শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৯, ১০:১৩:৫৮

জোড়া মাথার সেই মনি-মুক্তা এখন ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী

জোড়া মাথার সেই মনি-মুক্তা এখন ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী

নিউজ ডেস্ক : জোড়া মাথার সেই মনি-মুক্তা এখন ১০ বছরে।বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) তাদের জন্ম’দিন পালন করা হয় নিজ বাড়িতে।মনি-মুক্তা দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজে’লার স্থানীয় পালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী।

মনি মুক্তা সুস্থ্য এবং ভালো আছে। তারা একে অ’পরের সাথে খেলা করে সময় কা’টায়। বেশ সুন্দর করে কথা বলে। নিয়মিত স্কুলে যায় বলে জানিয়েছেন তাদের বাবা-মা। জম্ম’দিনে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছে মনি-মুক্তা।

দিনাজপুর জে’লার বীরগঞ্জ উপজে’লার শতগ্রাম ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের শরৎ চন্দ্র পালের পুত্র জয় প্রকাশ পাল। জয় প্রকাশ পালের স্ত্রী’ কৃষ্ণা রাণী পালের গর্ভে ২০০৯ সালের ২২ শে আগস্ট পার্বতীপুর ল্যাম্ব হাসপাতালে সিজারিয়ান সেকশনে অ’স্ত্রপাচারের মাধ্যমে মনি এবং মুক্তা জোড়া লাগা অবস্থায় জন্ম নেয়।

পরে রংপুরের চিকিৎসকগণ ঢাকা শি’শু হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে যমজ বোনকে অ’স্ত্রপাচারের মাধ্যমে পৃথক করার পরাম’র্শ দেন। তাদের পরাম’র্শ ক্রমে ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা শি’শু হাসপাতালে মনি-মুক্তাকে ভর্তি করা হয়।

অ’তঃপর ২০১০ সালের ০৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শি’শু হাসপাতালে শি’শু বিশেষজ্ঞ ডা. এ আর খানের সফল অ’পারেশনের মাধ্যমে মনি-মুক্তা ভিন্ন সত্ত্বা লাভ করে। বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানে সৃষ্টি হয় এক নতুন ইতিহাস।

মনি-মুক্তার বাবা জয় প্রকাশ পাল জানান, সে সময় গ্রামের মানুষ এটাকে অ’ভিশপ্ত জীবনের ফসল বলে প্রচার করতে থাকে। সমাজের নানা কুসংস্কারে প্রায় এক ঘরে হয়ে পড়ি। সমাজের নানা অ’পবাদে গ্রামে আসিনি। হতাশার মাঝে স্বপ্ন দেখি মনি-মুক্তাকে নিয়ে। বিভিন্ন চিকিৎসকের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকি তাদের স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাওয়ার জন্য। আমাদের স্বপ্ন বাস্তব হয় ডা. এ আর খানের কারণে। সেই মানুষটির কারণে আমাদের এই দুই সন্তানের নতুন করে বেঁচে থাকা।

মনি-মুক্তার মা কৃষ্ণা রাণী পাল জানান, ২০০৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে প্রথমে ২১ ফ্রেরুয়ারি পার্বতীপুরে বাবার বাড়িতে আসি। কিছুদিন সেখানে থাকার পর নিজগ্রাম বীরগঞ্জ উপজে’লার পালপাড়ায় মনি-মুক্তাকে নিয়ে আসি। সৃষ্টি ক’র্তার আর্শিবাদে এবং ডা. এ আর খানের সাফল্যে আম’রা মনি মুক্তাকে স্বাভাবিক ভাবে ফিরে পেয়েছি। আম’রা সব ক’ষ্ট ভূলে তাদেরকে চিকিৎসক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। মনি-মুক্তা এবং পরিবারের জন্য সকলের দোয়া কামনা করেছেন তিনি।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক ধনঞ্জয় পাল ও সহকারী শিক্ষিকা শিউলি আকতার জানান, মনি-মুক্তা এখন ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ছে। তারা লেখাপড়ায় বেশ ভালো। সহপাঠীরা তাদের খুব ভালোবাসে। মনি শান্ত হলেও মুক্তা বেশ চটপটে বলেও তিনি জানান। মনি-মুক্তার একমাত্র বড় ভাই সজল কুমা’র পাল অনার্স ৩য় বর্ষে লেখাপড়া করছেন বলে জানিয়েছেন পরিবারের লোকজন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে