বিনোদন ডেস্ক : প্রয়াত অভিনেত্রী জিয়া খানকে যৌন হেনস্থা করেছিলেন পরিচালক সাজিদ খান। জিয়ার মৃত্যুর প্রায় সাড়ে ৭ বছর পর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন জিয়ার বোন। সম্প্রতি ৩টি ভাগে একটি তথ্যচিত্র বানিয়েছে বিবিসি। শিরোনাম, 'ডেথ ইন বলিউড'।
জিয়ার রহস্যমৃত্যু নিয়েও কথা বলা হয়েছে এই ছবিতে। সেখানে জিয়ার বোন করিশ্মা একটি সাক্ষাৎকারে জনসমক্ষে তুলে আনলেন কঠিন বাস্তব। ফারহা খানের ভাই পরিচালক সাজিদ খানের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক মিটু অভিযোগ উঠেছে। অভিনেত্রী-মডেল সলোনি চোপড়া, র্যাচেল হোয়াইট, ডিম্পল পাল এবং এক সাংবাদিক, এঁরা সবাই এক এক করে সাজিদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন।
অভিনেত্রী সলোনি চোপড়া তার সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। মানসিক ভাবে, শারীরিক ভাবে তাকে সাজিদ হেনস্থা করতেন দিনের পর দিন। সাজিদ এমনকি তাকে নিজের যৌনাঙ্গেও হাত দিতে বলতেন। ডিম্পলকে বলেছিলেন, জামাকাপড় খুলে দাঁড়াতে, না হলে 'হাউসফুল' ছবিতে তাকে কাজ দেবেন না তিনি। সেই সাজিদ খানকে নিয়ে আরও একটি বিতর্কিত ঘটনা সামনে এলো বিবিসির তথ্যচিত্রের দৌলতে।
এ বারে তার শিকারের তালিকায় নাম উঠলো প্রয়াত অভিনেত্রীর। ২০১৩ সালে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় জিয়া খানের। যা নিয়ে এখনও মামলা চলছে আদালতে। জিয়ার মায়ের অভিযোগ, জিয়ার মৃত্যুর পিছনে হাত রয়েছে তার তৎকালীন প্রেমিক সূর্য পাঞ্চোলির। কিন্তু অভিযুক্তর দাবি, জিয়া আত্মহত্যা করেছেন। সেই নিয়ে বিস্তারিত কথা রয়েছে তথ্যচিত্রে।
জিয়ার বোন করিশ্মার সূত্রে জানা গেল, 'হাউসফুল' ছবির শ্যুটের সময়ে অত্যন্ত অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন জিয়া খান। সাজিদের সঙ্গে তার চুক্তি ছিল। দৃশ্যের মহড়ার সময়ে সাজিদ তাকে টপ খুলতে বলতেন, তারপর ব্রাও খুলে ফেলতে বলতেন। জিয়া চেষ্টা করতেন, যাতে সে সব করতে না হয়। তিনি বলতেন, সিনেমার শ্যুট শুরু হলে তিনি করবেন। কিন্তু সে সব শুনতেন না সাজিদ। বাড়ি ফিরে কান্নাকাটি করতেন জিয়া।
তার কথা না শুনলে চুক্তি ভেঙে দেবেন, আবার শুনলে তিনি যৌন হেনস্থার শিকার হবেন। সবেতেই তারই হার হবে। মানসিক যন্ত্রণা নিয়েই ছবিতে কাজ করেন জিয়া। করিশ্মা নিজের একটি অভিজ্ঞতার কথাও জানিয়েছেন। মাত্র ১৬ বছর বয়স তখন করিশ্মার। দিদি জিয়ার সঙ্গে সাজিদের বাড়ি গিয়েছিলেন করিশ্মা। তার বসে থাকার ধরন দেখে সাজিদ বলেছিলেন, করিশ্মা যৌনতার ইঙ্গিত দিতে চাইছে। জিয়া মরিয়ার মতো সাজিদকে বোঝাতে চেষ্টা করেন যে, করিশ্মা বড্ডই ছোট। ও জানে না এসব কিছু। ওকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়।
বিবিসির তথ্যচিত্রটির ভিডিও মুক্তি পেতেই কঙ্গনা রানাউতসহ বহু নেটাগিরক ও তারকা সেটিকে শেয়ার করেন নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ায়। সকলেই তাদের ক্যাপশনের মাধ্যমে মনে করালেন যে, একজন নির্যাতনকারী হয়েও সাজিদ খান কখনও গ্রেফতার হননি। সাজিদের নামে একাধিক মিটু অভিযোগ উঠলেও কখনও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।