মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০১৯, ০৩:২৫:১১

বাংলাদেশের রফিকের কাছে হেরে গেলেন অশ্বিন!

বাংলাদেশের রফিকের কাছে হেরে গেলেন অশ্বিন!

স্পোর্টস ডেস্ক : ‘নৈতিকতায়’ বাংলাদেশের রফিকের কাছে হেরে গেলেন অশ্বিন! সোমবার রাতে এক বিতর্কিত আউট দেখলো ক্রিকেট দুনিয়া। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। কেউ একে নিয়মের মধ্যে ফেলে বৈধতা দিতে চান, কেউ প্রশ্ন তুলেছেন নৈতিকতা নিয়ে।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ- আইপিএলে সোমবার কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের মুখোমুখি হয়েছিল রাজস্থান রয়্যালস। এ ম্যাচে পাঞ্জাবের অধিনায়ক রবিচন্দ্রন অশ্বিন রাজস্থান রয়্যালসের জস বাটলারকে বিশেষ একটি উপায়ে আউট করেন।

স্পিনার অশ্বিন খেয়াল করেন ইংল্যান্ডের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান বাটলার তার বল ছাড়ার আগে বোলিং প্রান্তের ক্রিজ ছেড়ে বের হন। তখন অশ্বিন বেল ফেলে দেন এবং আপিল করেন আম্পায়ারের কাছে।

এই সিদ্ধান্ত থার্ড আম্পায়ার দেন এবং সেটা বাটলারের বিপক্ষে যায়। এক উইকেটে ১০৮ রান তুলে ফেলা রাজস্থান শেষ পর্যন্ত ১৪ রানে ম্যাচটা হেরে যায়।

রাজস্থানের ঘরের মাঠে প্রথমে ব্যাট করে ১৮৪ রান করে পাঞ্জাব। রান তাড়া করতে নেমে দারুণ খেলছিল রাজস্থান রয়্যালস। অশ্বিনের করা ত্রয়োদশ ওভারের শেষ বলটাতে দারুণ ছন্দে ৬৯ রান করা জস বাটলার নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে বল ছোড়ার আগেই উইকেট থেকে বেরিয়ে যান। বলটা করতে গিয়েও থেমে গিয়ে উইকেট ভেঙে বাটলারকে বিতর্কিত এক আউট করেন পাঞ্জাবের অধিনায়ক।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল- আইসিসি, এমন আউট হবার পর তাদের টুইটার পেজে একটি প্রশ্ন রাখে। বাটলারকে ‘মানকড়’ আউট করার ক্ষেত্রে কি সঠিক কাজ করেন অশ্বিন?

সেখানে ৭২ শতাংশ উত্তর আসে- ‘না’।

এ ঘটনায় আলোচনা এসেছে বাংলাদেশের অলরাউন্ডার মোহাম্মদ রফিকের নাম। পাকিস্তানের সাথে এক ম্যাচে এ ধরনের ‍সুযোগ সামনে এলেও তিনি তার ব্যবহার করেননি। যদি তিনি তা করতেন তাহলে সে ম্যাচটিতে না হেরে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয় অবশ্যম্ভাবি হয়ে উঠেছিল। আশাভঙ্গের নিদারুণ এক যন্ত্রণায় ভুগতে হতো না টাইগারদের।

২০০৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ছিল শনিবার। মুলতানের মাটিতে স্বাগতিক পাকিস্তানের মুখোমুখি বাংলাদেশ। রৌদ্রকরোজ্জ্বল দিনটি শুরু হয়েছিল বিশাল এক উত্সবের অপেক্ষায়। কিন্তু দিনের অর্ধেক সময় পেরোতে না পেরোতেই সেই উত্সবের অপেক্ষা পরিণত হয়েছিল আশাভঙ্গের নিদারুণ এক যন্ত্রণায়। দেশের ক্রিকেট সেদিন নীল হয়েছিল তীরে এসে তরি ডোবার বেদনায়। 

এই দিনেই প্রথম টেস্ট জয়ের উন্মাতাল আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছিল বাংলাদেশ। বঞ্চিত হয়েছিল চরম দুর্ভাগ্যের শিকার হয়ে; ইনজামাম-উল হক নামের এক অসাধারণ ব্যাটসম্যান সেদিন নিজের ব্যাটিংশৈলীর অনুপম প্রদর্শনী ঘটিয়ে বাংলাদেশের হাত থেকে কেড়ে নিয়েছিলেন নিশ্চিত এক জয়। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার আড়াই বছরের মাথায় পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়ের সমূহসম্ভাবনায় উত্সব-প্রস্তুতি সেদিন বাংলাদেশের জন্য বিষণ্ন কান্নায় পরিণত হয়েছিল। মুলতানে পাকিস্তানের বিপক্ষে এক উইকেটের ব্যবধানে ওই পরাজয় তাই পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের চিরকালীন দুঃখে।

জয় থেকে পাকিস্তান তখনো ৫৫ রান দূরে। বল হাতে ওই মুহূর্তে তখন মোহাম্মদ রফিক। একটি দ্রুত রান নিতে গিয়ে ক্রিজ ছেড়ে অনেক দূর বেরিয়ে গিয়েছিলেন উমর গুল। রফিক বল করা বন্ধ করে দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন। গুল তখন ক্রিজ ছেড়ে অনেক দূরে। রফিক গুলকে সাবধান করলেন। ফিরে আসতে বললেন ক্রিজে। 

হাতের মুঠোয় আরও একটি উইকেট পতনের সুযোগ পেয়েও রফিক তা কাজে লাগালেন না কেবল খেলোয়াড়ি উদারতার পরিচয় দিয়ে। নতুন জীবন পেয়ে উমর গুল সহায়তা করতে থাকলেন ইনজামামকে। গুল খেললেন ৯৯টি বল। মাত্র ৫ রান করলেও গুলের ওই ইনিংসটি ঠিক ওই মুহূর্তে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়েছিল। সেই গুল যখন রান আউট হন, তখন পাকিস্তান জয় থেকে মাত্র ৩ রান দূরে।

শেষ পর্যন্ত ইনজামাম পুল করে বল বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে ফেলে বাংলাদেশের হত থেকে কেড়ে নেন জয়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে