মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০১৯, ০১:০৬:২২

আমাদের চলার পথ কখনই সহজ ছিল না : প্রধানমন্ত্রী

আমাদের চলার পথ কখনই সহজ ছিল না : প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ’৭১-এর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বাধীনতা পুরস্কার ২০১৯ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আজ ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস। ইতোমধ্যে আমরা কিছু উদ্যোগ নিয়েছি-যেন এই দিনটা গণহত্যা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় সেজন্য আমাদের প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার সুফলটা যেন বাংলার জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে পারি, সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারি এবং আর্থসামাজিক ভাবে যেন আমরা উন্নত হতে পারি, উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বে যেন একটা মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হতে পারি সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। যার সুফল দেশবাসী পেয়েছে।’

এক সময় বাংলাদেশকে ঘুর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস আর দুর্যোগের দেশ হিসেবে বহিঃবিশ্বে অবমাননা করার কথা স্মরণ করে এজন্য দেশবাসীর মত তার নিজেরও মনোকষ্ট ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে কারণেই আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে চেষ্টা করেছে কত দ্রুত দেশটার আর্থসামাজিক উন্নয়ন করা যায় এবং উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বে একটি মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করা যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এক দশকের প্রচেষ্টার ফলে এই অর্থবছরের শেষ নাগাদ জাতীয় প্রবৃদ্ধি আমরা ৮ ভাগে নিয়ে যেতে সক্ষম হব। আমাদের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৭শ ৫১ ডলার থেকে বেড়ে ১ হাজার ৯শ’ নয় মার্কিন ডলার হতে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আজকের বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশকে আজকে মানুষ সম্মানের চোখে দেখে। এটটুকুই আমাদের তৃপ্তি। বিশ্বে বাংলাদেশকে আমরা এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ জায়গায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিপুল ভোটে তার দল আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত করে ক্ষমতায় নিয়ে আসায় বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তার এবং দলের চলার পথ সবসময়ই কন্টকাকীর্ণ ছিল উল্লেখ করেও শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের চলার পথ কখনই সহজ ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। কারণ, তারা আমাদেরকে আস্থায় নিয়েছেন, বিশ্বাস রেখেছেন, আমাদের ভোট দিয়ে আবার তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন এবং সামনে আরো কিছুদিন আমরা সময় পাচ্ছি, এদেশটাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। 

তিনি উদাহারণ টেনে বলেন, একটা দৃষ্টান্ত দিতে পারি যথন পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে আমার বা আমার পরিবারের ওপর দুর্নীতির অভিযোগ আনা হলো তখন আমরা সেটাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলাম যে, দুর্নীতি কোথায় হয়েছে সেটা প্রমাণ করতে হবে। বিশ্বব্যাংক সেটা প্রমাণ করতে পারেনি। তারা ব্যর্থ হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি সততার সাথে, নিষ্ঠার সাথে রাষ্ট্র পরিচালনা না করতাম তাহলে কখনই এই চ্যালেঞ্জ নিতে পরতাম না। সততাই হলো সবথেকে বড় শক্তি। আর সেই শক্তি ছিল বলেই সকল ষড়যন্ত্র আমরা মোকাবেলা করতে পেরেছিলাম।’

স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদানের উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে আমাদের সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহান মুৃক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য আমরা স্বাধীনতা পুরস্কার দিতে পেরেছি, সেজন্য আমরা নিজেরেকে ধন্য মনে করি। আমরা গুণীজনকে সম্মান জানাতে পেরেছি। তবে, আমাদের দেশ ও সমাজের আনাচে-কানাচে আরো এমনি বহু গুণীজন ছড়িয়ে রয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী দেশের ১৩ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে তাদের স্ব-স্ব ক্ষেত্রে গৌরবময় ও অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০১৯ এ ভূষিত করেন। গত ১০ মার্চ এ বছরের স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য ১৩ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করে সরকার।

পুরস্কারের জন্য মনোনীত ব্যক্তিগণ হচ্ছেন-স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী মোফাজ্জ্বল হায়দার চৌধুরী (মরণোত্তর), শহীদ এটিএম জাফর আলম (মরণোত্তর), এ কে এম মোজাম্মেল হক, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ড. কাজী মিসবাহুন নাহার, আব্দুল খালেক (মরণোত্তর) ও অধ্যাপক মোহাম্মাদ খালেদ (মরণোত্তর), শওকত আলী খান (মরণোত্তর), চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নুরুন্নাহার ফাতেমা বেগম, সমাজ সেবায় ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমেদ, সংস্কৃতিতে মুর্তজা বশীর, সাহিত্যে হাসান আজিজুল হক, গবেষণা ও প্রশিক্ষণে অধ্যাপক ড. হাসিনা খাঁন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিআইএনএ) এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। পুরস্কার হিসেবে ৩ লাখ টাকার চেক, ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের ৫০ গ্রাম ওজনের একটি পদক এবং সনদপত্র প্রদান করা হয়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে