করার স্বার্থে কিছু অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ নেওয়ার আরজি জানানো হয়। রোহিঙ্গাদের ওপর নি'পী'ড়ন ব'ন্ধ করা এবং গ'ণহ'ত্যার আলামত সংরক্ষণের আদেশ চাওয়া হয় আইসিজের কাছে। 

মিয়ানমার গ'ণহ'ত্যা চালিয়েছে কিনা সে বিষয়ে রায় দিতে হলে আদালতে এটা প্রমাণ হতে হবে যে, রাষ্ট্রটি রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু জ'নগো'ষ্ঠীকে আংশিক কিংবা সম্পূর্ণভাবে ধ্বং'স করে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েই কাজ করেছে। তবে সেটা যদি প্রমাণও হয় তবু অং সান সু চি কিংবা মিয়ানমারের জেনারেলদের গ্রে'ফ'তার করা কিংবা তাদেরকে বিচার করার মতো প'দক্ষে'প নিতে পারবে না আইসিজে। 

তবে মিয়ানমারকে দো'ষী সা'ব্য'স্ত করে আদালত রায় দিলে নি'ষে'ধা'জ্ঞা আ'রো'পের মতো পদক্ষেপ আসতে পারে। এতে মিয়ানমার বিশ্বে ভাবমূর্তি হা'রা'নো এবং অর্থনৈতিক ক্ষ'তির মুখে পড়তে পারে। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে সেনাবাহিনীর অভিযানে যে ব'র্ব'রতা চালানো হয়েছে, তার মধ্য দিয়ে ১৯৮৪ সালের আন্তর্জাতিক গ'ণহ'ত্যা কনভেনশন ভ'ঙ্গ করার অভিযোগে মিয়ানমারকে জাতিসংঘের এই সর্বোচ্চ আদালতে এনেছে পশ্চিম আফ্রিকার ছোট্ট দেশ গাম্বিয়া। 

গত মঙ্গলবার দ্য হেগের পিস প্যালেসে গাম্বিয়ার পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করতে এসে দেশটির আইনমন্ত্রী আবুবকর তামবাদু মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর ব'র্ব'রতার চিত্র তুলে ধরেন এবং গ'ণহ'ত্যা ব'ন্ধের দাবি জানান।

এরপর বুধবার মিয়ানমারের পক্ষে বক্তব্য দিতে এসে দেশটির স্টেট কাউন্সিলর সু চি গ'ণহ'ত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, রাখাইনের পরিস্থিতি সম্পর্কে গাম্বিয়া যে চিত্র এ আদালতে উপস্থাপন করেছে তা ‘অস'ম্পূ'র্ণ ও বি'ভ্রা'ন্তিকর’। তৃতীয় ও শেষ দিনের শুনানিতে বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের যু'ক্তিত'র্ক শোনেন আইসিজের ১৭ সদস্যের বিচারক প্যানেল।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে