মঙ্গলবার, ০৭ জুলাই, ২০২০, ০৬:১৬:৪৭

দুই স্ত্রীর কথা গো'পন করে কলকাতায় আবার বিয়ে, বিএনপি নেতা গ্রে'ফতার

দুই স্ত্রীর কথা গো'পন করে কলকাতায় আবার বিয়ে, বিএনপি নেতা গ্রে'ফতার

নিউজ ডেস্ক : স্ত্রী-সন্তান থাকার তথ্য গো'পন করে ভারতের কলকাতার এক নারীকে বিয়ের পর যৌতুকের দাবিতে নি'র্যাতনের ঘ'টনায় করা মামলায় বরিশাল মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি মনিরুল আহসান তালুকদার মনিরকে গ্রে'ফতার করা হয়েছে। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর বনশ্রী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ। 

এর আগে সকালে ভারতের কলকাতার দমদম এলাকার মলি আহসান তালুকদার নামে এক নারী মনিরুল আহসান তালুকদারের বি'রু'দ্ধে নারী ও শিশু নির্যা'তন দ'মন আইনে মামলা করেন। মনিরুল আহসান তালুকদার নগরীর নবগ্রাম রোড সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের বিপরীতে 'তালুকদার ম্যানশন' নামে ভবনের বাসিন্দা। তিনি ও তার পরিবার বরিশাল নগরীর ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। মনিরুল আহসান বরিশাল মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, স্ত্রী ও সন্তান থাকা সত্ত্বেও মনিরুল আহসানের বি'রু'দ্ধে একা'ধিক নারীকে বিয়ে করার অ'ভিযো'গ রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর সংসারে তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। কিছুদিন আগে তার এক মেয়ের বিয়ে হয়। দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে এক ছেলে রয়েছে। এরপর এসব তথ্য গো'পন করে কলকাতার ওই নারীকে বিয়ে করেছিলেন মনিরুল।

মামলার বাদী মলি আহসান তালুকদার ভারতের কলকাতার দমদম এলাকার বাসিন্দা। ধর্মত্যা'গ করার আগে তার নাম ছিল সুজাতা দাস। তার কলকাতায় পোশাক ও জামা কাপড় বিক্রির শোরুম রয়েছে। মামলা সূত্রে জানা গেছে, সুজাতা দাস বাংলাদেশের পোশাক কারাখানা থেকে পণ্য নেয়ার জন্য ২০১৩ সালে ঢাকায় আসেন। এ সময় মনিরুল আহসান তালুকদারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। 

এরপর দুইজনের মধ্যে ঘনি'ষ্ঠ সম্পর্ক হয়। মনিরুল আহসান তার স্ত্রী মা'রা গেছে বলে সুজাতা দাসকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবে রাজি হন সুজাতা দাস। এরপর তারা বিয়ে করেন। স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে ২০১৪ সালে ধর্মত্যা'গ করে মুসলমান হন সুজাতা। স্বামী মনিরুলের ইচ্ছামতো সুজাতা দাস নাম পরিবর্তন করে মলি আহসান তালুকদার নাম রাখেন। স্বামীর মনিরুলের সঙ্গে থাকতে এরপর মলি ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ফ্ল্যাট কিনেন। 

বিয়ের পর মনিরুল বিভিন্ন সময় কলকাতা গিয়ে মলির বাসায় থাকতেন। আবার মলি ঢাকায় থাকাকালীন তার সঙ্গে বসুন্ধরার ফ্লাটে থাকতেন মনিরুল। ২০১৭ সালে তাদের সম্পর্কে কিছুটা ফা'টল তৈরি হয়। মনিরুল স্ত্রী মলিকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসব কারণে মনিরুলকে বিয়ে রেজিস্ট্রির জন্য চা'প দেন মলি। ২০১৭ সালে কাজি অফিসে গিয়ে রেজিস্ট্রি বিয়ে করেন তারা।

দীর্ঘদিন কলকাতায় সংসার করার পর গত ২২ নভেম্বর বাংলাদেশে ফেরেন মনিরুল। মলি কলকাতায় থেকে যান। তারপর আর কলকাতায় ফেরেননি এবং স্ত্রী মলির সঙ্গে যোগাযোগও রাখেননি মনিরুল। স্বামীর খোঁ'জে তিনবার বাংলাদেশে আসেন মলি। গত ১৩ মার্চ বাংলাদেশে এসে খোঁ'জাখুঁ'জির একপর্যায়ে মনিরুলের ঠিকানা খুঁ'জে পান তিনি। মনিরুলের বাসায় উপস্থিত হলে তিনি মলিকে না চেনার ভান করেন এবং প্রেম-বিয়ের কথা অস্বী'কার করেন। তার স্ত্রী-সন্তান দেখে অবাক হন মলি। 

সর্বশেষ গত ২ জুলাই বসুন্ধরার আবাসিক এলাকায় স্ত্রী মলির বাসায় যান মনিরুল। এ সময় ব্যবসার জন্য মলির কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন মনিরুল। মলি টাকা দিতে অস্বী'কার করলে মনিরুল ক্ষি'প্ত হয়ে তাকে গলা টিপে হ'ত্যার চেষ্টা করেন। পরে টাকা না দিলে স্ত্রীর স্বীকৃতি দেবেন না বলে মলিকে শা'সিয়ে বাসা থেকে চলে আসেন মনিরুল। এ ঘ'টনায় সোমবার সকালে মলি আহসান বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মনিরুলকে আসামি করে মামলা করেন।

মলি আহসান তালুকদার বলেন, স্ত্রী মা'রা গেছে বলে মনিরুল আমার সঙ্গে সম্পর্ক করেন। পরে বাবা-মা আত্মীয় স্বজনদের ইচ্ছার বি'রু'দ্ধে গিয়ে মনিরুলকে বিয়ে করি। এরপর ধর্মত্যা'গ করে মুসলমান হই। মনিরুল আমার সঙ্গে প্রতা'রণা করেছেন। ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত ব্যবসাসহ বিভিন্ন কথা বলে ৩০-৪০ লাখ টাকা নিয়েছেন মনিরুল। তারপরও সংসারের কথা ভেবে সবকিছু সহ্য করে গেছি। এখন মনিরুল আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করছেন। এত টাকা না থাকায় দিতে পারিনি। এজন্য মনিরুল আমাকে অস্বী'কার করছেন। এর প্র'তিকার পেতে আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।

মামলার তদ'ন্ত কর্মকর্তা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জহিরুল ইসলাম বলেন, মলি আহসান তালুকদার নামে এক নারী স্বামীর বি'রু'দ্ধে মামলা করেছেন। মামলার আসামি মনিরুল আহসানকে গ্রে'ফতার করা হয়েছে। মামলাটি তদ'ন্তের পর্যায়ে রয়েছে। তদ'ন্তে যেটা প্রমাণিত হবে সেভাবে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি শাহ জামান বলেন, নারী ও শিশু নি'র্যা'তন দ'মন আইনে দায়ের হওয়া মামলায় মনিরুল আহসানকে গ্রে'ফতার করেছে পুলিশ। বিকেলে আদালতের নি'র্দে'শে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বরিশাল মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, সহ-সভাপতি মনিরুল আহসান তালুকদারের গ্রে'ফতারের বিষয়টি শুনেছি। এটি তার ব্যক্তিগত মামলা। তাছাড়া অ'ভিযো'গের ভিত্তিতে তাকে গ্রে'ফতার করা হয়েছে। এখনও অ'ভিযো'গ প্রমাণিত হয়নি। তাই এ বিষয়য়ে আগেই কিছু মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে