এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক: বাজারভিত্তিক ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে মূল্য নির্ধারণ হলে জ্বালানি তেলের মূল্য ১০-১৫ টাকা কমানো সম্ভব বলে জানিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাজারভিত্তিক জ্বালানি মূল্য : সরকারের নেতৃত্বাধীন উদ্যোগ এবং সম্ভাব্য সংশোধন’ শীর্ষক সংলাপে বিষয়টি জানায় বেসরকারি গবেষণা সংস্থাটি।
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা সহযোগী হেলেন মাশিয়াত প্রিয়তী ও প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট ফয়সাল কাইয়ুম। উপস্থিত ছিলেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম প্রমুখ।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি) জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করার দায়িত্ব, কর্তৃত্ব বা মূল্য নির্ধারণ মডেল তৈরি করার আইনি কাঠামো দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে মূল প্রবন্ধে সিপিডি জানায়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়ম করপোরেশন (বিপিসি) কোন মডেল বা কোন আইনে জ্বালানি দাম নির্ধারণ করে তা পরিষ্কার নয়। দাম নিয়ে ভোক্তাও স্বাচ্ছন্দ্য ভোগ করে না। ২০১৫ সাল থেকে তারা ভর্তুকি পায় না, কেননা তারা মুনাফা করে। জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়িয়ে ক্ষতি সমন্বয় করে।
সিপিডি আরও জানায়, বিইআরসি গণশুনানির মাধ্যমে ভোক্তার মতামত নেবে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির দাম নির্ধারণ নীতিমালা দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি। প্রতিযোগিতামূলক দাম নির্ধারণ করতে চাইলে গ্রাহকের স্বার্থের বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত। জ্বালানি তেলের দাম গ্রাহকের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা প্রয়োজন। পাশাপাশি মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে মূল্য বৃদ্ধি পেলে পরে তা সমন্বয় করা যেতে পারে।
ভোক্তার স্বার্থ বিবেচনা করে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করার সুযোগ রয়েছে মন্তব্য করে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সব খাতে সংস্কার চলছে। জ্বালানি খাতেও এর হাওয়া লাগছে। বিপিসির ভর্তুকির প্রয়োজন পড়ে না, কারণ তারা বড় মুনাফা করে। এই মুনাফা সমন্বয় করলে ভোক্তার স্বার্থ প্রাধান্য পাবে, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বিদ্যুতে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ করে নির্ধারণ করার সুযোগ আছে। বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে ভর্তুকি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ২০১৭ সালে এই পরিমাণ ছিল ৪ হাজার কোটি টাকা। ২০২৪ সাল শেষে এটি ৩২ হাজার কোটিতে দাঁড়াবে। ২০২৫ সালে এই পরিমাণ হবে ৪০ হাজার কোটি।
সব পর্যায়ের গ্রাহকদের জন্য একই হারে এবং মাত্র ১ বছরের ব্যবধানে গ্যাসের দাম বাড়ানো অগ্রহণযোগ্য জানিয়ে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, তিন বছর ধরে অযৌক্তিক হারে দাম বাড়িয়ে আগের লোকসান সমন্বয় করছে পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক চর্চা মাথায় নিতে হবে।
তেলের দাম কমাতে তেল বিক্রি কার্যক্রম অটোমেশনের বিকল্প নেই জানিয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান বলেন, আগামী জানুয়ারি থেকে জুন মেয়াদে জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে। এ সময়ে আমদানি করা তেলের দাম আরও কমানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমাদের স্টোরেজ ক্ষমতা কম, ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে ৫০০ কোটি টাকা বেশি খরচ হয়েছে। বর্তমানে স্টোরেজ বাড়ানোর কাজ চলছে। এতে খরচও কমার পাশাপাশি দামও কমবে।