বুধবার, ২৬ জুন, ২০১৯, ০২:৪৭:২৪

নিজ সন্তানদেরই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ান না প্রাথমিকের শিক্ষকরা!

 নিজ সন্তানদেরই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ান না প্রাথমিকের শিক্ষকরা!

নিউজ ডেস্ক : দেশের প্রাথমিক শিক্ষায় গত কয়েক বছরে বেশ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এর শুরুটা হয়েছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই। ১৯৭৩ সালে ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রযাত্রার শুভ সূচনা করেছিলেন তিনি।

এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে প্রায় ২৬ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেন। মানোন্নয়নের জন্য শিক্ষার্থীদের হাতে বছরের প্রথম দিনেই রঙিন বই তুলে দেয়া, উপবৃত্তি কার্যক্রম, অনগ্রসর এলাকায় স্কুল ফিডিং চালু, সরকারি বিদ্যালয়ে দপ্তরি-কাম-প্রহরী নিয়োগ, স্টুডেন্টস কাউন্সিল গঠনসহ নান নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি।

শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও খেলাধুলার প্রতি আকৃষ্ট করতে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হচ্ছে।

প্রাথমিক পর্যায়ে বিদ্যালয়ে ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। বৃদ্ধি করা হয়েছে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতনও। সরকারের এমন নানামুখী আয়োজন সত্ত্বেও বগুড়ার শেরপুর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষার কার্যক্রমে চলছে নানা ধরণের অসঙ্গতি।

উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গেছে, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের সন্তানেরাই পড়ালেখা করছে নানা কিন্ডারগার্টেন বা নামীদামী প্রাইভেট স্কুলে।

কিছু কিছু শিক্ষকদের সন্তান এখন মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক বা উচ্চ শিক্ষার জন্য অনার্স শ্রেণীতে পড়লেও যেসকল শিক্ষকদের ছেলে মেয়ে প্রাথমিক পর্যায়ের রয়েছে সেসকল শিক্ষকগণও তাদের সন্তানকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি না করিয়ে ছুটছে প্রাইভেট স্কুলের পিছনে। এতে করে সচেতন অভিভাবক মহলে দেখা দিয়েছে নানা ধরণের প্রশ্ন।

উপজেলার উত্তর শাহপাড়ার একাধিক অভিভাবক নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, আমরা কিভাবে আমাদের সন্তানকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠাই বলুন! যেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাই তাদের সন্তানকে ভর্তি করান প্রাইভেট স্কুলে।

কারণ, তারা ভাল করেই জানেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানের কী অবস্থা! অর্থাৎ তারা নিজেরাই নিজেদের পড়ানো নিয়ে অসন্তুষ্ট যার ফলে তারা তাদের সন্তানকে নামীদামী কিন্ডার গার্টেনে পাঠান।

এ বিষয়ে উপজেলার কতিপয় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের সাথে যোগাযেগ করে তাদের সন্তানকে কেন তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করাননি জানতে চাইলে তারা এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি।

শেরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তানরা কিন্ডারগার্টেন (কেজি) স্কুলে ভর্তি হতে পারবে না এমন মৌখিক ঘোষণা থাকলেও এ বিষয়ে আমরা কোন লিখিত নির্দেশনা পাইনি।

তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি এমন কড়াকড়ি আরোপ করা আবশ্যক। এতে করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ নিজের সন্তানের কথা ভেবে হলেও শ্রেণীকক্ষে শতভাগ শিক্ষা দেওয়ার মানসিকতায় নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখবেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে