শুক্রবার, ২৪ জুন, ২০২২, ০৯:৪৬:২৬

আলমগীরের যে রেকর্ড আজও কেউ ভাঙতে পারেনি!

আলমগীরের যে রেকর্ড আজও কেউ ভাঙতে পারেনি!

বিনোদন ডেস্ক: বাবা হাজি কলিমুদ্দিন আহমেদকে সবাই চেনেন দুদু মিয়া নামে। দেশের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’র অন্যতম প্রযোজক তিনি। সেই সূত্রে হয়তো আলমগীর নামের ২২ বছরের যুবকের পরিচিতি পাওয়ার কথা ছিল প্রযোজক হিসেবেই। 

কিন্তু বিধিতে অন্য কিছু ছিল বাঁধা। তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন ক্যামেরার সামনে। অভিনয় করলেন ‘আমার জন্মভূমি’ ছবিতে, যা ১৯৭৩ সালে ২৪ জুন মুক্তি পায়। সেই তরুণটিকে সবাই দেখলেন, মানলেন নায়ক আলমগীর হিসেবে।

আজ (২৪ জুন) দেশের চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা নায়কের  অভিনয়ের সুবর্ণজয়ন্তী।  ১৯৭৩ সালের ২৪ জুনের পর অসংখ্য কাজ করেছেন আলমগীর, হয়েছেন সমাদৃত। তবে এখনও নিজেকে সু-অভিনেতা ভাবতে নারাজ তিনি। নিজেকে নিয়ে মন্তব্য, ‘এখনও সু-অভিনেতা হতে পারিনি। কারণ, শিল্পী হওয়া এত সহজ নয়। অভিনয়ে পূর্ণমান ১০০-তে নিজেকে পাস মার্কস দিতে রাজি; এর বেশি নয়।’

নিজে স্বীকার না করলেও ভক্তদের ভালোবাসা ও পুরস্কার দু’হাত ভরে পেয়েছেন। বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে ৯ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ আজীবন সম্মাননা পদক পাবার রেকর্ড নায়ক আলমগীরেরই রয়েছে। ১৯৮৫ সালে প্রথম ‘মা ও ছেলে’ চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত টানা ৪ বছর শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়ে নতুন এক রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি, যা আজও কেউ ভাঙতে পারেনি। 

১৯৫০ সালের ৩ এপ্রিল আলমগীরের জন্ম। দাপট দেখিয়েছেন আশি ও নব্বইয়ের দশকজুড়ে। 

পারিবারিক টানাপোড়েন, সামাজিক অ্যাকশন, রোমান্টিক অ্যাকশন, ফোক ফ্যান্টাসিসহ প্রায় সব ধরনের চলচ্চিত্রে তিনি ছিলেন সফল। অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজক, গায়ক ও পরিচালক হিসেবেও সুনাম কুড়িয়েছেন।

ব্যক্তিজীবনে তার স্ত্রী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গায়িকা রুনা লায়লা। ঢালিউডের সোনালি দম্পতি হিসেবেও তাদের সমাদর আছে। আলমগীরের মেয়ে আঁখি আলমগীর গানের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী।

আলমগীর অভিনীত সিনেমাগুলো: ১৯৭৩ সালে- আমার জন্মভূমি,  দস্যুরানী,  অতিথি; ১৯৭৫ সালে- চাষীর মেয়ে,  লাভ ইন সিমলা,  হাসি কান্না,  মাস্তান; ১৯৭৬ সালে- জয় পরাজয়,  গুণ্ডা,  মাটির মায়া,  শাপমুক্তি,  জাল থেকে জ্বালা, মনিহার; ১৯৭৮- হীরা,  মমতা, মনের মানুষ, রাতের কলি, লুকোচুরি, হাবা হাসমত; ১৯৭৮ সালে-  জিঞ্জির, মধুমিতা, হারানো মানিক, মেহেরবানু, কন্যাবদল, কাপুরুষ, শ্রীমতি, ৪২০, বদলা, সাম্পানওয়ালা; ১৯৮০ সালে- কসাই, গাঁয়ের ছেলে, প্রতিজ্ঞা, লুটেরা, চম্পাচামেলী, ওস্তাদ সাগরেদ, দেনা পাওনা, মধুমালতী, আল হেলাল, সবুজ সাথী, ভালোবাসা, বাসরঘর, মান সম্মান, ধনদৌলত, হাসান তারেক, সালতানাত, দ্বীপকন্যা, সকাল সন্ধ্যা, হল, অগ্নিপরীক্ষা; ১৯৮২ সালে- আশার আলো, রজনীগন্ধা, বড় বাড়ীর মেয়ে; ১৯৮৩ সালে- লাইলী মজনু, ঘরের বউ; ১৯৮৪ সালে- ভাত দে, সখিনার যুদ্ধ, নতুন পৃথিবী, হিসাব নিকাশ, দুই নয়ন, অন্যায়, ঘরের লক্ষ্মী; ১৯৮৫ সালে- মা ও ছেলে, গীত; ১৯৮৭ সালে- স্বামী স্ত্রী, অপেক্ষা; ১৯৮৮ সালে- পথে হল দেখা; ১৯৮৯ সালে- সত্য মিথ্যা, রাঙা ভাবী, ক্ষতিপূরণ; ১৯৯০ সালে- দোলনা, মরণের পরে; ১৯৯১ সালে- পিতা মাতা সন্তান, অচেনা, সান্ত্বনা; ১৯৯২ সালে- অন্ধ বিশ্বাস; ১৯৯৩ সালে- শাসন, অবুঝ সন্তান; ১৯৯৪ সালে- দেশপ্রেমিক, স্নেহ; ১৯৯৫ সালে- কন্যাদান; ১৯৯৬ সালে- পোকামাকড়ের ঘর বসতি, অজান্তে, সত্যের মৃত্যু নাই, মায়ের অধিকার, দুর্জয়; ১৯৯৭ সালে-  ঘাতক; ২০০৫ সালে- টাকা; ২০০৬ সালে- রানী কুঠির বাকি ইতিহাস; ২০০৯ সালে- তুমি আমার স্বামী; ২০১০ সালে- জীবন মরণের সাথী; ২০১১ সালে- কে আপন কে পর, হৃদয় ভাঙ্গা ঢেউ, মাটির ঠিকানা; ২০১২ সালে- সে আমার মন কেড়েছে, দ্য স্পিড; ২০১৩ সালে- জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার; ২০১৪ সালে- হেড মাষ্টার, এক কাপ চা; ২০১৫ সালে- দুই পৃথিবী;  ২০১৬ সালে- বিজলী; ২০১৭ সালে- ঢাকা অ্যাটাক ও  ২০১৮ সালে- একটি সিনেমার গল্প।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে