মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই, ২০২১, ০৯:২৬:০৫

সিরিয়ায় আবারো আইএস জঙ্গিদের সংগঠিত করছে তুরস্ক!

সিরিয়ায় আবারো আইএস জঙ্গিদের সংগঠিত করছে তুরস্ক!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সিরিয়ায় উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশ বা আইএস জঙ্গিরা পরাজিত হলেও তুরস্কের কর্মকর্তারা এখনো সিরিয়ায় তাদের সামরিক উপস্থিতি বজায় থাকবে বলে ঘোষণা করেছেন। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, সিরিয়ায় তুর্কি বিরোধী কুর্দি সশস্ত্র মিলিশিয়া বাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনার জন্য সিরিয়ায় তুর্কি বাহিনী মোতায়েন থাকবে।

তবে, সিরিয়া ও ইরানের পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন এই বিবৃতি থেকে বোঝা যায় সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের কোনো ইচ্ছা আঙ্কারার নেই। এ অবস্থায় সিরিয়ার সরকার ও জনগণকে হয় সামরিক উপায়ে সে দেশ থেকে তুর্কি সেনাদের বহিষ্কার করতে হবে অথবা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মতো আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সিরিয়ায় তুর্কি সামরিক উপস্থিতির অবসান ঘটাতে হবে। তুরস্ক সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের নামে সিরিয়ায় সেনা মোতায়েন করলেও বাস্তবতা হচ্ছে অনেক আগেই ইরাক ও সিরিয়ায় তৎপর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো পরাজিত হয়েছে এবং তারা এখন পলাতক ও কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে। সুতরাং বর্তমান অবস্থায় সিরিয়ায় তুর্কি সেনা মোতায়েনের কোনো যৌক্তিকতা নেই।

এর আগে পশ্চিম এশিয়াসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ ও রাজনৈতিক মহল থেকে বলা হয়েছিল, তুরস্কের কর্মকর্তারা আবারো দায়েশ বা আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীকে পুনরুজ্জীবিত ও সংগঠিত করার জন্য সিরিয়ায় তাদের সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখার চেষ্টা করছে। বর্তমানে বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে তুরস্কের এরদোগান সরকার আইএস জঙ্গিদেরকে আবারও সংগঠিত করে তাদেরকে সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে উস্কানি দেয়ার চেষ্টা করছে। খ্যাতনামা আরব রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডেভিড আল হান্নান এ ব্যাপারে বলেছেন, তুরস্কের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে অবস্থিত সন্ত্রাসীদেরকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য অচিরেই তাদেরকে পূর্ব ইউক্রেনে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। প্রায় সাত হাজার জঙ্গিকে তারা প্রশিক্ষণের জন্য পূর্ব ইউক্রেনে স্থানান্তর করবে।

ধারণা করা হচ্ছে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান সিরিয়ার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান চালানোর জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে যাতে আইএস সন্ত্রাসীদেরকে তুরস্কের স্বার্থে কাজে লাগানো যায়। এ লক্ষ্যে তুরস্কের সরকার উত্তর সিরিয়ায় অবস্থিত কুর্দিদের নিয়ন্ত্রিত 'এইন এইসা' ক্যাম্প থেকে বহু সন্ত্রাসীকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে। সিরিয়ায় তুরস্কের সীমান্ত থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত ওই ক্যাম্পের খুব কাছেই তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। ওই ক্যাম্পে নারী ও শিশুসহ প্রায় ১২ হাজার আইএস জঙ্গী সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিল।

বাস্তবতা হচ্ছে সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ গোলযোগ শুরুর পর এবং সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর যুদ্ধ বাধলে তুরস্ক সরকারও সিরিয়ার ওই নাজুক পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে কুর্দিদের দমনের অজুহাতে সিরিয়ায় বেআইনিভাবে সেনা সমাবেশ ঘটায়। তুরস্কের এই আচরণের বিরুদ্ধে সিরিয়ার সরকার ও জনগণ যেমন প্রতিবাদ জানাচ্ছে তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সমালোচনা হচ্ছে। মোটকথা বলা যায় যুক্তরাষ্ট্রসহ পাশ্চাত্যের আধিপত্যকামী কয়েকটি দেশের সমর্থন নিয়ে তুরস্কের সরকার সিরিয়ার বিরুদ্ধে তাদের আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে। সূত্র : পার্সটুডে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে