রবিবার, ০৮ মার্চ, ২০২০, ০৯:৩৬:২৯

টাকার মাধ্যমেও ছড়ায় করোনা ভাইরাস; যেভাবে টাকা ব্যবহার করে সংক্র'মণ এড়াবেন

টাকার মাধ্যমেও ছড়ায় করোনা ভাইরাস; যেভাবে টাকা ব্যবহার করে সংক্র'মণ এড়াবেন

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : টাকার মাধ্যমেও ছড়ায় করোনা ভাই'রাস। তাই টাকার ব্যবহারে স'ত'র্ক থাকতে হবে। চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রা'ণঘা'তি করোনা ভাই'রাস এখন বাংলাদেশেও ঢুকে পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হুঁ'শি'য়ারি দিয়েছে চীনের বাইরে ১৭ গুণ দ্রু'ত হারে করোনা ভাই'রাস ছড়িয়ে পড়ছে। দেশে তিনজনের দেহে ধ'রা পড়েছে করোনা ভাই'রাস। 

যাদেরকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হয়েছে। করোনা ভাই'রাসের কোনো ওষুধ নেই। ফলে নিজের স'ত'র্কতাই এই ভাইরাস থেকে বাঁচার সবচেয়ে ভালো উপায়। ব্যাংক নোট বা টাকায় নানা ধরণের জী'বাণুর উপস্থিতি শ'না'ক্ত করার ঘটনা নতুন নয়। এমনকি ব্যাংক নোটের মাধ্যমে সং'ক্রা'মক নানা রো'গ ছড়িয়ে পড়ার কথাও বলেন বিশেষজ্ঞরা।

২০১৫ সালে দিল্লির ইন্সটিটিউট অব জিনোমিকস অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজির বিজ্ঞানীরা তাদের এক গবেষণার ফলে জানান, ভারতের বাজারে চালু নোটগুলোর ডিএনএ পরীক্ষা করে তাতে অন্তত ৭৮ রকম বি'প'জ্জনক মাইক্রোবের অ'স্তি'ত্বের প্রমাণ পেয়েছেন- যা থেকে মা'রা'ত্মক সব রো'গ ছড়াতে পারে। এমনকি বাংলাদেশের একদল গবেষক গত বছরের অগাস্ট মাসে বলেছিলেন, তারা বাংলাদেশি কাগুজে নোট ও ধাতব মুদ্রায় এমন ধরণের ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পেয়েছেন, যা সাধারণত মলমূত্রের মধ্যে থাকে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের ছাত্রী নিশাত তাসনিম প্রায় ছয় মাস ধরে বাজারে প্রচলিত টাকা ও কয়েন নিয়ে গবেষণা করে বলেন, এসব মুদ্রায় তিনি ই-কোলাই জাতীয় ব্যাকটেরিয়া পেয়েছেন। ১৫টি উৎস থেকে নেয়া কাগজের টাকার নোট ও কয়েনে এক হাজারের চেয়ে আরো অনেক বেশি মাত্রায় ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি দেখেছেন তারা। এক হাজার মাত্রা পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়াকে সহনশীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য মনে করা হয়।

আরও পড়ুন : করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করতে যেভাবে নিজেকে প্রস্তুত করবেন

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী টাকা নিয়ে করা ওই গবেষণাটির তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। এর আগে তিনি বলেছিলেন, ''এ পরীক্ষায় আমরা যা পেয়েছি তা জনস্বাস্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে ভ'য়াব'হ। কারণ সাধারণ ব্যাকটেরিয়া তো আছেই, সাথে পাওয়া গেছে মানুষের মল-মূত্র থেকে আসা ব্যাকটেরিয়া, যা মানবদেহের জন্য ক্ষ'তিকারক।''

ফলে এসব মুদ্রার মাধ্যমে করোনা ভাই'রাসের সং'ক্র'মণ ছড়িয়ে পড়ার আ'শ'ঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি। ড. চৌধুরী বলেন, যেহেতু আমরা গবেষণা করে টাকায় বিভিন্ন ধরণের ব্যাকটেরিয়া পেয়েছি যা মানুষের অন্ত্রে নানা ধরণের রোগ সৃষ্টি করে তাই এর মাধ্যমে ভাই'রাস ছড়িয়ে পড়াটাও অস্বাভাবিক নয়। তার মতে, টাকা বা ডলারের ব্যবহার ও আন্তর্জাতিক বিনিময়ের মাধ্যমে করোনা ভাই'রাস শুধু একটি দেশের মধ্যে নয় বরং বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং এটি মা'রা'ত্মক আকার ধারণ করতে পারে।

তিনি জানান, যেহেতু এটা সরাসরি মানুষ হাত দিয়ে ধরে, অনেক সময় মুখের থুথু নিয়ে কাউন্ট করে। তাই এর মাধ্যমে করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেখান থেকে এটা হতে পারে যদি মানুষ সে হাতে খায়, মুখে দেয়। ভাইরাস বাহকের শরীরে সক্রিয় হয়, অন্যত্র নি'ষ্ক্রি'য় থাকে। টাকায় থাকলে সে হয়তো নি'ষ্ক্রি'য় থাকে, কিন্তু মানুষের সং'স্প'র্শে এলে সেটি করোনা ভাই'রাসের উপসর্গ বা রোগের সৃষ্টি করতে পারে, এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না। 

আরও পড়ুন : আশার বাণী শোনালেন চিকিৎসকরা; করোনা নিয়ে ভয় না পাওয়ার ৯ কারণ!

এমন আ'শ'ঙ্কায় চলতি বছরের গতমাসে ভাই'রাসে উপস্থিতি নিয়ে টাকা বা ব্যাংক নোট জীবাণুমু'ক্ত করার একটি উদ্যোগ দেখা যায় চীনে। দেশটিতে সম্প্রতি করোনা প্রাদু'র্ভাব শুরু হওয়ার পর সেখানে ভাই'রাসটির বিস্তার ঠেকাতে বাজার থেকে ব্যাংক নোট সরিয়ে নিয়ে তা আবার জীবাণুমু'ক্ত করে বাজারে ছাড়ে দেশটি।

টাকার মাধ্যমে ভাইরাস সং'ক্র'মণ এড়াবেন যেভাবে : বিশ্বজুড়ে এমন আ'শ'ঙ্কার পর বিশেষজ্ঞরা, ব্যাংক নোট এড়িয়ে স্প'র্শবি'হীন মাধ্যম বা প্রযুক্তি ব্যবহার করে কেনাকাটা বা লেনদেন করার পরামর্শ দিয়েছেন। স্প'র্শবি'হী'ন লেনদেন বা প্রযুক্তি বলতে, ব্যাংক নোট ছাড়া অন্য মাধ্যম যেমন কার্ড, বিভিন্ন ধরণের অ্যাপ যেমন বিকা'শ বা ন'গদ অথবা অন্য কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে লেনদেনের কথা বোঝানো হয়েছে।

তবে বাংলাদেশের মতো দেশ যেখানে প্রায় শতভাগ লেনদেন হয় ব্যাংক নোটের মাধ্যমে সেখানে কিভাবে এই পরা'মর্শ বাস্তবায়ন সম্ভব তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ ধরণের পরামর্শ মেনে চলা ক'ঠি'ন। তবে এক্ষেত্রে ব্যাংক নোট ব্যবহারের বিষয়ে তারা বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। 

জাতীয় রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক পরিচালক মাহমুদুর রহমান বলেন, ভাই'রাসটি যাতে অতিমাত্রায় ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ব্যাংক নোট ব্যবহারে স'ত'র্ক হতে হবে। অবশ্যই টাকা গোনার সময় হাত দিয়ে মুখের লালা নেবেন না। ব্যাংক নোট বা টাকা নাড়াচাড়ার পরপরই অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। 

যারা অত্যধিক মুদ্রা নাড়াচাড়া করেন, যেমন ব্যাংক কর্মী বা মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীরা, তাদেরকে অবশ্যই অতিরিক্ত স'ত'র্ক থাকতে হবে। তারা দ'স্তা'না বা গ্লা'ভস পরে নিতে পারেন। স'ত'র্কতা অবলম্বন করে হ্যান্ড স্যানিটাইজারও ব্যবহার করতে পারেন। টাকা ধ'রা বা ব্যবহারের পরপরই চোখ, নাক বা মুখে হাত দেয়া যাবে না। সূত্র : বিবিসি বাংলা।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে