শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:৫৩:১২

বিএনপি-জামায়াত নাকি এনসিপি, পছন্দে কারা এগিয়ে? জরিপের ফলাফল প্রকাশ

বিএনপি-জামায়াত নাকি এনসিপি, পছন্দে কারা এগিয়ে? জরিপের ফলাফল প্রকাশ

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টার (বিওয়াইএলসি) ‘ইয়ুথ ম্যাটারস সার্ভে ২০২৫’ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশের তরুণ ভোটারদের মধ্যে রাজনৈতিক পছন্দে এগিয়ে রয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। 

বুধবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে বিওয়াইএলসির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ জরিপ প্রকাশ করা হয়। দেশের আটটি বিভাগের ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ২ হাজার ৫০০ তরুণ-তরুণীর মতামতের ভিত্তিতে এ সমীক্ষা পরিচালিত হয়েছে।

জরিপ অনুযায়ী, ১৯.৬ শতাংশ তরুণ বিএনপিকে, ১৬.৯ শতাংশ জামায়াতে ইসলামকে এবং ৩.৬ শতাংশ এনসিপিকে সমর্থন করছেন। এ ছাড়া ৯.৫ শতাংশ তরুণ কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে পছন্দ করেছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, ৩০ শতাংশ তরুণ এখনও ভোটের বিষয়ে সিদ্ধান্তহীন এবং ১৭.৭ শতাংশ তাদের পছন্দের দলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।

বক্তব্য দেন বিওয়াইএলসির নির্বাহী পরিচালক তাহসিনাহ আহমেদ, ভয়েস ফর রিফর্মের সহসমন্বয়ক ফাহিম মাশরুর, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ডা. আব্দুন নূর তুষার, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ জান্নাতুল মাওয়া এবং লিড ফ্যাকাল্টি মুনিরা সুলতানা।

সমীক্ষায় বলা হয়, ১০–২১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের আট বিভাগ, ২৭ জেলা ও ১৭৫টি নমুনা ইউনিটে সরাসরি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে জরিপটি পরিচালিত হয়। জরিপে অংশ নেওয়া ৮৯ শতাংশ তরুণ নিবন্ধিত ভোটার এবং ৯৭.২ শতাংশ আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে আগ্রহী।

নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় ৪৯.৮ শতাংশ উত্তরদাতার অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি আস্থা রয়েছে। আবার ৬৩.১ শতাংশ মনে করেন, আগের সরকারের তুলনায় এখন সামাজিক মাধ্যমে মত প্রকাশ করা আরও নিরাপদ।

ছাত্র রাজনীতির বিষয়ে ৫২.৬ শতাংশ তরুণ একে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর মনে করেন। এর মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব (৪৮%), সহিংসতা (২৩.৮%) এবং ক্ষমতার অপব্যবহার (১১.১%) প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।

দেশের আগামী পাঁচ বছরের অগ্রাধিকার হিসেবে ৬৭.১ শতাংশ দুর্নীতি দমনকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলেছেন। ৬৫.৩ শতাংশ দেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সম্প্রীতি বজায় আছে বলে মনে করেন। তবে ৭৬ শতাংশ তরুণ নারীর নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

জরিপে আরও উঠে এসেছে—তরুণদের ৩৯.১ শতাংশ উদ্যোক্তা হতে চান, আর ১৮.৩ শতাংশ ভবিষ্যতে বিদেশে স্থায়ী হওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তাদের মতে, দেশে কর্মসংস্থানের অভাব ও সামাজিক-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ এর প্রধান কারণ।

তথ্য বিভ্রান্তির বিষয়ে ৫৯.৬ শতাংশ তরুণ মনে করেন সামাজিক মাধ্যম দেশের বাস্তবতা সঠিকভাবে তুলে ধরে না। তবুও ৬১.৭ শতাংশ তরুণ দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাবাদী।

তাহসিনাহ আহমেদ বলেন, “তরুণরা রাজনৈতিকভাবে সচেতন ও সামাজিকভাবে জাগ্রত। তাদের ভাবনা ও উদ্বেগ নীতিনির্ধারকদের গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিতে হবে।”

ফাহিম মাশরুর মনে করেন, উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ বাড়লেও প্রয়োজন যথাযথ প্রশিক্ষণ। ডা. আব্দুন নূর তুষারের ভাষায়, “হতাশার মধ্যেও তরুণদের দৃঢ়তা ও আশার প্রতিফলন এই জরিপ।”

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে