সোমবার, ১৩ জুলাই, ২০২০, ১২:২২:৪৬

দুই ‘প্রতারক’ সাহেদ-সাবরিনার ব্যাংক হিসাব জ'ব্দ

দুই ‘প্রতারক’ সাহেদ-সাবরিনার ব্যাংক হিসাব জ'ব্দ

নিউজ ডেস্ক : করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে প্র'তারণার অভি'যোগে রিজেন্ট হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম এবং জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা এ চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব জ'ব্দ করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) তাদের ব্যাংক হিসাব জ'ব্দ করে। এর পাশাপাশি তাদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য ৭ দিনের মধ্যে জানানোর জন্য সব তফসিলি ব্যাংককে চিঠি দেয়া হয়েছে।

এনবিআরের সিআইসি থেকে রোববার বিকেলে তাদের ব্যাংক হিসাব জ'ব্দ করার জন্য সব ব্যাংককে চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়া ডা. সাবরিনা চৌধুরীর স্বামী জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক চৌধুরী ও রিজেন্ট হাসপাতালের পরিচালক ইব্রাহিম খলিলের ব্যাংক হিসাবও জ'ব্দ করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের সিআইসির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কর নথিতে থাকা তাদের আয়-ব্যয় খতিয়ে দেখতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এসব ব্যক্তির পাশাপাশি তাদের প্রতিষ্ঠানও এনবিআরের ন'জরদারিতে রয়েছে। রিজেন্ট হাসপাতাল, রিজেন্ট কেসিএস, জেকেজি হেলথকেয়ার, ওভাল গ্রুপ লিমিটেডের যাবতীয় ব্যাংক হিসাব জ'ব্দ করা হয়েছে। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ওভার গ্রুপ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা এ চৌধুরী।

করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা না করেই ভু'য়া রিপোর্ট দেয়ার অভি'যোগে জেকেজি (জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ার)-এর নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানকে আট'ক করেছে পুলিশ। আর করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার ভু'য়া রিপোর্ট দেয়া, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের সঙ্গে প্র'তারণার দায়ে অভি'যুক্ত রিজেন্ট হাসপাতাল সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। হাসপাতালটির চেয়ারম্যান সাহেদকে খুঁজছে পুলিশ।

জেকেজির বিরু'দ্ধে অভি'যোগ, সরকারের কাছ থেকে বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি নিয়ে বুকিং বিডি ও হেলথকেয়ার নামে দুটি সাইটের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছিল এবং নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া সনদ দিত। এ বিষয়ে রাজধানীর কল্যাণপুরের একটি বাড়ির কেয়ারটেকারের অভি'যোগের সত্যতা পেয়ে ২২ জুন জেকেজি হেলথকেয়ারের সাবেক গ্র্যাফিকস ডিজাইনার হুমায়ুন কবীর হিরু ও তার স্ত্রী তানজীন পাটোয়ারীকে গ্রে'ফতার করে পুলিশ।

তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভি'ত্তিতে পরে প্রতিষ্ঠানটির সিইও আরিফকেও গ্রে'ফতার করা হয়। এ ঘটনার পর ২৪ জুন জেকেজি হেলথকেয়ারের নমুনা সংগ্রহের যে অনুমোদন ছিল তা বাতিল করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। জানা যায়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনার নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা না করেই জেকেজি প্রতিষ্ঠানটি ১৫ হাজার ৪৬০ টেস্টের ভু'য়া রিপোর্ট সরবরাহ করে।

পুলিশ জানিয়েছে, জেকেজি হেলথকেয়ার থেকে ২৭ হাজার রোগীকে করোনার টেস্টের রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনার আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ রিপোর্ট প্রতিষ্ঠানটির ল্যাপটপে তৈরি করা হয়। জ'ব্দ করা ল্যাপটপে এর প্রমাণ মিলেছে। আরিফ চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানান, জেকেজির ৭-৮ কর্মী ভু'য়া রিপোর্ট তৈরি করেন।

জেকেজির মাঠকর্মীরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে করোনা উপসর্গ দেখা দেয়া মানুষের নমুনা সংগ্রহ করতেন। প্রতি রিপোর্টে ৫-১০ হাজার টাকা নেয়া হতো। আর বিদেশিদের কাছ থেকে নেন ১০০ ডলার। সেই হিসাবে করোনা পরীক্ষার ভু'য়া রিপোর্টে প্রায় ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জেকেজি।

২৪ জুন জেকেজির গুলশান কার্যালয়ে অভি'যান চা'লিয়ে প্র'তারক আরিফসহ ছয়জনকে গ্রে'ফতার করে পুলিশ। তাদের দুদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। দুজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানব'ন্দি দিয়েছেন। জেকেজির কার্যালয় থেকে ল্যাপটপসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি জ'ব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় চারটি মা'মলা হয়েছে।এসব মামলা সাবরিনাকে গ্রে'ফতার দেখানো হয়েছে। অন্যদিকে করোনা টেস্ট নিয়ে প্র'তারণার অভি'যোগে প্রথমেই উঠে আসে রিজেন্ট হাসপাতালের নাম।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে