বিনোদন ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় তারকাদের মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেয়ার নেপথ্যে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলির স্বামী ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা রাজ চক্রবর্তী। এমন অভিযোগ করেছেন তারই দীর্ঘদিনের বন্ধু বিজেপিতে যোগ দেয়া অভিনেতা রুদ্রনীল।
তিনি বলেন, রাজ একজন সফল পরিচালক। তার হাতে অনেক কাজ। যার হাতে কাজ বেশি, মানুষ তো তার কথাই শোনেন। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়দের টপকে তিনি চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারম্যান হয়েছেন, ফলে ওরও তো দায়িত্ব থেকে যায়। তবে রুদ্রনীল জানান, প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পরেই রাজকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার আঁচ বন্ধুত্বে পড়বে না। তৃণমূলের পর খুব শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে বিজেপির প্রার্থীতালিকা।
বিজেপির প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ব্যক্তিনির্ভর কোনো দল নয়। তৃণমূলের মতো নয় যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নম্বর আমার কাছে আছে বলেই আবদার জানাতে পারি। বিজেপিতে প্রচুর গবেষণার পর, জনমত নেওয়ার পর, কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চলে ৪-৫ জনের মধ্যে একজনকে বেছে নেওয়া হয়। যদি সেই প্রক্রিয়ায় আমি মনোনীত হই তা হলে নিশ্চয়ই নির্বাচনে দাঁড়াব।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা তারকাখচিত। আর তা দেখে খানিক মর্মাহত সদ্য বিজেপিতে যোগদান করা রুদ্রনীল ঘোষ। নির্বাচনের জমিতে ঘাসফুল এবং পদ্মফুলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের কথা ভেবে এমন অবস্থা নয়। সহকর্মী-বন্ধুদের করুণ ভবিষ্যৎ কল্পনা করেই মুষড়ে পড়েছেন অভিনেতা।
তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পর এক প্রতিক্রিয়ায় অভিনেতা রুদ্রনীল বলেন, বিরোধী দলের প্রার্থী নিয়ে আমার মনে বিন্দুমাত্রও শঙ্কা নেই। কারণ আজ পর্যন্ত মানুষের ভোটে জিতে যে যে তারকা এই দলে থেকে কাজ করতে চেয়েছেন, তাদের কোনও দিন কাজ করতে দেওয়া হয়নি। তা নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ থেকে পদত্যাগ, কত কিছুই তো হয়েছে।
তিনি বলেন, অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী ও অভিনেতা দেব কিন্তু প্রায় বসে গিয়েছেন। তাদের লোকসভা কেন্দ্রের মানুষের জন্য তারা আওয়াজ তুলেছিলেন। কিন্তু পার্টি তাদের বুঝিয়ে দিয়েছে, তাদের মুখ বিক্রি করে শুধু ভোটে জেতা হবে। এর বাইরে তারা আর কোনও কথা বলতে পারবেন না। শিল্পীদের প্রতি সাধারণ মানুষের ভালবাসাকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূল ভোট আদায়ের রাজনীতি করে বলে দাবি করেন রুদ্রনীল।
তিনি বলেন, কাজ না করতে পেরে বীতশ্রদ্ধ হয়ে গিয়েছেন মিমি এবং দেব, তাই দলের কর্মসূচিতে তাদের দেখা যায় না। তাদের ইনস্টাগ্রামেও তাই রাজনৈতিক পোস্টের থেকে 'পাখি, ফুল, কুকুর'-এর ছবি দেখা যায় বেশি। এবারেও যেসব তারকারা মনোনীত হয়েছেন, তাদেরও কখনও মাঠে নেমে সরাসরি কাজ করতে দেখিনি।
তৃণমূলে যোগ দেয়া তারকাদের প্রসঙ্গে বিজেপিতে সদ্য যোগ দেয়া অভিনেতা রুদ্রনীল বলেন, মানুষের লাঞ্ছিত হওয়া, বঞ্চিত হওয়া, টাকা চুরি যাওয়া আমার বন্ধুরা নিশ্চয়ই সমর্থন করেন বলেই তাঁরা তৃণমূলের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা কেউ কোনও দিন প্রতিবাদও করেননি এই অন্যায়গুলোর বিরুদ্ধে। আবার হতে পারে, তারা জানেনই না এ সবের ব্যাপারে। তাই ভুল করে দাঁড়িয়ে পড়েছেন।