রবিবার, ১৯ মে, ২০১৯, ১১:০৭:১২

দেশে ৯৫ ভাগ ক্লিনিকের আয়ের উৎস সিজারিয়ান অপারেশন

দেশে ৯৫ ভাগ ক্লিনিকের আয়ের উৎস সিজারিয়ান অপারেশন

দেশে বেসরকারি ক্লিনিকে দিন দিন বাড়ছে সিজারিয়ান অপারেশন। ক্লিনিক মালিকদের অর্থলিপ্সা, সরকারি ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু না হওয়া এবং ডাক্তারদের নৈতিকতার ঘাটতিকে দায়ী করছেন গবেষকরা। আইসিডিডিআরবি'র এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর বড় রকমের অর্থনৈতিক চাপ তৈরি হচ্ছে। দেশের অনেক পরিবার তাদের আয়ের সবচেয়ে বড় অংশ খরচ করছে সন্তান প্রসবে। এদের মধ্যে কেউ কেউ ঋণ করে কিংবা সঞ্চয় ভেঙেও এই খরচ যোগাচ্ছেন।

ওই গবেষণা থেকে আরও জানা গেছে, সিজারিয়ানের ক্ষেত্রে গড়ে খরচ পড়ছে ২৫০ ডলার বা প্রায় ২১ হাজার টাকা। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে যে খরচ প্রায় ৫ হাজার টাকা। আর বাড়িতে ডেলিভারি হলে সেটা মাত্র ১৪০০ টাকা।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) বিশ্বব্যাপী ১০ থেকে ১৫ শতাংশ প্রসব সিজারিয়ান বা সি-সেকশনে করানোর সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এই হার প্রায় ৩ গুণ হয়ে গেছে। যা এখন প্রায় ৩১ শতাংশ।

প্রতিবেদনে এভাবে বাচ্চা প্রসবে খরচ বৃদ্ধিকে বাংলাদেশের ‘ইউনিভার্সাল হেলথ কেয়ার' অর্জনে বড় বাধা হয়ে দেখা দিতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। আইসিডিডিআরবি'র এই গবেষণা প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক সাময়িকী দ্য ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব হেলথ প্লানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট এ প্রকাশিত হয়েছে।
 
গবেষণা দলের প্রধান আইসিডিডিআরবি'র ডা. আবদুর রাজ্জাক সরকার বলেন, ধনীরা সিজারিয়ানের জন্য গড়ে ২৮০ ডলার খরচ করে। এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু যারা দরিদ্র তাদের খরচও ২০০ ডলারের কম নয়। যা তাদের জন্য বড় ধরনের অর্থনৈতিক চাপ।

শিক্ষিতদের মধ্যে সিজারিয়ানের হার বেশি
আইসিডিডিআরবি'র গবেষণায় উঠে এসেছে, ৩৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী মায়েরা অন্যদের তুলনায় বেশি খরচ করছেন। অন্যদিকে, শহুরে নারীদের মধ্যে যারা শিক্ষিত এবং জন্মদানের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানেন তারাও এই বেশি খরচের পথই ধরছেন।

এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম কাজল ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, সিজারিয়ান বাড়ার প্রথম কারণটা কিন্তু অর্থনৈতিক। ৯৫ ভাগ ক্লিনিকের আয়ের উৎস সিজারিয়ান অপারেশন।

সিজারিয়ানের সংখ্যা কমানোর জন্য চিকিৎসকদের বিবেক জাগ্রত করার উপর গুরুত্ব দেন ডা. কাজল। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকদের বিবেক যদি না জাগে, এটা বন্ধ করা যাবে না৷ আর ক্লিনিকগুলোতে সিজারিয়ান অপারেশনগুলো মনিটরিংও করতে হবে। কেন করল, অন্য উপায় নিয়েছে কিনা, সেটা দেখতে হবে৷ মাসে সে কতগুলো সিজারিয়ান করল কোন ক্লিনিক ইত্যাদি।
সূত্র: সময়নিউজ.টিভি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে