সোমবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২১, ০৬:৫২:৩৮

চিরশত্রু পাকিস্তান-চীনও আমন্ত্রণ পেয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাপারে উদাসীন ভারত!

চিরশত্রু পাকিস্তান-চীনও আমন্ত্রণ পেয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাপারে উদাসীন ভারত!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে প্রতি বছর একজন করে বিদেশী রাষ্ট্রপ্রধানকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কখনোই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বাংলাদেশকে। এমনকি এ তালিকায় আমন্ত্রণ পেয়েছেন চিরশত্রু পাকিস্তান, চীনও। কিন্তু রহস্যজনক কারণে বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারত উদাসীন! 

ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস ২৬ জানুয়ারি। প্রতি বছর আড়ম্বর ও জৌলুসে দিনটি পালন করে থাকে দেশটি। ব্রিটিশ রাজের শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হলেও ১৯৫০ সালের এ দিনে রচিত হয় দেশটির সংবিধান। প্রতিবছর তাই এ দিন দিল্লির লালকেল্লায় কুচকাওয়াজ আর আনুষ্ঠানিকতায় দিনটি উদযাপিত হয়। 

এ বারের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী সমন্বয়ে গঠিত একটি দল। এ লক্ষ্যে ১২২ সদস্যের প্রতিনিধি দল এর মধ্যে পৌছেছে দিল্লি। ভারত সরকারের আমন্ত্রণে যোগ দেয়া এ দলটি সাহসী মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকার। এতে আছেন ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে গর্বিত বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও আর্টিলারি রেজিমেন্টের সদস্যরা।

১২ জানুয়ারি ঢাকা ছেড়ে দিল্লি পৌঁছেছেন তারা। এর মধ্যে চূড়ান্ত কুচকাওয়াজের অনুশীলনেও যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ দলের সদস্যরা। এর আগে দুটি মাত্র দেশ সম্মানজনক এ কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছে। ২০১৬ সালে ফ্রান্স এবং ২০১৭ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সদস্যরা অংশ নেন কুচকাওয়াজে। একদিকে ভারতে কৃষক আন্দোলন, অন্যদিকে করোনা- সব মিলে এবারের ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবসের আনুষ্ঠানিকতায় তাই সোয়া লাখ দর্শনার্থীর বদলে অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন মাত্র ২৫ হাজার। 

এর মধ্যে সাধারণ জনগণ থাকবেন মাত্র সাড়ে ৪ হাজার। কুচকাওয়াজের পাশাপাশি প্রতিবছরের আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেন বিদেশি কোন রাষ্ট্রপ্রধান। এবারের আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের। করোনার কারণে তিনি অংশ নিচ্ছেন না। গত ৫৫ বছরে এবারই প্রথমবারের মতো তাই কোন প্রধান অতিথি ছাড়া হতে যাচ্ছে প্রজাতন্ত্রের আনুষ্ঠানিকতা।

তবে অদ্ভূত হলেও সত্য প্রজাতন্ত্র দিবসের এ অনুষ্ঠানিকতায় এখন পর্যন্ত কখনোই আমন্ত্রণ পাননি বাংলাদেশের কোন রাষ্ট্রপ্রধান। গত ৫৫ বছর ধরে বিদেশী অতিথিদের তালিকায় ঠাঁই পাওয়াদের মধ্যে কঙ্গো, টোবাগো, জাম্বিয়ার মতো দেশও বাদ পড়েনি। সবচেয়ে বেশি ৫ বার যোগ দিয়েছেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রপ্রধান। ৪ বার করে যোগ দিয়েছেন ভুটান ও রাশিয়া। দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের চিরশত্রু পাকিস্তানও যোগ দেয়ার সুযোগ পেয়েছে ২ বার, সীমান্তে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয় যাদের সাথে, সে চীনও আমন্ত্রণ পেয়েছে একবার। 

এ অঞ্চলের শ্রীলঙ্কা ২ বার, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান, কাজাখাস্তানের মতো দেশ যোগ দিয়েছে একবার করে। কিন্তু মুখে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুর খেতাব পাওয়া বাংলাদেশের কোন রাষ্ট্রপ্রধানকে কখনোই জানানো হয়নি আমন্ত্রণ। স্বাভাবিকভাবেই তাই প্রশ্ন উঠছে, বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের রোল মডেল, সেখানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানাতে ভারতের এ অনীহার কারণ কি!

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে