স্পোর্টস ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকার পর এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ বধ। চলতি ক্রিকেট বিশ্বকাপে ফের ইতিহাস গড়া জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
ইংল্যান্ডের টনটনে উইন্ডিজের দেওয়া ৩২২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪১.৩ ওভারে ৫১ বল হাতে রেখে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টাইগাররা। এ জয়ের ফলে পাঁচ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে টাইগারদের অবস্থান এখন ৫-এ।
ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টাইগারদের দুর্দান্ত এ জয়ের কারণগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে করেছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে...
ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেন ঘুমিয়ে পড়েছিল ব্যাটিং দানব ক্রিস গেলের ব্যাট। সাকিবদের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমে দেখা যাবে গেল-ঝড়, এমনটাই আশা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সমর্থকদের। উল্টো শূন্য রানে সাজঘরে ফিরে যান গেইল। ১৩ বল খেলে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে উইকেটকিপার মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়নে তিনি।
ক্রিস গেইলের মতোই একেবারে ব্যর্থ আর এক ক্যারিবিয়ান তারকা আন্দ্রে রাসেল। বাংলাদেশ ম্যাচে তিনি যে পুরোপুরি ফিট নন, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। আইপিলের বিধ্বংসী রাসেলকে সোমবার টনটনে খুঁজে পাওয়া যায়নি। গেইলের মতোই আউট হয়েছেন শূন্য রানে।
ক্রিস গেইলের পর ক্যারিবিয়ানদের আর এক ওপেনার ইভিন লুইস দলের হাল ধরলেও তাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি দেন সাকিব আল হাসান। শাই হোপের সঙ্গে মিলে ১১৬ রানের পার্টনারশিপ করেন লুইস। তবে তিনি আউট হয়ে যান ব্যক্তিগত ৭০ রানে।
লুইসের মতোই দুরন্ত ব্যাটিং করেছেন হোপ। তার ইনিংসকে ৯৬ রানেই থামিয়ে দেন কাটার বয় মুস্তাফিজুর রহমান। হোপ আরও কিছুক্ষণ ক্রিজে থাকলে ক্যারিবীয়দের ইনিংস নিয়ে অবশ্যই অন্য গল্প লেখা হত।
পাঁচ নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে শিমরন হেটমায়ার এক সময় ঝড় বইয়ে দিয়েছিলেন টনটনে। ২৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি এসেছে তার ব্যাট থেকে। তবে আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আগেই তাকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান।
গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এক ওভারে ২ উইকেট নিয়ে ক্যারিবিয়ানদের আরও বড় রানের টার্গেট থেকে দূরে সরিয়ে দেন মুস্তাফিজ। ৩৯.৩ ওভারে ফিরিয়ে দেন বিপজ্জনক হেটমায়ারকে। এরপর ওই ওভারে শেষ বলে ঘরে পাঠান রাসেলকে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্যাপ্টেন জেসন হোল্ডার ম্যাচের পরে বলেছিলেন, ৩২১ রান নয়, সঙ্গে আরও ৪০-৫০ রান প্রয়োজন ছিল তাদের। তবে ক্রিজে সেট হওয়া লুইস, হোপ বা হেটমায়ারের উইকেট হারানোয় ক্যারিবিয়ানদের সে রানের টার্গেট অধরাই থেকে যায়।
৩২২ রানের পাহাড়সম টার্গেট নিয়ে খেলতে নেমে অযথা টেনশন করেনি বাংলাদেশের ওপেনাররা। ৫৩ বলে ঝকঝকে ৪৮ রান করে শুরুতেই দলকে ছন্দে এনে দেন তামিম ইকবাল। অন্য দিকে, বড়সড় রান না করলেও মাত্র ২৩ বলে ২৯ রান করেন সৌম্য সরকার।
লিটন দাসের দায়িত্বশীল ব্যাটিং দেখার পর অনেকেই বলাবলি করছিলেন, তাকে প্রথম এগারোর বাইরে রেখে এত দিন বিশ্বকাপে কেন খেলেছে বাংলাদেশ? সাকিবের সঙ্গে জুটি গড়ে করেছেন ১৮৯ রান। তাতে লিটনের নিজের অবদান ৬৯ বলে ৯৪ রান।
টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে তিন নম্বর জায়গাটা চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। চলতি বিশ্বকাপে তার ফল পাচ্ছে বাংলাদেশ। বল হাতে ২ উইকেট নেওয়ার পর এ বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করলেন তিনি। ৯৯ বলে খেলে তার ব্যাট থেকে এসেছে অপরাজিত ১২৪ রানের ইনিংস। বাংলাদেশকে স্মরণীয় জয় উপহার দেওয়া সাকিব ছাড়া এ ম্যাচের সেরা আর কে হবেন!