শুক্রবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২২, ০৫:৪৭:৫৬

নোবেলের কথায় শিমুকে পিছন থেকে চেপে ধরে ফরহাদ, হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা

নোবেলের কথায় শিমুকে পিছন থেকে চেপে ধরে ফরহাদ, হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা

বিনোদন ডেস্ক : অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুর স্বামী সাখাওয়াত আলীম নোবেল ও এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদ ফরহাদ বাল্যবন্ধু। ফরহাদের তেমন উপার্জন না থাকায় কয়েকদিন পরপরই সকালে নোবেলের বাসায় টাকা-পয়সা নিতে যেতেন। অন্যদিকে নোবেল একসময় নেশায় আসক্ত ছিলেন। 

নোবেল কিডনি ও লিভারের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন। ফলে শারীরিকভাবে তিনি অনেকটাই দুর্বল ছিলেন। ঘটনার দিন সকালে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয় নোবেলের, একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হলে শিমুকে একা কাবু করতে পারছিলেন না নোবেল। তখন বন্ধুর পক্ষ নেন ফরহাদ। এক পর্যায়ে এ জন্য সে নোবেলের কথামতো শিমুকে পিছন থেকে চেপে ধরে এবং দুজনে মিলেই গলাটিপে শিমুকে হত্যা করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আসামিদের তিন দিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার দুপুরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হুমায়ুন কবির। এর আগে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ জানিয়েছিলো, দাম্পত্য কলজের জেরে নোবেল নিজেই শিমুকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে বাল্যবন্ধু ফরহাদকে ডেকে এনে লাশ গাড়িতে তুলে কেরানীগঞ্জে ফেলে আসেন তারা।

তবে তিন দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের পর নতুন তথ্য পাওয়ার কথা জানান কেরানীগঞ্জ মডেল থানার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, দাম্পত্য কলহের কারণে স্বামী নোবেল ও তার বন্ধু ফরহাদ মিলে নিজ বাসায় গলাটিপে হত্যা করেন শিমুকে।

এদিকে বৃহস্পতিবার ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে শিমু হত্যার দায় স্বীকার করে নোবেল ও ফরহাদ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। বর্তমানে আসামিরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে হুমায়ুন কবির বলেন, ১৬ জানুয়ারি সকালে নোবেলের গ্রিন রোডের বাসায় হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। ঘটনার কিছু সময় আগে সেখানে উপস্থিত হন ফরহাদ। ফরহাদ নোবেলের বাল্যবন্ধু। প্রায় ৪০ বছরের সম্পর্ক তাদের। ফরহাদ ছিল বেকার। মাঝে মধ্যে সে নোবেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলত। ১৬ জানুয়ারি সকালে দুই হাজার টাকা ধার নিতে ফরহাদ নোবেলের বাসায় যায়। এ সময় তাকে চা দেন শিমু।

তিনি আরও বলেন, ফরহাদ ড্রয়িং রুমে বসেই চা খাচ্ছিল। এরই মধ্যে পাশের বেডরুমে নোবেল ও শিমুর মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। হইচই শুনে ফরহাদ ড্রয়িং রুম থেকে শিমুর বেডরুমে যায়। এ সময় মেজাজ হারিয়ে শিমুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় নোবেল। সেখানে ফরহাদ হাজির হলে নোবেল তাকে সহায়তা করতে বলে। ফরহাদ ছিল নোবেলের বাধ্যগত। এ জন্য সে নোবেলের কথামতো শিমুকে চেপে ধরে। এর পর দুজন মিলে গলাটিপে হত্যা করে শিমুকে।

শিমু ও নোবেলে মধ্যে কী নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল জানতে চাইলে তা এড়িয়ে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, নোবেল ও ফরহাদ গত বৃহস্পতিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এ বিষয়ে পুলিশ আরো তদন্ত করছে।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার সংবাদ সম্মেলনে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ সুপার ঢাকার নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেরানীগঞ্জ সার্কেলের নেতৃত্বে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি ও মামলার তদন্তকারী অফিসার ভিকটিম চিত্রনায়িকা শিমুর বাসায় যান এবং তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করা শুরু করেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে