জমি ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। আগামী বছর থেকেই সারাদেশে ডিজিটাল নামজারি ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তুতি চলছে। এর অংশ হিসেবে চলতি মাসের মধ্যেই ১০ ধরনের জমির নামজারি (মিউটেশন) বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জাল দলিল, ভুল দাগ নম্বর, দখলে না থেকেও নামজারি, সরকারি বা সংস্থার জমি ব্যক্তির নামে তুলে নেওয়া—এসব অনিয়ম রোধ করতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন নীতিতে অস্বচ্ছ বা জালিয়াতির মাধ্যমে করা নামজারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হবে।
যে ১০ ধরনের নামজারি বাতিল হবে
১. চলমান মামলার জমি: মামলার মধ্যে থাকা জমির নামে ঘুষ বা প্রভাব খাটিয়ে করা নামজারি বাতিল হবে।
২. দখলে না থাকা জমি: প্রকৃত দখল অন্য কারও হলে নামজারি বাতিল হবে।
৩. অংশের চেয়ে বেশি জমি: মালিকানার চেয়ে বেশি জমি নামজারি করলে অতিরিক্ত অংশ বাতিল হবে।
৪. ভুল দাগ নম্বর: দলিলে ভুল দাগ থাকলে সংশোধন না হলে নামজারি শূন্য ঘোষণা হবে।
৫. অর্পিত সম্পত্তি (ক-তফসিল): সরকারি সম্পত্তি কোনোভাবেই ব্যক্তির নামে নামজারি করা যাবে না।
৬. খাস জমি: সরকারের মালিকানাধীন খাস জমির সব ভুল নামজারি বাতিল হবে।
7. সরকারি সংস্থার জমি: রেলওয়ে, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক বিভাগসহ সংস্থার জমিতে নামজারি নিষিদ্ধ।
৮. রেকর্ডবিহীন জমি: সর্বশেষ রেকর্ড (RS/BS/CS/DCR) না থাকলে নামজারি করা যাবে না।
৯. নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত জমি: অনলাইন তালিকায় নিষিদ্ধ হিসেবে থাকা সম্পত্তির নামজারি সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হবে।
১০. ঘুষ বা জালিয়াতি করে নামজারি: যেকোনো প্রতারণামূলক নামজারি একে একে বাতিল হবে।
নামজারি বাতিল হলে করণীয়
নামজারি বাতিল হলে জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ, খাজনা প্রদানে বাধা, জমি বিক্রি বা হস্তান্তরে জটিলতা তৈরি হতে পারে।
যেভাবে সতর্ক থাকবেন
দলিলের দাগ, মৌজা ও পরিমাণ যাচাই করুন
জমির প্রকৃত দখল নিশ্চিত করুন
খাস বা সংস্থার জমি কিনবেন না
অনলাইনে দাগ নম্বর দিয়ে জমির স্ট্যাটাস চেক করুন
ভুল দলিল দ্রুত সংশোধন করুন
প্রয়োজনে এসিল্যান্ড অফিসে আপত্তি (মিস কেস) করুন
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জমির মালিকদের আগেভাগে এসব যাচাই করে নেওয়া জরুরি; অন্যথায় বড় সমস্যায় পড়তে হতে পারে।