এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ১৯৭২ সালের সংবিধানে দেশের সকল জাতিগোষ্ঠীকে সমানভাবে অন্তর্ভুক্ত না করে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিভেদ ও অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে নতুন একটি সর্বজনগ্রাহ্য, বৈচিত্র্যসম্মত ও গণতান্ত্রিক সংবিধান রচনার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
রোববার দুপুরে রাঙামাটি শহরের বনরুপা সিএনজি স্টেশনে আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমরা চাই, সকল জনগোষ্ঠীকে সমমর্যাদা দিয়ে একটি নতুন সংবিধান রচনা হোক। যেখানে বাঙালি ও পাহাড়িদের মধ্যে কোনো বৈষম্য থাকবে না। মুজিববাদী সংবিধানে জাতিসত্তার স্বীকৃতি নেই, যা পরিবর্তন জরুরি।"
তিনি আরও বলেন, “পাহাড়-সমতলের অধিকার নিশ্চিত করতে নতুন চুক্তি ও গণভিত্তিক সংবিধান প্রয়োজন। যেখানে বহু জাতিগোষ্ঠী, ভাষা ও সংস্কৃতির সম্মান থাকবে এবং সকল নাগরিকের অধিকার রক্ষা পাবে।”
এদিন সকালে এনসিপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল রাঙামাটি পৌঁছালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বর থেকে একটি পদযাত্রা বের হয়, যা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বনরুপা সিএনজি স্টেশনে এসে শেষ হয়। পদযাত্রা ঘিরে রাঙামাটি শহর ও কাউখালী বেতবুনিয়ায় নেওয়া হয় নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, ডা. তাসনীম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়ক বিপিন জ্যোতি চাকমা। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা নাছির উদ্দীন পাটোয়ারী, এস এম সুজা উদ্দিন, রুবাইয়া, শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যাসহ অনেকে।
দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “১৯৭২ সালের সংবিধানে পার্বত্য অঞ্চলের জাতিসত্তাগুলোর স্বীকৃতি না দিয়ে সবাইকে জোর করে বাঙালি বানানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এনসিপি এই বৈষম্য দূর করতে চায়।” তিনি আরও বলেন, বিচার ও প্রশাসনিক সংস্কার সম্পন্ন করে পরবর্তী বাংলাদেশ গঠন এখন সময়ের দাবি।
উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “অপরাধী ও দুর্নীতিবাজদের পার্বত্য বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে বদলি করা হয়—এটি কোনো শাস্তি হতে পারে না। দুর্নীতিবাজদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পার্বত্য এলাকায় চাঁদাবাজ ও দালালদের কোনো ঠাঁই নেই।” তিনি পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য ও অধিকার রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
নাহিদ ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, “যদি কোনো বক্তব্যে ভুল বা বিভ্রান্তি থেকে থাকে, আমরা তা সংশোধন করতে প্রস্তুত। এনসিপি বিশ্বাস করে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই বিভাজন দূর করে সবার অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করা সম্ভব।”