সোমবার, ০৮ অক্টোবর, ২০১৮, ১১:৩৪:০০

বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক ৮ খাবার!

বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক ৮ খাবার!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: আমরা সাধারণত খাবার কিংবা স্ন্যাকস খাওয়ার সময় খাদ্য সম্পর্কিত ঝুঁকি নিয়ে চিন্তা করি না। কিন্তু এমন কিছু খাবার রয়েছে যা স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক ৮ টি খাবার:

* চেরি ফলের বিচি
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার এক্সটেনশন ফুড টক্সিকোলজিস্ট কার্ল কে. উইন্টার বলেন, ‘চেরি ফলের বিচির ভেতরে কেমিক্যাল রয়েছে যা সায়ানাইড উৎপন্ন করে।’ কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আপনি চেরি খাওয়া ছেড়ে দেবেন। উইন্টার বলেন, ‘বেশি পরিমাণে চেরি খেলে যে কেউ সায়ানাইডের দরুন অসুস্থ প্রতিক্রিয়ায় ভুগতে পারে। উইন্টারের মতে, ‘সর্বোত্তম ডায়েট হচ্ছে সেটাই যেখানে বিভিন্ন ধরনের খাবার আছে।’ তিনি যোগ করেন, ‘যেকোনো খাবারই পরিমিত পরিমাণে খাওয়া ভালো।’

* আপেল ও নাশপাতির বিচি
ক্লেমসন ইউনিভার্সিটি’স কলেজ অব অ্যাগ্রিকালচার, ফরেস্ট্রি অ্যান্ড লাইফ সায়েন্সের ফুড সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক পল ডাউসন বলেন, ‘শুধু চেরি ফলের বিচিই বিষাক্ত নয়, আরো অনেক ফলের বিচিতে ও পিটে এমন উপাদান থাকে, তা যখন খাওয়া হয় সায়ানাইডে পরিণত হয়।’ তিনি যোগ করেন, ‘এসব উপাদান সমষ্টিগতভাবে নাইট্রিলোসাইডস নামে পরিচিত যা প্রয়োজনীয় পুষ্টি বলে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু অত্যধিক উচ্চ মাত্রায় ভোজন করলে হাইড্রোজেন সায়ানাইড শরীরে বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছতে পারে।’

* শিমুল আলু
উইন্টার বলেন, ‘কাসাভা বা শিমুল আলু হলো অন্যতম মারাত্মক পয়জনার: এটিতে চেরি ফলের বিচির মতোই সায়ানোজেনিক গ্লাইকোসাইডস আছে- একটি কেমিক্যাল যা সায়ানাইড উৎপন্ন করতে পারে।’ শিমুল আলু যেহেতু প্রয়োজনীয় শ্বেতসার জাতীয় খাবার, তাই এর সায়ানাইডের পরিমাণ কমানোর জন্য খোসা ছাড়ানো ও ভালোভাবে রান্না করা উচিত।

* অ্যাকি ফল
কাঁচা অ্যাকি ফলে ‘হাইপোগ্লাইসিন এ’ নামক বিষাক্ত উপাদান থাকে। এই ফলটি তখন খাওয়া নিরাপদ যখন এটি লাল হয় এবং নিজে নিজে উন্মুক্ত হয়। এটির কালো বিচি বিষাক্ত এবং খোসাও। শুধু হলুদ কোয়াই খাওয়ার যোগ্য।

* কাঁচা এলডার বেরি
এ ধরনের বেরি বা আঙুর বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় না। বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, এলডার বেরি দিয়ে সুস্বাদু জ্যাম, কম্পোট, সিরাপ ও পাই তৈরি করা হয়, কিন্তু তা করা হয় শুধুমাত্র রান্নার পরে।’ না পাকা অবস্থায় এই ফল খেলে মৃত্যুও হতে পারে। আর পাকা ফলও ঠিকভাবে রান্না করে খেতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) তথ্যানুসারে, ১৯৮৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ধার্মিক দলকে তাজা এলডার বেরি জুস খেতে দেওয়া হয় এবং তাদের মধ্যে আটজনের বমিবমি ভাব, ক্র্যাম্প ও দুর্বলতা অনুভূত হয় এবং অন্যদের কারো কারো মাথাঘোরা, অসাড়তা ও প্রায় জ্ঞান হারানোর মতো অবস্থা হয়। এই উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশে বিষাক্ত উপাদান থাকে- গাছটির ডাল ও কচি পাতা খাওয়ার পর প্রাণী মারা যায়।

* বন্য মাশরুম
ডেথ ক্যাপ বা ছত্রাক জাতীয় মাশরুমের টক্সিন রান্নাকে দূষিত করে এবং যে কাউকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অসুস্থ করতে পারে- যার ফলে কোমা হতে পারে এবং এমনকি শেষপর্যন্ত মৃত্যুও, ব্রিটানিকা ডটকম অনুসারে। অন্যান্য কম টক্সিক মাশরুম খেলেও দীর্ঘস্থায়ী লিভার ও কিডনি বিকল হতে পারে।

* সবুজ আলু
কোনো কোনো প্রজাতির আলু কাঁচা থাকার সময় তার মধ্যে সোলানাইন নামক এক ধরনের বিষ থাকে। আলুর রং তখন হয় সবুজ। আলুর এই বিষ বেশি পেটে চলে গেলে মাথা ধরা, বমি হতে পারে। কখনো কখনো মানুষ কোমাতেও চলে যান। মৃত্যুও ঘটে। যদি আলুতে সবুজ দাগ দেখেন, রান্নার পূর্বে তা কেটে ফেলে দিন।

* ফুগু
জাপানের অন্যতম দামি মাছু ফুগু। কিন্তু এই মাছ বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত  দ্বিতীয়তম মেরুদণ্ডী প্রাণী। এই মাছ সকলে রান্না করতে পারেন না। জাপানের বিখ্যাত হোটেলগুলোতে এই মাছ রান্নার পূর্বে শেফদেরকে তিন বছর ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু অনেকে ঘরে এই মাছ রান্না করে খাওয়ার কারণে বিষাক্ততায় আক্রান্ত হোন।-রাইজিংবিডি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে