বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৯, ০৯:০২:৩৯

বাংলাদেশে ইসকন মন্দিরে জ'ঙ্গি হা'মলার আ'শ'ঙ্কা

বাংলাদেশে ইসকন মন্দিরে জ'ঙ্গি হা'মলার আ'শ'ঙ্কা

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশে ইসকনের যে কোনও মন্দিরে বড়সড় হা'ম'লা চালাতে পারে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর মদতে চলা নব্য জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর মতো সংগঠন। 

গত কয়েক মাসে জোগাড় করা বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে এমনটাই আ'শ'ঙ্কা প্রকাশ করেছে ভারতের প্রথম সারির একাধিক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। কলকাতার সর্বাধিক পঠিত বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা এখবর জানিয়েছে।

লোন উল্ফ অর্থাৎ সংগঠিত ভাবে নয়, কোনও সংগঠনের সরাসরি নির্দেশ ছাড়াই মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ব্যক্তিবিশেষ এই হা'ম'লা চালাতে পারে। সাম্প্রতিক অতীতে লন্ডন, প্যারিস, নিউ ইয়র্কের মতো জায়গায় এ রকমই বেশ কয়েকটি জ'ঙ্গি হা'ম'লা হয়। 

হা'ম'লা পরবর্তী সময়ে আইএস তার দায় নিয়েছে বটে, কিন্তু হা'ম'লাকারীর সঙ্গে তাদের সাংগঠনিক কোনও সরাসরি যোগাযোগ পাওয়া যায়নি। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাস ধরে আইএসের মতো সংগঠনের বিভিন্ন প্রচার শাখা ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসাসনেস (ইসকন)-কে ‘হিন্দুত্বের প্রতীক’ হিসাবে প্রচার শুরু করেছে। 

সম্প্রতি ‘উম্মাহ নিউজ’ নামে আইএসের একটি প্রচার চ্যানেলেও ইসকনকে ‘হিন্দুত্বের প্রতীক’ হিসাবে তুলে ধরে আ'ক্র'ম'ণ করা হয়েছে। ভারতীয় গোয়েন্দাদের দাবি, আইএস মনোভাবাপন্ন বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর যে সব নথি তারা পেয়েছেন, তা থেকে স্পষ্ট- ওই সংগঠনের উপর হা'ম'লার ছক কষা হয়েছে। 

ভারতীয় এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার কথায়, ‘সামগ্রিক ভাবে ইসকন ওদের টা'র্গে'ট। এখনও পর্যন্ত পাওয়া বিভিন্ন তথ্য যা ইঙ্গিত দিচ্ছে, তা থেকে আমাদের ধারণা, বাংলাদেশে ইসকনের কোনও মন্দিরে হা'ম'লার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’

অন্য এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা স্বীকার করেন, এখনও পর্যন্ত পাওয়া বিভিন্ন তথ্য সে রকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে। ওই কর্মকর্তার ব্যাখ্যা, ভারত এবং বাংলাদেশে জি'হা'দিরা ক্রমাগত কোণঠাসা হচ্ছে। অন্য দিকে, ইরাক এবং সিরিয়াতেও একের পর এক ঘাঁটি হারিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে আইএসের। 

তিনি বলেন, ‘নব্য জেএমবিকে সামনে রেখে বাংলাদেশে নিজেদের সংগঠিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আইএস। কিন্তু ঢাকা হোলি আর্টিজান কাফে অ্যাটাক ছাড়া বড় কোনও হা'ম'লায় সাফল্য পায়নি নব্য জেএমবি। উল্টো গত দুবছরে তাদের সংগঠন ক্রমাগত দুর্বল হয়েছে, লাগাতার পুলিশি অভিযানে।’

কেন্দ্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘জেএমবি বা নব্য জেএমবি-র মতো সংগঠন পশ্চিম এশিয়ায় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা টাকা সাহায্য পায় জিহাদি কার্যকলাপ চালানোর জন্য। কিন্তু সেই তহবিলের জোগান নির্ভর করে সংগঠনের সাফল্যের উপর। তাই এই মুহূর্তে বড় ধরনের একটি হা'ম'লা চালিয়ে শিরোনামে আসতে মরিয়া বাংলাদেশের এই জ'ঙ্গি গো'ষ্ঠী।’

তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘ইসকন একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন। সারা বিশ্বে এর শাখা ছড়িয়ে রয়েছে। প্রচুর বিদেশি ওই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। সেখানে হা'ম'লা চালালে আন্তর্জাতিক স্তরে উঠে আসবে হা'ম'লাকারী সংগঠনের নাম।’

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, জিহাদি কার্যকলাপকে সমর্থন করে এমন একাধিক ধর্মীয় সংগঠন ইসকনকে নিয়ে বি'দ্বে'ষমূলক প্রচার চালাচ্ছে যাতে হা'ম'লার জমি তৈরি করা সম্ভব হয়। গোয়েন্দাদের দাবি, যে পদ্ধতিতে ওই জ'ঙ্গি সংগঠনগুলি এগোচ্ছে, তাতে ভারতে ইসকনের কোনও মন্দিরে হা'ম'লা চালানো কঠিন। বরং অনেক সহজ বাংলাদেশে আ'ঘা'ত হানা।

ইসকনের অন্যতম মুখপত্র রাধারমন দাসের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘একটা আ'শ'ঙ্কা আমাদের মধ্যেও তৈরি হয়েছে।’ তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে তাদের ১৯টি মন্দির রয়েছে। রাধারমনের কথায়, ‘গত কয়েক মাস ধরে আমরাও নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।’ 

ইসকনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় তাদের সংগঠন প্রত্যন্ত গ্রামে ছাত্রছাত্রীদের মিড-ডে মিল সরবরাহ করে। ফলে তাদের সদস্যদের প্রত্যন্ত গ্রামেও নিয়মিত যাতায়াত। সে বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না কিছু জ'ঙ্গি সংগঠন। 

রাধারমন দাসের দাবি, তারা ইতিমধ্যেই নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের গোচরে এনেছেন। অন্য দিকে, বাংলাদেশ সরকার এবং ভারতীয় দূতাবাসকেও তারা বিষয়টি জানিয়েছেন।

ভারতীয় গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে বাংলাদেশের সিলেটে ইসকনের একটি মন্দিরে হা'ম'লার ঘটনা ঘটেছিল। তবে তার সঙ্গে সরাসরি কোনও জ'ঙ্গিগোষ্ঠীর যোগ ছিল না। গোয়েন্দাদের দাবি, লোন উল্ফ অর্থাৎ স্থানীয় কোনও ব্যক্তি বা একাধিক ব্যক্তিকে মতাদর্শগত ভাবে হা'ম'লায় মদত দিয়ে এই ‘অপারেশন’ চালানোর পরিকল্পনা হচ্ছে। 

সংগঠিত ভাবে করলে হা'ম'লার আগেই পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার আ'শ'ঙ্কা বেশি। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের একটি অংশ জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাকেও গোটা বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেছে। সূত্র : কালেরকণ্ঠ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে