রবিবার, ১২ জুলাই, ২০২০, ১০:৪৯:২০

কাজ হাসিল করতে সুন্দরী পাঁচ বান্ধবীকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতেন সাহেদ

কাজ হাসিল করতে সুন্দরী পাঁচ বান্ধবীকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতেন সাহেদ

নিউজ ডেস্ক : করোনাভাইরাসের চিকিৎসা নিয়ে জা'লিয়াতির ঘটনায় অভিযু'ক্ত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম ব্যক্তিগত জীবনেও বহুরূপী প্র'তারক। জালিয়াতি প্রকাশের পর সাদিয়া আরাবী নামের এক স্ত্রীর পরিচয় জানা গেলেও সহকর্মীরা বলছেন, তাঁরা সাহেদের আরো দুই স্ত্রী দেখেছেন। একজনের নাম চৈতি। এ ছাড়া লিজা ও মার্জিয়া নামে সাহেদের অফিসে দুই নারী কর্মকর্তা আছেন। তাঁদের একজন তাঁর বিয়ে করা বউ বলেও সন্দেহ কর্মীদের। একাধিক স্ত্রী থাকলেও পরস্পরের কাছে বিষয়টি এত দিন গোপন থেকে গেছে।

তদ'ন্তকারী ও সহকর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, লিজা ও মার্জিয়া ছাড়াও সাদিয়া ও হিরা মণি নামে দুই তরুণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল সাহেদের। পাসওয়ার্ড দেওয়া প্রাইভেট রুমে তাঁদেরই প্রবেশাধিকার ছিল। কাজ হাসিল করতে সুন্দরী পাঁচ বান্ধবীকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতেন সাহেদ। আর্থিক জালিয়াতির জন্য বহুরূপী সাহেদের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন স্বাক্ষর। লেনদেনের ক্ষেত্রেও তিনি ভিন্ন স্বাক্ষর ব্যবহার করতেন। একেকটি লেনদেন দেখার দায়িত্বে ছিলেন একেকজন সহযোগী।

সাহেদের বিরু'দ্ধে নতুন নতুন অভি'যোগের তথ্য পাচ্ছেন পুলিশ ও র‌্যাবের তদ'ন্তকারীরা। ৩২টি মা'মলার পর তাঁর বিরু'দ্ধে আরো ২৩টি জা'লিয়াতি মা'মলার তথ্য পাওয়া গেছে। আর্থিক লেনদেনে প্র'তারণার শি'কার হয়ে মা'মলা করা ভু'ক্তভো'গীরাই র‌্যাবকে এসব তথ্য দিয়েছেন। দায়িত্বশীলরা বলছেন, সাহেদকে গ্রেপ্তারে অভি'যান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ গতকাল শনিবার সাহেদের উত্তরার কার্যালয়ে ত'ল্লাশি চালিয়ে তাঁর পাসপোর্ট, কম্পিউটারসহ কিছু আলামত জ'ব্দ করেছে।

সাহেদের সাবেক এক নারী কর্মী পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমি তো সাহেদের তিনটি বউ দেখছি। তাদের একজন প্রিয়তির আম্মু (সাদিয়া আরাবী), যে বনানীতে থাকে। নাজিয়ার আম্মুকেও তো কিছুদিন আগে কক্সবাজার থেকে আট'ক করছে। আরেকজনের নাম চৈতি, সে-ই তার অরজিনাল বউ জানতাম। তার যে আর কোনো বউ আছে তা জানতাম না। পরে বাকিদের ব্যাপারে জানি।’ তিনি আরো বলেন, ‘মার্জিয়া নামের একজনকে শুধু শুধুই বেতনের নামে প্রতি মাসে ৪০ হাজার টাকা দিতে হতো। স্যার তাকে বিয়ে করছে; কিন্তু অন্যদের সামনে হয়তো সেটা দেখাচ্ছে না। লিজা ম্যাডামও মনে হয় তার বিবাহিত ছিল। অনেক খবরদারি করত। মার্জিয়াকে নিয়ে একবার অনেক ঝগ'ড়া হয়েছিল।’

সাহেদের স্ত্রী (পরিচয় পাওয়া) সাদিয়া আরাবীকে গতকাল কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ধ'রেননি। র‌্যাবের তদ'ন্তকারীরাও একই রকম তথ্য পেয়েছেন বলে জানান। একটি গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সাহেদের পাঁচজন সুন্দরী বান্ধবী ছিলেন। তাঁদের একজন অফিসের ঘনিষ্ঠ কর্মী লিজা। সাদিয়া ও হিরা মণি নামের দুজনও তাঁর সুরক্ষিত পাসওয়ার্ড দেওয়া কক্ষে সময় কাটাতেন। সাহেদ সুন্দরী তরুণীদের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে কাজ বাগিয়ে নিতেন।

সূত্র জানায়, কয়েকটি ব্যাংকে নিজের অ্যাকাউন্টের জন্য সাহেদ পৃথক স্বাক্ষর ব্যবহার করেন। সরবরাহকারীসহ বিভিন্ন ব্যাবসায়িক লেনদেনে তিনি ভিন্ন স্বাক্ষর ব্যবহার করতেন। এ কারণে অনেক সময় চেক প্রত্যাখ্যাত হতো।

এদিকে গতকাল বিকেলে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে সাহেদের রিজেন্ট গ্রুপের অফিসে ত'ল্লাশি চালান পুলিশের তদ'ন্তকারীরা। এ সময় র‌্যাবের দলও উপস্থিত ছিল। উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি তপন চন্দ্র সাহা বলেন, ‘আসামিদের রিমান্ডে দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে তথ্য সংগ্রহে ত'ল্লাশি চালানো হয়। রিজেন্ট চেয়ারম্যান সাহেদের পাসপোর্ট, একটি কম্পিউটার, হার্ড ডিস্কসহ কিছু আলামত জ'ব্দ করা হয়। যেহেতু স্থানটি সিলগালা তাই র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সহায়তা নেওয়া হয়। ত'ল্লাশিকালে পাসপোর্ট পাওয়ার পর আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে সাহেদ দেশেই আছেন।’

র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালে অভি'যানের পর বিভিন্ন সূত্রে সাহেদের বি'রুদ্ধে ৩২টি মা'মলার তথ্য পাওয়া যায়। পরে তিন ভুক্তভোগী মা'মলা করার তথ্য জানান। গতকাল পর্যন্ত আরো ২০ ভুক্তভোগী পাওয়া গেছে, যাঁরা টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আগেই মা'মলা করেছিলেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে