বৃহস্পতিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯, ০৪:২১:৫৮

সন্তানসম্ভবা স্ত্রী নামতে পারেননি, তাই নামেননি স্বামীও

সন্তানসম্ভবা স্ত্রী নামতে পারেননি, তাই নামেননি স্বামীও

নিউজ ডেস্ক : চকবাজারের নন্দ কুমার দত্ত রোডের ‘ওয়াহিদ ম্যানশন’ ভবনের তৃতীয় তলায় থাকতেন গর্ভবতী নারী রিয়া ও তার স্বামী রিফাত। অসুস্থ থাকার কারণে ভবন থেকে নামতে পারেননি রিয়া, তাই নামেননি রিফাতও। গর্ভের সন্তানসহ দু’জনেরই আগুনে পুড়ে হয়েছে করুণ মৃত্যু।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গের সামনে মরদেহ শনাক্ত করতে না পেরে অপেক্ষারত স্বজনদের সূত্রে জানা যায় এ তথ্য। রিয়া ও রিফাত বন্ধু ছিলেন, দুই বছর আগে তারা বিয়ে করেন। 

তাদের বন্ধু আল-আকসার সাজিদ জানান, আমার এই দুই বন্ধুর কোনো খোঁজ-খবর পাচ্ছি না। চেহারা দেখে মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। রিয়া অসুস্থ ছিল অনেক। অন্তঃসত্ত্বা হওয়া ছাড়াও আরো জটিলতায় ভুগছিলো সে।

সাজিদ বলেন, ‘আগুন লাগার পর রিফাতের পরিবারের সঙ্গে তার কথা হয়েছিল। কিন্তু রিয়াকে নিয়ে নামতে পারছিল না বলেই সে নিজেও নামেনি এবং দু’জনই পুড়ে মরে। এরকম পরিস্থিতি হওয়ার কারণে ওদের পরিবারের কয়েকজন ইতোমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাই তারাও এখানে আসতে পারছেন না। আমরাই ছবি-তথ্য নিয়ে এসেছি। তবে এখন পর্যন্ত মরদেহ শনাক্ত করতে পারিনি।’

ঢামেকের মর্গ থেকে সবশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ৪১ জনকে শনাক্ত করা গেছে। সূত্রে আরো জানা যায়, অনেকের মুখ পোড়েনি বলেই শনাক্ত করা গেছে। এছাড়া যাদের চেনা যাচ্ছে না তাদের শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষাই একমাত্র উপায়। এছাড়া রেডক্রসের প্রতিনিধিরাও মরদেহ শনাক্তকরণে তথ্য সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

পুলিশের কাছে এখনও নাম জমা দিচ্ছেন অনেকে এদিকে ভিন্ন অভিযোগও পাওয়া গেছে। নন্দ কুমার দত্ত রোডের মধ্যে ওয়াহিদ ম্যানশন ভবনের চার তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে পাঁচজনের মরদেহ। এখানে থাকতেন মো. দেলোয়ার হোসেন ও তার পরিবার। 

মৃত দেলোয়ারের ছোট ভাই কামাল হোসেন জানান, চারতলায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে আগুন নেভানোর কাজে বেশি মনোনিবেশ করেছিলেন। ভাইয়ের মরদেহ এখনো শনাক্ত করতে পারিনি। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজের দিকে মনোনিবেশ করলে পরিবারটিকে বাঁচানো যেত।

এছাড়া পাশের একটি ভবনের নিচে পানের দোকান ছিল ইব্রাহিম নামে এক লোকের। তার মরদেহ শনাক্ত করতে পারছেন না তার চাচাতো ভাই রহিম। রহিম বলেন, ঘটনাস্থলে খবর পেয়ে আমরা ছুটে আসি। দোকান একেবারে বিধ্বস্ত অবস্থায় দেখেছি। এখনো মরদেহ পাইনি। ছবি-তথ্য সবকিছু জমা দিয়েছি পুলিশের কাছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে