রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২, ০৬:১৪:০৭

পশ্চিমা তরুণীরা প্রেমের টানে কেন দ. কোরিয়ার পথে? জানুন

পশ্চিমা তরুণীরা প্রেমের টানে কেন দ. কোরিয়ার পথে? জানুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, নেটফ্লিক্সের প্রভাবে পশ্চিমা নারীরা প্রেমের টানে দক্ষিণ কোরিয়া যাচ্ছেন। গবেষক মিন জু লির এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। দ. কোরিয়ার সিউলে বিভিন্ন হোস্টেলে থাকা পশ্চিমা তরুণীদের নিয়ে কৌতূহল থেকে তিনি এ গবেষণা করেন। খবর সিএনএন।

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানীতে থাকা অন্যান্য এশীয় নারীদের মধ্যে দর্শনীয় স্থান এবং শপিং মলগুলো ঘুরে বেড়ানোর প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু পশ্চিমা নারীরা, বিশেষ করে যাদের বয়স ২০-এর কোঠায় তারা এ ব্যাপারে উদাসীন। তারা বেশির ভাগ সময় হোস্টেলেই অবস্থান করেন। ঘুমিয়ে কিংবা কোরিয়ান টিভি শো দেখে সারা দিন পার করে অন্ধকার নেমে এলে তারা ঘর থেকে বের হন।

এসব কারণে তারা লির নজরে আসেন। লি ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি ব্লুমিংটনে পোস্ট-ডক্টরাল ফেলো হিসেবে কোরিয়ার লিঙ্গ এবং বর্ণ রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করছেন। কোরিয়ান পপ সংস্কৃতির ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক প্রফাইল পর্যটনের ওপর কী প্রভাব ফেলে তা খুঁজে বের করতে তিনি এ শহরে আছেন।

লি আটটি হোস্টেল পরিদর্শন করে ১২৩ নারীর সাক্ষাৎকার নেন। যাদের বেশির ভাগ উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপ থেকে এসেছেন। লির মতে, তাদের অনেকেই নেটফ্লিক্সের প্রভাবে এই দেশটির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন।

জনপ্রিয় কোরিয়ান টিভি শো ‘ক্র্যাশ ল্যান্ডিং অন ইউ’ এবং ‘গবলিন’ সবচেয়ে বেশি প্রচারিত হওয়ার পেছনে মূল কারণ ছিল তাদের তারকা হিউন বিন এবং গং ইউয়ের সুন্দর চেহারা এবং পাথরের মতো শরীর। যার মাধ্যমে এমন একটি বিশ্বের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল, যেখানে পুরুষরা অনেক রোমান্টিক এবং ধৈর্যশীল। 

সাক্ষাৎকার নেওয়া নারীরা বলেন, টিভিতে দেখা কোরিয়ান পুরুষদের প্রতি তারা মুগ্ধ। তারা মনে করেন, কোরিয়ান পুরুষরা অনেক রোমান্টিক। তাদের নিজেদের দেশের পুরুষরা তাদের চেহারাকে অবহেলা করেন।  

যুক্তরাজ্যের গ্রেস থর্নটন (২৫) একজন মালী। তিনি নেটফ্লিক্সে কোরিয়ান ড্রামা ‘ক্র্যাশ ল্যান্ডিং অন ইউ’ দেখার পর ২০২১ সালে সিউলে ভ্রমণ করেন। শোটিতে দেখা যায় পুরুষরা এখানে রাস্তায় নারীদের নিয়ে ঠাট্টা করেন না। যেমনটি তার দেশে দেখা যায় না। 

তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারটি তাকে বিস্মিত করে। এ ছাড়াও যুক্তরাজ্যে আমাকে খুব সাধারণ হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু এখানে আমি আলাদা, একজন আবেদনময়ী বিদেশি। ’ 

এদিকে বিশ্বব্যাপী দর্শকদের কাছে কোরিয়ান টিভি শোর জনপ্রিয়তার সাথে দ. কোরিয়ায় নারী পর্যটকের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি মিলে যায়। সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০০৫ সালে ২ দশমিক ৯ মিলিয়ন পুরুষের বিপরীতে ২ দশমিক ৩ মিলিয়ন নারী দেশটিতে ভ্রমণ করেছিলেন। 

তবে দুর্ভাগ্যবশত অনেক নারীই যখন পুরুষদের মুখোমুখি হন তখন তারা হতাশ হয়ে পড়েন। কারণ পর্দায় দেখা মুখের মতো বাস্তবের পুরুষদের মুখ এত নিখুঁত নয়। মরোক্কোর ২০ বছর বয়সী ছাত্রী মিনা বলেন, কোরিয়ান টিভি শো দেখে প্রভাবিত হয়ে তিনি ২০২১ সালে দক্ষিণের শহর বুসানে আসেন। 

টিভিতে দেখা পুরুষরা সুদর্শন এবং ধনী, তারা নারীদের প্রতিরক্ষা দিতে পারে। কিন্তু এখানকার অনেক পুরুষই মনে করেন বিদেশি নারীরা স্থানীয় নারীদের তুলনায় যৌনতার জন্য বেশি উন্মুক্ত। তাকে রাতের বেলা একটি বারে আ'টকে রাখা হয়েছিল। 

এ ছাড়া রাস্তায় অনেক অপরিচিতদের থেকে তিনি 'যৌ'ন' প্রস্তাব পেয়ছিলেন। এর পর থেকে তিনি কোরিয়ান টিভি শো থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন এবং এখানকার পুরুষদের সাথে আর ডে'ট করেন না। মিনা বলেন, ‘আমরা সাময়িক আনন্দ, পুরুষরা মানুষ এবং মানুষ সব জায়গায় সমান। ’ 

এদিকে ওয়াশিংটনের ইংরেজি শিক্ষক কুন্দ্রা মোর (২৭) ২০১৭ সালে সিউলে এসে নাই'টক্লা'ব এবং ডে'টিং অ্যাপসগুলোতে সঙ্গী খুঁজে হতাশ হন। তিনি ব'র্ণবা'দী মনোভাবের আ'ক্র'মণের শি'কার হন। তাকে যারা প্রত্যাখ্যান করেছিল তারা তাকে আফ্রিকায় ফিরে যেতে বলে।

হতাশ হওয়া অনেক নারী লিকে বলেছেন, এটি তাদের নিজেদের দোষ ছিল। তারা আদর্শ পুরুষ খুঁজে পায়নি। তারা পরে আবার চেষ্টা করবে। সূত্র : সিএনএন 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে