শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০, ০১:০৩:৩২

আড়চোখের দুষ্টুমিতে আজ শুধুই ভালোবাসার দিন

আড়চোখের দুষ্টুমিতে আজ শুধুই ভালোবাসার দিন

নিউজ ডেস্ক : 'ভালবেসে সখী নিভৃতে যতনে আমার নামটি লিখো তোমার মনের মন্দিরে', এমন ভাবনায় কেটেছে যেসব মানব-মানবীর, তাদের মনের না-বলা কথা প্রস্ফুটিত হবে এই দিনটিতে। তাকে লুকিয়ে-লুকিয়ে দেখেই হয়তো কেটেছে সারাটা বছর। কারও আবার বছরভরের ব্যস্ততায় প্রেমই খাচ্ছে হাবুডুবু। পুরানো প্রেমকে গুছিয়ে নিতে আর নতুন প্রেমের খাতা খুলতে তাই হাজির 'ভ্যালেন্টাইন্স ডে'।

যদিও বরাবরই ১৪ ফেব্রুয়ারি নয়, বসন্ত আগমনেই আসল ভ্যালেন্টাইন্স ডে বলে এসেছে বাঙালিরা। হলুদ শাড়ির জড়তা, আড়চোখের দুষ্টুমিতে প্রেমের আলাদাই আমেজ তৈরি হয় যেন। বিশেষত বয়স যাদের মধ্যগগনে, তাদের কাছে স্মৃতিমধুর বসন্ত মানেই বাসন্তীদের নিয়ে বসন্তদের মেতে ওঠা। রোমের সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াসের সঙ্গে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের বিরোধের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক নেই তাদের। 

যদিও ন'য়ের দশকের গোড়ায় বিদেশি কার্ড কোম্পানিগুলির দৌলতে এ দেশে ভ্যালেন্টাইন ডে-র প্রথা শুরুর পরে বাঙালিরাও কমবেশি মেতেছে। সৈনিকদের বিয়ে নি'ষি'দ্ধ করার যে বিদান রোমান সম্রাট দিয়েছিলেন সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের সুরে বাঙালির বিপ্লবী মনও সেই লুকিয়ে সৈনিকদের বিয়েকে সমর্থন করেছে। আর সেখানেই জুড়ে গিয়েছে প্রেম। নতুনদের অবশ্য প্রাত্যহিকের ব্যস্ততা থেকে প্রেমের ফাঁক খুঁ'জে নেওয়াটাই ভ্যালেন্টাইন।

অনেকটাই অভাস মিলিছে পহেলা ফাল্গুনে শহর জুড়ে যুগলদের পদচারণায়। হলুদ শাড়িতে ফাল্গুনীদের মাথায় ফুল আর ডিএএসএলআর'এর ক্যামেরা কচা'কচ শব্দের ছবি তোলা ছিল যেন পুরো শাহাবাগ, টিএসসি আর রমনা-সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জুড়ে। তার প্রভাব লক্ষ্য করা যায় আবার বই মেলা জুড়েও। তবে আজ যে শুধুই ভালোবাসা আর প্রেম। আর ভিড়ে ঠাসা পার্কই হোক প্রেমের ঠিকানা।

ভ্যালেন্টাইন দিবসের ঐতিহাসিক উৎপত্তি: ২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেইটাইন'স নামে একজন খৃষ্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচার-অভিযোগে তৎকালীন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাকে ব'ন্দী করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খৃষ্টান ধর্ম প্রচার নি'ষি'দ্ধ ছিল।

বন্দী অবস্থায় তিনি জনৈক কারার'ক্ষীর দৃষ্ট'হীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এতে সেন্ট ভ্যালেইটাইনের জনপ্রিয়তার প্রতি ঈ'র্ষা'ন্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃ'ত্যুদ'ণ্ড দেন। সেই দিন ১৪ই ফেব্রুয়ারি ছিল। অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইন'স স্মরণে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন' দিবস ঘোষণা করেন।

এই ভ্যালেন্টাইন দিবসের চেতনা বি'ন'ষ্ট হওয়ায় ১৭৭৬ সালে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ভ্যালেইটাইন উৎসব নিষিদ্ধ হয়। ইংল্যান্ডে ক্ষম'তাসীন উৎসব পিউরিটানরাও একসময় প্রশাসনিকভাবে এ দিবস উদযাপন করা থেকে বি'র'ত থাকার জন্যে নি'ষি'দ্ধ ঘোষনা করে। এছাড়া অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি ও জার্মানিতে বিভিন্ন সময়ে এ দিবস প্র'ত্যা'খ্যা'ত হয়।

তবে বর্তমানকালে, পাশ্চাত্যে এ উৎসব মহাসমারোহে উদযাপন করা হয়। যুক্তরাজ্যে মোট জনসংখ্যার অর্ধেক প্রায় ১০০ কোটি পাউন্ড ব্যয় করে এই ভালোবাসা দিবসের জন্য কার্ড, ফুল, চকোলেট, অন্যান্য উপহারসামগ্রী ও শুভেচ্ছা কার্ড ক্রয় করতে, এবং আনুমানিক প্রায় ২.৫ কোটি শুভেচ্ছা কার্ড আদান-প্রদান করা হয়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে