শনিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯, ০২:৩৪:৪৫

শুক্রবারে মৃত্যু, যেন শেষ ইচ্ছাই পূরণ হলো কবির!

শুক্রবারে মৃত্যু, যেন শেষ ইচ্ছাই পূরণ হলো কবির!

নিউজ ডেস্ক: কবি আল মাহমুদ চেয়েছিলেন শুক্রবার দিন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে। অবশেষে তার ইচ্ছই পূর্ণ হলো। শুক্রবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে এই পৃথিবী ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে যান কবি।

‘স্মৃতির মেঘলাভোরে’ নামক একটি কবিতায় তার ইচ্ছার প্রকাশ ঘটিয়েছিলেন কবি। ওই কবিতায় তিনি লিখেছিলেন- কোনো এক শুক্রবারের ভোরবেলা মৃত্যুর ফেরেস্তা এসে ডাক দিলে তিনি খুশি মনেই তার ডাকে সারা দেবেন। আনন্দের সঙ্গেই তিনি এ পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবেন।

কবি আল মাহমুদের লেখা কবিতাটি তুলে ধরা হলো:

‘স্মৃতির মেঘলাভোরে’

__আল মাহমুদ
কোনো এক ভোরবেলা, রাত্রিশেষে শুভ শুক্রবারে

মৃত্যুর ফেরেস্তা এসে যদি দেয় যাওয়ার তাকিদ;

অপ্রস্তুত এলোমেলো এ গৃহের আলো অন্ধকারে

ভালোমন্দ যা ঘটুক মেনে নেবো এ আমার ঈদ।

ফেলে যাচ্ছি খড়কুটো, পরিধেয়, আহার, মৈথুন–

নিরুপায় কিছু নাম, কিছু স্মৃতি কিংবা কিছু নয়;

অশ্রুভারাক্রান্ত চোখে জমে আছে শোকের লেগুন

কার হাত ভাঙে চুড়ি? কে ফোঁপায়? পৃথিবী নিশ্চয়।

স্মৃতির মেঘলাভোরে শেষ ডাক ডাকছে ডাহুক

অদৃশ্য আত্মার তরী কোন ঘাটে ভিড়ল কোথায়?

কেন দোলে হৃদপিণ্ড, আমার কি ভয়ের অসুখ?

নাকি সেই শিহরণ পুলকিত মাস্তুল দোলায়!

আমার যাওয়ার কালে খোলা থাক জানালা দুয়ার

যদি হয় ভোরবেলা স্বপ্নাচ্ছন্ন শুভ শুক্রবার।
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদ আর নেই। শুক্রবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি নিউমোনিয়াসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কবিকে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ওই দিন ইবনে সিনা হাসপাতালে তাঁকে প্রথমে সিসিইউতে ও পরে আইসিইউতে নেওয়া হয়। আজ (শুক্রবার) তাকে আজ ‘লাইফ সাপোর্ট’ দেওয়া হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌড়াইল গ্রামের মোল্লাবাড়িতে ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদ জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৩ সালে আল মাহমুদের প্রথম কবিতার বই ‘লোক লোকান্তর’ প্রকাশিত হয়। এরপর প্রকাশিত হয়, ‘কালের কলস’ ও ‘সোনালী কাবিন’। কবিতা ছাড়াও আল মাহমুদ লিখেছেন উপন্যাস, গল্প, প্রবন্ধ ও আত্মজীবনী।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে