বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২০, ০৬:০৪:১৪

দিল্লিতে বেছে বেছে মুসলিমদের বাড়ি ও স্থাপনায় হা'মলা : বিবিসি

দিল্লিতে বেছে বেছে মুসলিমদের বাড়ি ও স্থাপনায় হা'মলা : বিবিসি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সহিং'সতার তৃতীয় রাতেও বেশিরভাগ ঘটনায় মুসলিমদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে হা'মলার খবর পাওয়া গেছে। রোববার রাত থেকে শুরু হওয়া সং'ঘ'র্ষে এ পর্যন্ত ২১ জন নিহ'ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। গত এক দশকের মধ্যে চলমান ঘটনাবলিকে ভারতে সবচেয়ে ভ'য়াব'হ সহিং'সতা বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।

দেশটির নাগরিকত্ব আইনের পক্ষ-বিপক্ষ গোষ্ঠীর মধ্যে সং'ঘ'র্ষের সূচনা হয়েছিল গত রোববার, যা পরে সা'ম্প্রদা'য়িক সহিংসতায় রূপ নেয় বলে সংবাদদাতারা জানান। ছবি এবং ভিডিওতে সয়লাব সামাজিক মাধ্যম। ছবিতে দেখা গেছে, অ'গ্নিসং'যোগের পাশাপাশি লাঠি-রড নিয়ে মু'খোমু'খি অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছেন সং'ঘ'র্ষকারীরা।

বিবিসির অনলাইন প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিহ'তদের মধ্যে মুসলমান ও হিন্দু— এই দুই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষই রয়েছে। এছাড়া আহ'ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ১৯০ জন। বিবিসির সংবাদদাতারা বলছেন, আহ'তদের মধ্যে গু'লিবি'দ্ধসহ সব ধরনের হা'মলার শি'কার ব্যক্তিরাই আছেন।

দিল্লি থেকে বিবিসির এক সংবাদদাতা জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবারও পরস্পরের প্রতি পাথর নি'ক্ষে'প, অ'গ্নিসং'যো'গ ও ব্যা'পক ভাং'চুরের ঘটনা ঘটে দিল্লির উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে। তবে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ উত্তর-পূর্ব দিল্লির জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশন ও মৌজপুর চক থেকে বি'ক্ষো'ভকারীদের জো'রপূর্বক সরিয়ে দিয়েছে। নাগরিকত্ব আইনের পক্ষ-বিপক্ষের মানুষেরা এখানে পরস্পরের বি'রু'দ্ধে অবস্থান নিয়েছিল।

আজ বুধবার সকাল নাগাদ পুরো এলাকায় পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। গতকাল গভীর রাতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল সহিং'সতা হয়েছে এমন কিছু এলাকা ঘুরে দেখেছেন এবং শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি সিলমপুর, জাফরাবাদ, মৌজপুর এবং গোকুলপুরি চক এলাকা পরিদর্শন করেন। 

দিল্লিতে সহিং'সতার প্রেক্ষিতে আজ বৈঠকে বসছে নিরা'পত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি। অজিত দোভাল এ কমিটির সামনে বর্তমান পরিস্থিতির বিস্তারিত তুলে ধরবেন। প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, ধর্মীয় এ সহিং'সতার কারণে স্কুল ব'ন্ধ এবং বোর্ডের পরীক্ষা স্থ'গি'ত করা হয়েছে। ওদিকে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় এবং জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার শিক্ষার্থীরা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাড়ির সামনে গিয়ে বি'ক্ষো'ভ করেছে মঙ্গলবার রাতেই। 

তবে পুলিশ জলকামান দিয়ে রাত সাড়ে ৩টা নাগাদ তাদের ছ'ত্রভ'ঙ্গ করে দেয়। আবার রাতেই এক ন'জিরবিহীন আ'দেশে হাইকোর্ট তিন দিন ধরে চলা স'হিং'সতায় আহ'তদের নিরা'পদে হাসপাতালে নেয়া ও জ'রু'রি চিকিৎসা দেয়ার নি'র্দে'শ দিয়েছে প্রশাসনকে। বিভিন্ন হাসপাতালের ডাক্তারদের পি'টিশনের শুনানি হয়েছে রাতেই, বিচারপতি এস মুরলীধরের বাসায় দুজন বিচারপতির বেঞ্চে। এদিকে স'হিং'সতা ছড়িয়ে পড়ার প্রে'ক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পুলিশ ও অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

এ বৈঠকে মঙ্গলবারই স্পেশাল পুলিশ কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া এসএন শ্রীবাস্তবও যোগ দেন। তবে সহিং'সতার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এখন তী'ব্র স'মালো'চনাও হচ্ছে। প্রত্য'ক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বিবিসি সংবাদদাতারা বলছেন, সংঘ'র্ষকারীদের কারও কারও হাতে ব'ন্দু'ক দেখা গেছে। স'হিং'সতা হয়েছে মূলত উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে। এসব এলাকার সড়কগুলো এখন অনেকটা ধ্বং'সস্তূপের মতো রূপ নিয়েছে, রাস্তায় পুড়ছে যানবাহন, উড়ছে ধোঁয়া— এমনটাই বলছিলেন বিবিসি হিন্দির সংবাদদাতা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী।

তিনি আংশিক পু'ড়ে যাওয়া মসজিদ দেখেছেন, যেখানে মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কুরআনের পাতা। আরেকটি মসজিদেও হা'মলা হয়েছে মঙ্গলবার বিকেলে। ব্যা'পক প্রচার হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, একদল লোক মসজিদের মিনারে উঠছে। সং'ঘ'র্ষ হওয়া এলাকাগুলো দিল্লি-উত্তর প্রদেশ সীমান্তের কাছে। এখানে সীমান্ত ব'ন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সাংবাদিকসহ অনেকেই টুইট করেছেন এই বলে যে, হা'মলাকারীরা তাদের ধর্মীয় পরিচয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। 

একজন ফটো সাংবাদিক বলেছেন, তাকে তার প্যান্ট খুলে ধর্মীয় পরিচয় নি'শ্চি'ত করতে বলা হয়েছিল। দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র এমএস রাধোয়া মঙ্গলবারই বলেছেন যে, পরি'স্থিতি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। তিনি জানান, পর্যাপ্ত পুলিশ ও প্যারামিলিটারি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এ নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি শান্তি ও ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখতে দিল্লির ভাই-বোনদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে