রুদ্র মিজান: ঘটনাটি ভয়া'বহ। যা মুহূ'র্তের মধ্যেই সকল বিশ্বাস ভে'ঙে দিতে পারে। একটি বন্ধ'ন বিচ্ছি'ন্ন হয়ে যেতে পারে। ন'ষ্ট হয়ে যেতে পারে একটি সম্পর্ক। পরিবার-সমাজ জীবনে পড়তে পারে অনা'কাঙ্ক্ষি'ত নেতি'বাচক প্রভা'ব। মোবাইল ফোনের একটি কলই যথেষ্ট। তবে এতে কলদাতা ও রিসিভকারী কেউই দা'য়ী নন। এমনটিই জানিয়েছেন ভু'ক্তভো'গীরা।
ঝা'মেলা এড়াতে অনেকেই বিষয়টি এড়ি'য়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত তা গড়িয়েছে থানা পুলিশ পর্যন্ত। বিস্ম'য়কর এই ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়রি করেছেন নাম প্রকাশে অনি'চ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা। বিষয়টি তদ'ন্ত করছে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের সা'ইবার ক্রাই'ম ইউনিট।
জানা গেছে, গত সপ্তাহের কোনো একদিন বন্ধুর ছোট ভাইয়ের ফোনে কল দেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা। কেউ একজন ফোনটি রিসিভ করে। সঙ্গে সঙ্গে হ'তভ'ম্ভ হয়ে যান তিনি। শুনতে পান অপর প্রান্ত থেকে একটি নারী কণ্ঠ। ঘন-ঘন শ্বা'স-প্রশ্বা'স। বিশেষ মুহূ'র্তের আবে'গপ্রবণ নানা শব্দ। ভু'ক্তভো'গী ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপে কল দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নেটওয়ার্ক পাচ্ছিলো না। তাৎক্ষ'ণিকভাবে নিজের গ্রামীণফোন নম্বর থেকে টেলিটকের ওই নম্বরে কল দেন। তারপরই এ ঘটনা ঘ'টে। পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন, ওই ফোনটি তার বন্ধুর ছোট ভাই রিসিভ করেননি। অটোমে'টিকভাবে ফোনটি রিসিভ হয়েছে। এতে দুশ্চি'ন্তায় পড়েন ওই কর্মকর্তা।
৪ঠা নভেম্বর রাত ৯টা ৩৪ মিনিটে আমেরিকায় নিজের মোবাইলফোন থেকে বন্ধুর ফোনে কল দেন তিনি। একইভাবে দ্রু'তই ফোনটি রিসিভ হয়। এসময় নারী কণ্ঠে আ'পত্তিক'র নানা শব্দ শুনতে পান। পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন এই কলটি তার বন্ধু রিসিভ করেননি।
একই ধরণের আরও অভিযো'গ রয়েছে। গত ৫ই ডিসেম্বর এরকম ঘটনা ঘটে ধানমন্ডির এক বাসিন্দার ফোন কলের ক্ষেত্রে। তিনি ধানমন্ডি এলাকা থেকে নিজের ব্যবহৃত গ্রামীনফোন নম্বর থেকে একই অপারেটরের মায়ের মোবাইল ফোনে কল দেন। এসময় তিনি আপ'ত্তিকর শ'ব্দ শুনতে পান। এসময় তিনি বিস্মৃ'ত হন। বারবার হ্যালো, হ্যালো করলেও অপরপ্রান্ত থেকে কোনো জবাব আসেনি। পরে বাসায় ছু'টে গিয়ে মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। মা জানান তিনি কোনো ফোনই রিসিভ করেননি। এ ঘটনার পর তিনিও বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন।
একইভাবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ণরত এক ছাত্র জানান, এ পর্যন্ত দু’বার তিনি এ ধরণের ঘটনার শিকা'র হয়েছেন। এ নিয়ে তার এক বান্ধবীকে ভু'লও বুঝে'ছেন তিনি। দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ওই ঘটনার পরই শে'ষ হয়ে যায়। বান্ধবী অনেক কান্নাকাটি করেও তাকে বুঝাতে পারেননি। ওই ছাত্র জানান, প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপে কল দেন। রিসিভ হয়নি। পরবর্তীতে বান্ধবীর ফোনে কল দেন। এবার মুহূর্তের মধ্যেই ফোন রিসিভ হয়। তিনি হ্যালো হ্যালো করছিলেন। অপর প্রান্তের শব্দ শোনে থে'মে যান। নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তিনি। কী শুনছেন। মনে হচ্ছে ফোন রিসিভ করে তাকে ব্লু' ফি'ল্মের শব্দ শোনানো হচ্ছে। তারপর থেকেই ওই বান্ধবীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তার প্রতি একটা নেতি'বাচক ধার'ণা জ'ন্ম নেয়।
তার বিশ্বাস ছিলো তার বান্ধবী এরকম না। কিন্তু বিশ্বাসের সঙ্গে বাস্তবের ওই ফোনকলটি মেলাতে গেলেই সব ধারণা এলো'মেলো হয়ে যেতো। পরবর্তীতে এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে জানতে পারেন এরকম ঘটনা আরও ঘটে'ছে। যা রিসিভকারীরা জানেনই না। তৃতীয় কেউ এটি ঘটাচ্ছে। ঝামে'লা এড়াতে অনেক ভু'ক্তভো'গী বিষয়টি এড়ি'য়ে যান। ভু'ক্তভো'গীদের মধ্যে একজন জানান, প্রতি মিনিটে ৬ টাকা ৬৫ পয়সা করে কেটে নেয়। ভু'ক্তভোগী'রা জানান, এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের কাস্টমার কেয়ারে কথা বলেও কোনো সমাধান পাননি। বিষয়টি সুরা'হা না হলে অনেকের ব্যক্তি জীবনে নেতি'বাচক প্রভা'ব পড়তে পারে। সুন্দর সম্পর্ক ন'ষ্ট হয়ে যেতে পারে। আইন-শৃঙ্খ'লারও অব'নতি ঘটতে পারে বলে মনে করেন তারা। বিষয়টি তদ'ন্ত করছে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের সাই'বার ক্রাই'ম ইউনিট।
তদ'ন্ত সংশ্লিষ্টদের ধারণা তৃতীয় কোনো পক্ষ প্রযু'ক্তির অপব্য'বহার করে মোবাইল ফোনে এটি করছে। এই ধরণের আপ'ত্তিকর শব্দের প্রতি মানুষের কৌতূ'হল, আক'র্ষণ থাকার কারণেই এই শব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে। ওই শব্দের কারণে তুলনামূলক বেশি সময় ধরে ফোনকলে থাকেন গ্রাহক। এতে তার ফোনের বেশি টাকা কেটে নেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়'ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)’র মুখপাত্র জাকির হোসেন খান বলেন, এ বিষয়টি অত্য'ন্ত গুরুত্ব'পূর্ণ। এসব বিষয়ে কাজ করার জন্য আমাদের একটি টিম রয়েছে। লিখিত অভি'যোগ পেলে যথোপযু'ক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।মানবজমিন