আম্বিয়া খাতুন নামের একজন বৃদ্ধা সন্তানদের সঙ্গে থাকতেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে আক'স্মি'কভাবে পড়ে গিয়ে তার ডান হাত ভে'ঙে যায়। হারিয়ে ফেলেন চলাফেরার শক্তিও।হয়ে পড়েন ভারসা'ম্যহী'ন।এরপরই সন্তানদের কাছে তার গুরুত্ব কমতে থাকে। একপর্যায়ে গত বছর এক নাতনি অজ্ঞা'ত পরিচয়ে মিরপুরের পাইকপাড়ার চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে রেখে যান। এরপর থেকে সেখানেই ছিলেন ওই বৃদ্ধা। তবে তার মন পরিবারের সদস্যদের কাছে যাওয়ার জন্য আকু'ল হয়েছিলো সবসময়ই। মৃত্যুর আগে প্রিয় সন্তানদের মুখখানা একবার দেখে যেতে চান। কিন্তু সন্তানদের মনে মায়ের জন্য বিন্দুমাত্র ভালবাসার উদয় হয়নি। বৃদ্ধা'শ্রম রেখে যাওয়ার সময় যোগাযোগের একটি মোবাইল নম্বর দিয়েছিলেন অজ্ঞা'ত পরিচয়ধা'রী। ওই নম্বরে ফোন করে বৃদ্ধাকে নিয়ে যেতে বলা হলে অপর পাশ থেকে জানানো হয়, ‘মা মা'রা গেলে বলবেন লা'শ নিতে যাবো’।
সম্প্রতি একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে পুলিশ সদর দফতরের। বিষয়টি অবগত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সদরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স শাখার পক্ষ থেকে কামরাঙ্গীরচর থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং ওই বৃদ্ধাকে যথাসম্ভব সহযোগিতার জন্য ওসিকে অনুরোধ করা হয়।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া এন্ড পিআর) সোহেল রানা বলেন, আমাদের মানবিক আহ্বানে সাড়া দিয়ে কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি এবিএম মশিউর রহমান ওই বৃদ্ধার আত্মীয়-স্বজনদের খোঁ'জার চেষ্টা করেন। কিন্তু নাম-ঠিকানা না থাকায় ওসি প্রথমে পাইকপাড়ায় বৃদ্ধা'শ্রমটি খুঁ'জে বের করেন। সেখানকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন সমাদ্দারের সঙ্গে কথা বলে বৃদ্ধার আত্মীয়ের নাম-ঠিকানা জানতে চান। কিন্তু না থাকায় তারা কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
পরে মিল্টন সমাদ্দারের সঙ্গে কথা বলে ওসি মশিউর হুম'কি দেয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। এরপর সেই হুম'কি দেয়া নম্বরের সূত্র ধরে তিনটি মোবাইল নম্বর পাওয়া যায়। এরপর সেই সূত্রে নাগরিক ডাটাবেজের সাহায্যে বৃদ্ধার ছেলে আলাউদ্দিনের ঠিকানা সংগ্রহ করে তার সঙ্গে কথা বলা হয়। তাকে কাউন্সি'লিং করা হলে তিনি তার মাকে বৃদ্ধা'শ্রম থেকে ফিরিয়ে নিতে সম্ম'ত হন। তখন ওসি মশিউরসহ আলাউদ্দিন ও তার পরিজনরা বৃদ্ধা'শ্রমে যান। পরে কর্তৃপক্ষ বৃদ্ধাকে তার ছেলে, ছেলের বউ ও নাতনির কাছে হস্তা'ন্তর করে।