বৃহস্পতিবার, ০৯ এপ্রিল, ২০২০, ০৯:২৫:১৬

আসুন সবাই মহান আল্লাহ্ পাকের দরবারে দোয়া প্রার্থনা করি : পলক

আসুন সবাই মহান আল্লাহ্ পাকের দরবারে দোয়া প্রার্থনা করি : পলক

জুনাইদ আহমেদ পলক : মানুষ শয়তানের কু'ম'ন্ত্রণায়, নফসের তাড়নায় বিপথগামী ও পাপাচারী হয়। মানুষের পাপমোচনের জন্য আল্লাহ তাআলা বিশেষ কিছু দিবস ও রজনী দিয়েছেন, তন্মধ্যে অন্যতম ও বিখ্যাত হলো শবে বরাত। শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত বা 'নিসফ শাবান'। শবে বরাত কথাটি ফারসি। শব অর্থ রাত, বরাত অর্থ মুক্তি; শবে বরাত মানে মুক্তির রজনী। আরবি হলো 'লাইলাতুল বারাআত'।

সবকিছুর স্রষ্টা ও নিয়ন্তা সর্বশক্তিমান সর্বমহান আল্লাহ মানুষকে সীমিত শ'ক্তি ও ক্ষ'মতা দিয়ে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। এরই জন্য মানুষ ফেরেশতা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। যার প্রধান দুটি হলো ইচ্ছা ও চেষ্টার স্বাধীনতা। এ জন্যই মানুষের বিচার হবে পরকালে এবং ফলাফল হিসেবে থাকবে জান্নাত বা জাহান্নাম। কোরআনুল কারিমে বর্ণনায়, ''তিনি প্রাচুর্যময়, যার হাতে সব রাজত্ব, তিনি সব বিষয়ে ক্ষমতাবান। যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন, যাতে তিনি পরীক্ষা করবেন তোমাদের মধ্যে কারা কাজে ভালো। তিনি প'রাক্র'মশালী ক্ষ'মাশীল।' (৬৭: ১-২)।

নবী করিম (সা.) বলেছেন, 'আল্লাহ তাআলা শাবানের মধ্যবর্তী রাতে মাখলুকাতের দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন।' (ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫)। রসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ''আল্লাহ তাআলা এ রাতে বি'দ্বে'ষ পো'ষণকারী ও নি'র'পরা'ধ মানুষকে হ'ত্যাকারী ছাড়া বাকি সব বান্দাকে ক্ষ'মা করে দেন।'' (মুসনাদে আহমদ, ৪: ১৭৬)।

''যখন শাবানের মধ্য রাত আসে, তখন আল্লাহ তাআলা মাখলুকাতের প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকান; মুমিনদিগকে ক্ষমা করে দেন, কাফিরদের ফিরে আসার সুযোগ দেন এবং হিং'সুকদের হিং'সা পরিত্যা'গ ছাড়া ক্ষ'মা করেন না।'' (কিতাবুস সুন্নাহ,৩: ৩৮২)। নবীজি (সা.) এ রাতে মদিনার গো'রস্থান 'জান্নাতুল বাকি'তে এসে কবরবাসীদের জন্য দোয়া ও ক্ষমাপ্রার্থনা করতেন।

রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ''এ রাতে বনি কালবের ভেড়া-বকরির পশমের পরিমাণের চেয়ে বেশিসংখ্যক গুনাহগারকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন।'' (তিরমিজি: ৭৩৯)। আয়িশা (রা.) বর্ণনা করেন, ''একবার রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, আয়িশা! তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও আল্লাহর রসুলই ভালো জানেন। তখন নবীজি (সা.) বললেন, এটা হলো অর্ধ শাবানের রাত; এ রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন; ক্ষ'মাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষ'মা করে দেন, অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন। (শুআবুল ইমান,৩: ৩৮২)।

রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ''১৪ শাবান দিবাগত রাত যখন আসে, তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত বন্দিগিতে কাটাও এবং দিনের বেলায় রোজা রাখো; কেননা এ দিন সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন এবং আহ্বান করেন: কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছ কি? আমি ক্ষমা করব; কোনো রিজিকপ্রার্থী আছ কি? আমি রিজিক দেব; আছ কি কোনো বি'পদগ্র'স্ত? আমি তাকে উদ্ধার করব। এভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা বান্দার বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে আহ্বান করতে থাকেন।'' (ইবনে মাজাহ: ১৩৮৪)।

রসুলে আকরাম (সা.) বলেন, ''যখন শাবানের মধ্য দিবস আসে, তখন তোমরা রাতে ইবাদাত করো ও দিনে রোজা রাখো।'' (ইবনে মাজাহ)। শাবান মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি। রমজানের পরেই শাবান মাস ইবাদাতের উত্তম সময়। শাবান মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রোজা রাখলে আইয়ামে বিদের রোজার সঙ্গে শবে বরাতের রোজার পুণ্য হয়ে যাবে। এছাড়া মাসের শুরুতে, মাঝে ও শেষে রোজা রাখা ফজিলতপূর্ণ আমল।

অধিক ইবাদাতের মাধ্যমে রমজানের জন্য অপেক্ষা করতে থাকা এবং এই দোয়া করাও সুন্নাত আমল, ''আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজব ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগ না রমাদান।'' অর্থ: ''হে আল্লাহ! রজব ও শাবান মাসে আমাদের বরকত দান করুন এবং রমজান আমাদের নসিব করুন।'' (মুসনাদে আহমাদ: ২৫৯, বায়হাকি,৩: ৩৭৫)।

এ দিবস–রজনীর বিশেষ আমল হলো রোজা রাখা, নামাজ পড়া, নামাজে কিরাত ও রুকু সিজদা দীর্ঘ করা; কোরআন শরিফ তিলাওয়াত করা; দুরুদ শরিফ বেশি বেশি পড়া; ইস্তিগফার অধিক পরিমাণে করা; দোয়া কালাম, তাসবিহ তাহলিল, জিকির আজকার ইত্যাদিতে মশগুল থাকা; নিজের জন্য, পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও সব মুমিন-মুসলমানের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং দেশ-জাতির ও বিশ্ববাসীর কল্যাণ ও হেফাজতের জন্য দোয়া করা।

আসুন সবাই মহান আল্লাহ্ পাকের দরবারে দোয়া প্রার্থনা করি, মহান আল্লাহ্ পাক যেন আমাদের সবাইকে আমাদের জীবনের সকল গুনাহ মাফ করে দেন এবং বর্তমান Covid-19 করোনা ভাইরাসের ম'হামা'রী হতে রক্ষা করেন সবাইকে নিরাপদ থাকার তৌফিক দান করেন। আমিন। সূত্র :  তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীর ফেসবুক পোস্ট থেকে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে