সোমবার, ২৯ জুন, ২০২০, ১১:৫৯:০৩

ট্রাম্পকে হা'রিয়ে জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষ'মতায় এলে ভারতকে বি'পদে পরতে হবে!

ট্রাম্পকে হা'রিয়ে জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষ'মতায় এলে ভারতকে বি'পদে পরতে হবে!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গত বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বড় সংবর্ধনা দেয়া হয়। সেখানে গিয়ে তিনি স্লো'গান দেন, 'আবকি বার ট্রাম্প সরকার'। ঐতিহাসিকভাবে ভারত যদিও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষেত্রে নিরপে'ক্ষতা বজায় রেখে এসেছে। কিন্তু ওই 'হাওডি মোদি' সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সেই চর্চা ভে'ঙ্গে দিয়েছেন মোদি।

এ বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এতে যদি রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জয় না পান তাহলে তা ভারত সরকারের জন্য বেশ অসুবিধাজনক হবে। কারণ ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনের সরকার মোদি সরকারের বিষয়ে বেশ ক'ঠিন অবস্থান ধ'রে রাখবেন বলেই ধারণা করা হয়। এরইমধ্যে জম্মু কাশ্মীরের ভারতীয় দ'ম'ন পী'ড়ণের বি'রু'দ্ধে কথা বলেছেন জো বাইডেন।

নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি মার্কিন মুসলিমদেরও হিসেবে রেখেছেন। চীনের উই'ঘুর, মিয়ানমারের রো'হিঙ্গা ও ভারতের কাশ্মীরিদের মানবাধিকার হ'র'ণ নিয়ে তিনি কথা বলছেন। তিনি জানিয়েছেন, এসব দেশে দেখা যায় সরকার সেখানকার মানুষের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার রক্ষায় ব্য'র্থ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই বিশ্ব অঙ্গনে মানবা'ধিকার প্রতিষ্ঠাকেই সবথেকে গুরুত্ব দিতে হবে।

কাশ্মীরের বিষয়ে বলা হয়েছে, সেখানে মানবা'ধিকার ফিরিয়ে আনতে ভারত সরকারকে যা যা করা দরকার তাই করতে হবে। মিছিল সমাবেশে বাঁ'ধা ও ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেয়া গণতন্ত্রকে দু'র্ব'ল করে দেয়। একইসঙ্গে আসামে এনআরসি ও দেশব্যাপী সিএএ বিলকে আইনে পরিণত করা ভারতের সুদীর্ঘ সেক্যুলার রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে প্রশ্নবি'দ্ধ করেছে। 

বাইডেন প্রতিশ্র'তি দিয়েছেন, ক্ষ'মতায় বসার এক বছরের মধ্যেই তিনি আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র সম্মেলন আয়োজন করবেন। তবে এতে অংশ নিতে হলে রাষ্ট্রগুলোকে প্রতিশ্র'তি দিতে হবে যে, তারা মুক্ত সমাজ গঠনে সর্বোচ্চ কাজ করে যাবে। বিশ্বের সবথেকে বড় গণতন্ত্র হিসেবে ভারত কি এই সম্মেলনে অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকতে পারবে?

নিউ ইয়র্ক টাইমসের জ'রিপ বলছে, আজকে নির্বাচন হলে বাইডেন প্রায় ৫০ ভাগ ভোট পাবেন। অপরদিকে ট্রাম্প পাবেন ৩৬ শতাংশ ভোট। অন্যান্য জরিপগুলোতেও বাইডেনকেই এগিয়ে রাখা হয়েছে। যেসব অঞ্চলে ট্রাম্প গত অক্টোবরেও এগিয়ে ছিলেন সেখানে এখন বাইডেন এগিয়ে গেছেন। এমনকি শেতাঙ্গ মার্কিনিদের যে ভোট ট্রাম্পের এমনিতেই পাওয়ার কথা ছিল তাও হা'রাতে হতে পারে তাকে। যদিও ট্রাম্পের জয় মোটেও অসম্ভব নয়।

বাইডেন জিতলে তিনি তার প্রতিশ্র'তি সব র'ক্ষা করবেন তা নাও হতে পারে। ভারত নিয়ে তার নীতি নির্ধা'রিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও কৌ'শলগত স্বার্থের কথা বিবেচনায় নিয়ে। ভারতের মতো উদীয়মান অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় সুযোগ। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ভারত যেভাবে তাল মিলিয়েছে তা বাইডেনের সরকারের সঙ্গে সম্ভবত সম্ভব নয়। বিশেষ করে চীনের বি'রু'দ্ধে বক্তব্য প্রদান, ইসলামি জ'ঙ্গিবাদের বি'রু'দ্ধে তী'ব্র অবস্থান ও দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর বৈ'ষ'ম্যমূলক আচরণ।

এর আগেও দেখা গেছে, ডেমোক্রেট নেতারা ভারতের নীতির তী'ব্র বিরো'ধিতা করেছেন। এরমধ্যে রয়েছেন, বার্নি স্যান্ডার্স, কমলা হ্যারিস, রো খান্না, প্রামিলা জয়পাল, আলেক্সান্দিরা ওকাসিয়ো ও ইলহান ওমর। দিল্লির দা'ঙ্গার সময় ভারতের সমালো'চনা করা থেকে বিরত থাকার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমালো'চনা করেছিলেন বাইডেন। প্রামিলা জয়পালের অস্ব'স্থিকর প্রশ্ন থেকে বাঁচতে ওয়াশিংটনে একটি বৈঠক বা'তিল করেছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর।

সব মিলিয়ে ডেমোক্রেটদের সঙ্গে বিজেপির আচরণ তাদের ভালো কোন বার্তা দেবে না। বাইডেনের সরকার বিশ্বজুড়ে সংখ্যাল'ঘুদের নিরা'পত্তা ও অধিকার নিয়ে অনেক বেশি সচেতন হবে। ফলে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে আরো বেশি স'ক্রি'য় ভূমিকা রাখতে শুরু করবে যুক্তরাষ্ট্র। নরেন্দ্র মোদির ভারত এত কোনোটিতেই ভাল করছে না। যদি বাইডেন ক্ষ'মতায় বসতে সক্ষম হয় তাহলে বিজেপির হিন্দুত্ববাদের কারণে ভারতকেই বি'পদে পরতে হবে। (লেখা : ভারত ভূষণ গণমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের একজন নিয়মিত কলাম লেখক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লে'ষক)

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে