নিউজ ডেস্ক: ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর কর্তৃক আড়ংকে চার লাখ টাকা জরিমানাসহ শাস্তি আরোপের ঘটনায় ওই সংস্থার কর্মকর্তা মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে তাৎক্ষণিক বদলির ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার কাছে সেটা মোটেও গ্রহণযোগ্য ছিল না। বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সংসদ সদস্য রফিকুল ইসলামের (বীর উত্তম) এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
৭৩০ টাকার পাঞ্জাবি দ্বিগুণ দামে বিক্রির দায়ে রাজধানীর উত্তরায় দেশীয় ব্র্যান্ড আড়ংয়ের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটে ৩ জুন অভিযান চালিয়ে সেটি বন্ধ করে দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার। এর কয়েক ঘণ্টা পরই আবার সেটি খুলে দেয়া হয়। ওই ঘটনার পর মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে খুলনায় বদলি করা হয়।
আড়ংয়ের ঘটনা উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোজার সময় যদিও আমি দেশের বাইরে ছিলাম, তখনো বেশ কিছু বড় বড় জায়গায় হাত দিল বলে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হঠাৎ একটা ব্যবস্থা নেয়া হলো। আমার কাছে সেটা মোটেও গ্রহণযোগ্য ছিল না।’ তিনি বলেন, ‘সাধারণ ছোট-খাটোদের ধরতে পারবে, আর বড় অর্থশালী সম্পদশালী হলেই তাদের হাত দেয়া যাবে না, তাদের অপরাধ অপরাধ না-এটাতো হয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আজকেই বলে দিচ্ছি তাকে (মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার) আরও ওই দায়িত্বই দিতে হবে। কারণ খুব দামি দামি জায়গা, তাদের যে খারাপ কিছু থাকবে না বা হবে না যারা ওগুলোর মালিক তারাও তো এই গ্যারা্ন্টি দিতে পারেন না। সেখানে কেন পরীক্ষা করতে পারবে না, পরীক্ষা করার অধিকারটা কেন থাকবে না?’
অপরাধী যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অপরাধী সে অপরাধী। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, এমন বড় বড় জায়গা আছে যেখানে হাত দিলেই দেখা যায় হাতটা পুড়ে যাচ্ছে এবং যারা এই কাজটি করতে যায় তারা অপরাধী হয়ে যায়।’
দুর্নীতি দমন সংস্থার মধ্যে অনেকেই দুর্নীতিব্যাধিতে আক্রান্ত বলে জনশ্রুতি আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা একেবারেই মিথ্যা না। সবাইতো ধোয়া তুলসীপাতা না। আর এই গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে না যে সবাই একশভাগ ভাগ সৎ হবে।’
সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে যেন জনগণের নেতিবাচক ধারণা তৈরি না হয় সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সংস্থাকে এখন থেকে সচেতন হতে হবে যারা কাজ করবে তাদের ব্যাপারেও যেন সতর্ক থাকে, তারাও যেন এমন কোনো কাজ না করে যাতে এমন জনশ্রুতি সৃষ্টি না হয়। এখানে একটা ব্যাপার আছে, দুনীতি দমনই বলেন বা খাদ্য নিরাপত্তার কথাই বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, এমন বড় বড় জায়গা আছে যেখানে হাত দিলেই হাতটা পুড়ে যাচ্ছে। এবং যারা এই কাজটি করতে যায় তারা অপরাধী হয়ে যায়। আর কিছু পত্রপত্রিকাতো আছে, এটা নিয়ে লেখালেখি শুরু করে। সেখানেও আমি নিজে মনে করি-আমাদের সচেতন থাকা উচিত। সঠিক কাজটা করেছে কিনা সেটা দেখে তারপর বিচার করা উচিত। কোন পত্রিকা কী লিখল কে কী বলল সেটায় কান না দেয়া।’