স্পোর্টস ডেস্ক : বাইশ গজে এক সময় চুটিয়ে দাপট চলতো তাঁর। কিন্তু এক চরম ভুলে হঠাৎই জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। তছনছ হয়ে যায় গোটা জীবনটাই। তিনি দানিশ কানেরিয়া। পাকিস্তানের অন্যতম সফল ডান হাতি লেগস্পিনার। এবং অবশ্যই সে দেশের সফলতম হিন্দু ক্রিকেটার।
১৯৮০ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের করাচিতে জন্ম দানিশের। করাচির গভর্নমেন্ট ইসলামিয়া কলেজ থেকে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে মাত্র ১৯ বছরেই জাতীয় টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। ছোট থেকেই করাচি হোয়াইট, করাচি ব্লুজ, সিন্ধ ক্রিকেট টিম ইত্যাদি নানা ঘরোয়া দলে খেললেও ২০০০ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচ দিয়েই যাত্রা শুরু করেন তিনি।
২০০১ সালে এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চলাকালীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পর পর দুটি ইনিংসে ছয়টি করে উইকেট নিয়ে সবার নজরে চলে আসেন। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক খ্যাতির শিরোপা মাথায় উঠতে থাকে তার।
২০০৪ সালে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তার স্ত্রীর নাম ধরমিতা কানেরিয়া। তাদের এক পুত্র এবং এক কন্যাও রয়েছে। ২০০৯ সালে ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তৃতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৬৮ রানের বিনিময়ে সাতটি উইকেট নিয়ে নজির গড়েন।
২০০৪ থেকে ২০১০ পর্যন্ত কাউন্টিতে এসেক্সের হয়ে খেলেছেন এই লেগস্পিনার। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগে অভিযুক্ত হন তিনি। যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন দানিশ।
তার পাল্টা অভিযোগ ছিল, তৎকালীন পাকিস্তান দলে একমাত্র সংখ্যালঘু ক্রিকেটার হওয়ার জন্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তার বিরুদ্ধে এই চক্রান্ত করা হয়েছে। ২০১২ সালে ক্রিকেট বোর্ড ক্রিকেট থেকে চিরনির্বাসিত করে তাকে।
বিতর্কিত এই মানুষটি পাকিস্তানের হয়ে মোট ৬১টি টেস্ট ম্যাচ খেলেন। ঝুলিতে রয়েছে মোট ২৬১টি উইকেট। গড় ৩৪.৭৯। ম্যাচ ফিক্সিং কাণ্ডে জড়িয়ে ক্যরিয়ার শেষ করে ফেলা কানেরিয়া পাকিস্তানের হয়ে ১৮টি ওয়ানডে খেলে ১৫টি উইকেট নেন। গড় ছিল ৪৫-এর উপর।
ভারত, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে জেতানো, আবার স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে যুক্ত হয়ে বিশ্বের দরবারে পাকিস্তানের মাথা হেঁট করা— রাতারাতি নায়ক থেকে ভিলেন হয়ে যান পাকিস্তানের সফলতম হিন্দু ক্রিকেটার।