রবিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ০৮:৩৪:৪০

এই মহিলা ৪২ লিটার স্তনদুগ্ধ দান করলেন হাসপাতালে!

এই মহিলা ৪২ লিটার স্তনদুগ্ধ দান করলেন হাসপাতালে!

দান করা যায় স্তনদুগ্ধ! আবার হাসপাতালে! একেবারে একটু আধটু নয়, একেবারে ৪২ লিটার! হ্যাঁ, এমন কাজই করে ফেলেছেন এক ভারতীয় মহিলা। কী উদ্দেশ্যে এই কাজ করেছেন তিনি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।

উদ্বৃত্ত স্তনদুগ্ধ কী কাজে লাগানো যেতে পারে, জানতে চেয়েছিলেন ‘ষান্ড কি আঁখ’ সিনেমার প্রযোজক নিধি পারমার হিরানন্দানি। বিভিন্ন জন বিভিন্নরকম পরামর্শ দিয়েছিলেন তাঁকে। কেউ বলেছিলেন বাচ্চাকে ওই দুধে স্নান করাতে। কেউ আবার বলেছিলেন তা দিয়ে ফেস প্যাক বানিয়ে ফেলতে। নিধি শুনেছিলেন অনেক সালোঁতেও স্তনদুগ্ধ দিয়ে ক্রিম বানানো হয়। কিন্তু এর কোনও উপায়ই তাঁর মনে ধরেনি। আর কাজে লাগছে না বলে স্রেফ ফেলে দেবেন, এমনটাও তিনি করতে চাইছিলেন না। অবশেষে উপায় মিলল। মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে সেই বাড়তি স্তনদুগ্ধ দান করলেন নিধি। পরিমাণ? অন্তত ৪২ লিটার।

২০২০ সালে মা হয়েছিলেন নিধি। তখন তাঁর বয়স ৪২ বছর। সন্তানধারণের পক্ষে বয়সটা বেশ বেশিই বলা যেতে পারে। কিন্তু ভাগ্যচক্রে নিধির শরীরে স্তনদুগ্ধ তৈরি হতে কোনও সমস্যা হয়নি। উলটে ছেলের মাস দেড়েক বয়স হওয়ার পর নিধি আবিষ্কার করলেন, তাঁর শরীরে যে পরিমাণ দুধ তৈরি হচ্ছে, তা তাঁর ছেলের খিদের তুলনায় যথেষ্ট বেশি। ইদানীং অনেক মা-ই পাম্প করে স্তনদুগ্ধ সঞ্চয় করে রাখেন। বিশেষ করে যাঁরা কর্মসূত্রে ব্যস্ত থাকেন। এর ফলে তাঁরা না থাকলেও বাচ্চার খাওয়ায় ঘাটতি পড়ে না।

নিধিও সেই উপায়েই স্তনদুগ্ধ সঞ্চয় করে রেখেছিলেন। একসময় তিনি দেখেন, ফ্রিজে সঞ্চিত দুধ ক্রমশ জমে উঠছে, কিন্তু খালি হচ্ছে তুলনায় কম। এদিকে ইন্টারনেট ঘেঁটে নিধি জানতে পারেন, স্তনদুগ্ধ বাড়ির ফ্রিজে তিন-চার মাসের বেশি রাখলে নষ্ট হয়ে যায়। এই সময় থেকেই নিধি খোঁজখবর করতে শুরু করেন যে এই উদ্বৃত্ত দুধ কী কাজে লাগানো যায়। অবশেষে ইন্টারনেট থেকেই তিনি জানতে পারেন আমেরিকায় স্তনদুগ্ধ দান করা যায়।

এরপর নিধির খোঁজ শুরু হয় কাছাকাছি এমন কোনও ডোনেশন সেন্টারের উদ্দেশে। জানা যায় মুম্বাই শহরেই রয়েছে সুরিয়া হসপিটাল, যেখানে ২০১৯ সাল থেকেই একটি ব্রেস্টমিল্ক ব্যাংক খোলা হয়েছে। যখন সেখানে স্তনদুগ্ধ দান করার কথাবার্তা নিধি পাকা করে ফেলেছেন, তার পরেই কোভিড মহামারির কারণে দেশ জুড়ে নেমে এল লকডাউন। তবে দেখা গেল না নিধি, না ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, কেউই হাল ছাড়ার পাত্র নন। নিধির বাড়ি থেকেই স্পর্শহীন ভাবে দুধ সংগ্রহ করতে লাগল ওই হাসপাতাল।-সংবাদ প্রতিদিন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে