সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৯, ০৮:৫৫:৪৬

এক নজরে ক্রিকেটারদের ১১ দাবি

এক নজরে ক্রিকেটারদের ১১ দাবি

স্পোর্টস ডেস্ক : নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় ১১ দফার দাবি পেশ করেছে জাতীয় পর্যায়ের ক্রিকেটাররা। সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অ্যাকাডেমি মাঠে সাংবাদিকদের কাছে এই দাবিগুলো তুলে ধরেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ফরহাদ রেজা, জুনায়েদ সিদ্দিকী, নাঈম হোসেন, এনামুল হক বিজয়, নুরুল হাসান সোহান ও এনামুল হক জুনিয়র।

এক নজরে ক্রিকেটারদের ১১ দাবি
১. আমাদের খেলোয়াড়দের উন্নয়নের যে অ্যাসোসিয়েশন আছে (ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-কোয়াব) আমরা কখনও দেখিনি তারা আমাদের পক্ষে কথা বলেছেন। অতএব কোয়াবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক যারা আছেন তাদের অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। আমাদের প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি কে হবেন সেটা আমরা প্লেয়াররা নির্বাচনের মাধ্যমে ঠিক করব।

২.বেশ কয়েকবছর ধরে আপনারা জানেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের অবস্থাটা কি। যেভাবে প্রিমিয়ার লিগ হচ্ছে তাতে সব খেলোয়াড়রই অসন্তোষ প্রকাশ করছে। পারিশ্রমিকের একটা মানদণ্ড বেধে দেয়া হচ্ছে এবং অনেক সীমাবদ্ধতা এখানে আছে। আমরা যেভাবে আগে প্রিমিয়ার লিগ খেলতাম এবং খেলোয়াড়রা যেভাবে ক্লাব অফিসিয়ালদের সঙ্গে ডিল করত তা এখন আর নেই। আমাদের দাবী হচ্ছে আগে যেভাবে প্রিমিয়ার লিগটা চলত সেভাবে যেন আমরা পাই।

৩. আমাদের তৃতীয় দাবি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) নিয়ে।আপনারা জানেন এবারের বিপিএল অন্য নিয়মে হচ্ছে। কিন্তু আমাদের যেটা মূল দাবী সেটা হলো বিপিএল যেন আগের নিয়মে চলে আসে এবং আমাদের স্থানীয় খেলোয়াড়দের ন্যায্য মূল্যটা যেন বিদেশি খেলোয়াড়দের সঙ্গে থাকে। আমরা দেখি যে বিপিএলে বিদেশি খেলোয়াড়রা আসে এবং তাদের অনেক পারিশ্রমিক দেয়া হয়। কিন্তু স্থানীয়রা সেটা পায় না। বিসিবিকে সেই নিশ্চয়তা দিতে হবে। আপনারা যদি খেয়াল করে দেখন বিশ্বের অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে যে যে খেলোয়াড় তারা নিলামেই নিশ্চিত করে যে কোন গ্রেডে থাকবে। আমার মনে হয় আমাদেরও সেই সম্মানটা দেয়া উচিত।

৪. আমাদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলোয়াড়দের বেতন ১ লাখ টাকা হওয়া উচিত। আমরা এই দাবিটা অবশ্যই জানাচ্ছি। আমাদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের খেলোয়াড়দের বেতন অনেক কম। সেটা নূন্যতম ৫০ ভাগ বাড়াতে হবে। অনুশীলন সুবিধা বাড়াতে হবে। জিম, ইনডোর, মাঠ সব কিছুর সুবিধা বাড়াতে হবে। ১২ মাস কোচ, ফিজিও, ট্রেনার নিয়োগ দিতে হবে। আমরা চাই এটা আসছে মৌসুমের আগেই নিশ্চিত করতে হবে। আমরা চাই না প্রতিটি অনুশীলনই ঢাকাতে হোক। ঢাকার বাইরে বরিশাল তাদের হোম ভেন্যুতে, খুলনা তাদের হোম ভেন্যুতে অনুশীলন করবে তাইলেই ক্রিকেটের প্রসার বৃদ্ধি পাবে।
আমরা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে যে বল দিয়ে খেলি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেই বল দিয়ে খেলা হয় না। ফলে আমাদের নতুন করে বলের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হয়। এই জিনিসটা যেন আমাদের না করতে হয়।

৫. ডেইলি অ্যালাওন্স বাবদ আমাদের ১৫শ টাকা দেয়া হয়। আমার মনে হয় না এটা আমাদের জন্য পর্যাপ্ত। যে ফিটনেস লেভেল বিসিবি খেলোয়াড়দের থেকে দাবি করে মনে হয় না সেটা ১৫শ টাকায় সম্ভব। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে এবং ভালো হোটেলে থাকতে হবে। সেটা বিবেচনা করে যে টাকা দিলে ভাল হয় বিসিবি সেটা যেন করে।
ভ্রমণ, এটা বড় একটি ইস্যু। ভ্রমণ বাবদ যে টাকা দেয়া হয় সেটা পর্যাপ্ত না। আমাদের ২৫শ টাকা দেওয়া হচ্ছে এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে ভ্রমণ বাবদ। আপনারা বলতে পারেন ২৫ শ টাকায় বাসা ছাড়া অন্য কোন ভাবে সে পৌঁছাতে পারে? অতএব বিসিবি থেকে যেন বিমান ভাড়া দেওয়া হয় সেই নিশ্চয়তা দিতে হবে।
হোটেলে জিম এবং সুইমিং পুল অবশ্যই থাকতে হবে। কারণ চার দিনের ম্যাচ শেষে প্রতিটি খেলোয়াড়ের অনেক কষ্ট হয়। তো এখানে অবশ্যই রিকভারির জায়গা থাকতে হবে। টু স্টার বা থ্রি স্টার হোটেলে প্লেয়ারদের থাকা সম্ভব নয়।
বাস: আপনারা দেখেন আমরা কি বাসে চলা ফেরা করি। এটা প্লেয়ারদের জন্য একবারেই আরামদায়ক নয়। অতএব একটা এসি বাস অবশ্যই যেন থাকে।

৬. জাতীয় দলের চুক্তিবদ্ধ প্লেয়ারদের সংখ্যা বাড়াতে হবে। বিশ্বব্যাপী যদি আপনারা চিন্তা করেন আমার মনে হয় আমাদের চুক্তিভুক্ত প্লেয়ারদের সংখ্যা কম। আমার মনে হং চুক্তিভুক্ত প্লেয়ারদের সংখ্যা ৩০ জন করা উচিত। এবং করতে হবে। শুধু তাই নয়, আমাদের বেতন বাড়াতে হবে তিন বছর যাবত আমাদের বেতন বাড়নো হয় না। অতএব বেতনও বাড়াতে হবে।

৭. আমাদের গ্রাউন্ডস ম্যান,কোচ মাস শেষে অনেক কম টাকা বেতন পায়। বিদেশি প্লেয়াররা যে বেতন পায় সে তুলনায় আমাদের স্থানীয়দের বেতন খুব পায়। আমাদের আম্পায়ার, ফিজিও  ও ট্রেনারদের ও একই অবস্থা। অতএব তাদের বেতনও বাড়ানো উচিত।

৮. ঘরোয়া ক্রিকেটে আমরা দুই ধরণের লঙ্গার ভার্সন খেলি বিসিএল ও এনসিএল। কিন্তু ওয়ানডেতে আমরা একটা মাত্র ভার্সন খেলি। এই সংখ্যাটি আরও বাড়ানো উচিত। টি-টোয়েন্টিতে আমরা বিপিএল নামক মাত্র একটা একটি লিগ খেলি। আমার মনে হয় বিপিএলে আরও ভালো করতে অন্তত আরও একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলা উচিত। আগে জাতীয় লিগে আমরা আগে একটি ওয়ানডে খেলতাম। যা এখন আমরা পাই না। সেটা বাড়ানো হোক।

৯. ঘরোয়া ক্রিকেটের জন্য একটি নির্ধারিত ক্যালেন্ডার থাকতে হবে। এটা হলে আমরা আগে থেকে আমরা থেকে প্রস্তুতি নিতে পারি।

১০. প্রিমিয়ার লিগে যে বকেয়া সেটা যেন ক্লিয়ার করা হয়। প্রতিবছর যে সময়টা দেয়া থাকে তার মধ্যে যেন ক্লিয়ার করা হয়।

১১. ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে একটি নিয়ম করে দেয়া হয়েছে যে দুই জনের বেশি খেলতে পারব না। সেই জায়গায় আমাদের যদি জাতীয় দলের বাইরে যদি ফ্রি থাকি এবং আমাদের যদি ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে আমরা কয়েকটি ম্যাচ বেশি খেলতে পারব।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে