বৃহস্পতিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১০:৪৯:৪৪

অক্ষয় কুমারের সেই সুন্দরী নায়িকা বরখা এখন সর্বত্যাগী ভিক্ষুণী

অক্ষয় কুমারের সেই সুন্দরী নায়িকা বরখা এখন সর্বত্যাগী ভিক্ষুণী

বিনোদন ডেস্ক : ১৯৯৪ সালের মিস ইন্ডিয়ার ফাইনাল রাউন্ড। সুস্মিতা সেন, ঐশ্বর্য রাই ছাড়াও ছিলেন আরও তিন জন। হারিয়ে যাওয়া সেই তিনটি নামের এক জন বরখা মদন। সে বছর মিস ইন্ডিয়া টুরিজম ওয়ার্ল্ড ওয়াইড শিরোপা পেয়েছিলেন থার্ড রানার আপ বরখা।

১৯৭৪ সালে এক পঞ্জাবি পরিবারে জন্ম বরখার। ইংরেজিতে স্নাতক হওয়ার পরে মডেলিংকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। মডেলিং করতে করতেই বড় পর্দায় সুযোগ। ১৯৯৬ সালে আত্মপ্রকাশ ‘খিলাড়িয়োঁ কা খিলাড়ি’ ছবিতে। স্ক্রিন শেয়ার করেছিলেন অক্ষয় কুমার ও রেখার সঙ্গে।

২০০৩ সালে রামগোপাল বর্মার সিনেমা ‘ভূত’-এ বরখাই ছিলেন অশরীরীর ভূমিকায়। বক্স অফিস সফল এই ছবিতে তার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল। ‘সোচ লো’ এবং ‘সুরখাব’ নামে দু’টি ছবি প্রযোজনাও করেছিলেন তিনি। অভিনয়ও করেছিলেন দু’টিতে, মুখ্য ভূমিকায়। ছবির পাশাপাশি তাকে দেখা গিয়েছে কিছু টেলিভিশন সিরিজেও। কিন্তু কিছুতেই কাজে মন বসাতে পারছিলেন না বরখা। 

বারবার তাকে ডাকত সিকিমের বৌদ্ধমঠ। যেখানে তিনি গিয়েছিলেন ক্লাস সিক্সে পড়ার সময়। সে সময় তার বাবা সিকিমে সেনা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পাহাড়ের কোলে শান্ত গম্ভীর সেই মঠ তাকে আকর্ষণ করত। ২০১২ সালে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন বরখা। অভিনয় তথা সংসার জীবন ছেড়ে তিনি পা রাখেন সন্ন্যাসে।

বাবা মায়ের অনুমতি নিয়ে তিনি কাঠমান্ডুর এক মঠে দীক্ষা নেন। তার আগে বিসর্জন দেন মাথার লম্বা চুল। দালাই লামার এই অনুগামীর নতুন নাম হয় গ্যালতেন সামতেন। তিনি মনে করেন, সন্ন্যাস গ্রহণ মানে সংসার ছেড়ে পালানো নয়। বরং, বৌদ্ধ দর্শনকে উপলব্ধি করে সংসারের মুক্তির জন্য কাজ করা।

এখন সন্ন্যাসিনী গ্যালতেন ঘুরে বেড়ান বিশ্বের নানা বৌদ্ধ মঠে। কখনও কাঠমান্ডুতে প্রার্থনা করছেন। কখনও বা ধর্মশালায় কাজ করছেন শিশুদের জন্য। কেরিয়ারে ব্যর্থতা বা আর্থিক অভাব নয়। বরখা সংসার ছেড়ে তথাগত শরণ নিয়েছেন মানসিক অস্থিরতা দূর করতে। অতীত জীবনের জাগতিক সম্পদের মধ্যে তার কাছে আছে শুধু মোবাইল আর ল্যাপটপ।

ত্যাগী জীবনেই খুশি ভিক্ষুণী গ্যালতেন। জানিয়েছেন, আর ফিরতে চান না অভিনয়ে বা স‌ংসারে। ইচ্ছে আছে ভবিষ্যতে বৌদ্ধ ভিক্ষুণীদের উপর তথ্যচিত্র তৈরির। পাশাপাশি এমন একটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, যেখানে প্রস্তুতি নিতে পারবেন হবু সন্ন্যাসিনীরা। বরখার জীবনের মূলমন্ত্র হল, নশ্বর জীবন এমন কাজেই ব্যবহৃত হোক, যাতে অন্য কারও ক্ষতিসাধন না হয়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে