রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৯, ০২:২০:০৩

এরশাদই প্রথম প্রতিটি মসজিদের বিদ্যুৎ বিল ফ্রি ঘোষনা করেন

এরশাদই প্রথম প্রতিটি মসজিদের বিদ্যুৎ বিল ফ্রি ঘোষনা করেন

নিউজ ডেস্ক : সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি…রাজিউন)। তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আজ রোববার সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। এর আগে গত ২৬ জুন থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন ছিলেন এরশাদ।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। রাজনীতিক না হয়েও রাজনীতির আলোচনায় ছিলেন প্রায় পুরোটা জীবনভর। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর রাজনীতির আলোচনায় আসেন তিনি। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তারকে সরিয়ে ১৯৮২ সালে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন এই সামরিক শাসক।

স্টাইলিশ এরশাদ ছিলেন দারণ রোমান্টিক। ছিলেন আড্ডাপ্রিয়, বন্ধুবৎসল। নব্বই বছর বয়সেও চাঙা ছিলেন কবিতা প্রিয় এরশাদ। চায়ের আড্ডায় এরশাদের রাজনীতির পাশাপাশি ছিল তার ব্যক্তি জীবনও। সব ছাপিয়ে পতিত সামরিক শাসক এরশাদ হয়ে উঠেছিলেন নব্বই পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতির সবচেয়ে আলোচিত পুরুষ।

১৯৩০ সালের ফেব্রুয়ারিতে জন্ম নেয়া এরশাদ সেনাপ্রধান থেকে রাষ্ট্রপতি হয়ে ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করেছেন। কেবল তাই নয়, গণমানুষের বিশেষ করে বৃহত্তর রংপুরের মানুষের কাছে অবিসংবাদিত নেতা হয়ে উঠেছিলেন তিনি।

১৯৮১-১৯৯০ পর্যন্ত তাঁর সময়ে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন হয়েছে। ঢাকা-রংপুর, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজ তাঁর অামলেই হয়েছে। উপজেলা পরিষদ গঠিত হয় তাঁর অামলেই। প্রতিটি মসজিদে বিদ্যুৎ বিল তিনিই ফ্রি সার্ভিস ঘোষণা করেছিলেন। বর্তমান সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী বেতনের সাথে যে বোনাস (উৎসব ভাতা) পাচ্ছেন সেটা কিন্তু তিনিই চালু করেন।

এরশাদই সম্ভবত পৃথিবীর একমাত্র সমরিক শাসক, ক্ষমতা ছাড়ার পর প্রায় তিন দশক জাতীয় রাজনীতিতে, ক্ষমতার সমীকরণে ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। তাঁর মৃত্যুতে অভিভাবক শূন্য হলো দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি।

১৯৯০ সাল পর্যন্ত দেশ শাসন করেছেন তিনি। জাতীয় পার্টি গঠন করেন ১৯৮৬ সালে। গণতন্ত্রের কথা বলে সে বছরই সংসদ নির্বাচন দেন তিনি। সেই পরিকলপনা ভেস্তে যায়, বছর খানেকের মধ্যে বাতিল হয় সেই সংসদও।

সামরিক শাসক হলেও জনপ্রিয় কিছু কর্মসূচি নেন এরশাদ। রাস্তাঘাট-অবকাঠামো উন্নয়ন, উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তন, ৬৪ জেলা বাস্তবায়ন এসব কাজ করে রাজনীতিক হয়ে ওঠার চেষ্টা ছিল তার।

রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার পাকাপোক্ত করেন এরশাদ। ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করে, ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে কাছে টানেন তিনি। “৬৮ হাজার গ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাচবে” ছিল তার শ্লোগান। পরিচিত হয়েছিলেন “পল্লীবন্ধু এরশাদ” নামে।
প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ছাড়াও প্রতিবেশিদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়েছিলেন এরশাদ। তাদের কাছ থেকে পেয়েছেন নানা রকম সাহায্য।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে