শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০২০, ০৬:৩৮:৪২

করোনা থেকে সুস্থ হয়ে নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে অভয় দিলেন আর্সেনাল কোচ

করোনা থেকে সুস্থ হয়ে নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে অভয় দিলেন আর্সেনাল কোচ

স্পোর্টস ডেস্ক : করোনা ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবল ক্লাব আর্সেনালের কোচ মিকেল আর্তেতা। গত ১২ মার্চ কোভিড-১৯ পরীক্ষায় পজিটিভ ধ'রা পড়ে আর্তেতার। এরপর থেকেই আইসোলেশনে চলে যান তিনি। আইসোলেশনে যথাযথ নিয়ম মেনে চলায় দুই সপ্তাহের কম সময়েই সুস্থ হয়ে উঠেছেন কোচ। 

গত সোমবার জানা গেছে, তিনি এখন বি'পদমুক্ত। চিকিৎসকদের কাছ থেকে সুস্থতার সার্টিফিকেট পাবার পর করোনা ভাইরাস নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা ক্লাব ওয়েবসাইটকে জানিয়েছেন ৩৮ বছর বয়সী এই স্প্যানিশ কোচ আর্তেতা। আর্তেতার আক্রা'ন্ত হবার পর-পরই স্থ'গিত হয়ে যায় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। সকল ক্লাবগুলো তাদের খেলোয়াড়দের ছেড়ে দেয়। 

যাতে খেলোয়াড়রা নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করতে পারে। কারণ আর্তেতা আক্রা'ন্ত হবার কিছুদিন আগেই অলিম্পিয়াকোসের মালিকের করোনা ভাইরাস ধ'রা পড়ে। তারও কয়েকদিন আগে অলিম্পিয়াকোসের সাথে ইউরোপা লিগের শেষ ৩২-এর ম্যাচ খেলে আর্সেনাল। এরপরই নিজের মধ্যে করোনা ভাইরাসের লক্ষন টের পান আর্তেতা। 

আর্সেনালডটকমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আর্তেতা বলেন, 'অলিম্পিয়াকোসের মালিকের করোনা ধ'রা পড়ার পর ক্লাব আমাদের করোনা ভাইরাস নিয়ে সর্ত'ক করে। তারা জানায়, আমরাও ভাইরাসটির সং'ক্র'মণের ঝুঁ'কিতে আছি। তত দিনেই আমার মধ্যে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। তখন আমার মনে হচ্ছিল, কিছু একটা আছে আমার শরীরে।'

আ'ত'ঙ্কিত হয়ে নিজের শারীরিক সম'স্যার কথা ক্লাবের চিকিৎসককে জানান আর্তেতা। চিকিৎসক তাকে সত'র্ক থাকতে বললে, ক্লাবের সকলকে সাব'ধান করে আর্তেতা। তিনি জানান, 'ক্লাবকে বলেছিলাম, আমাদের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় ভাই'রাসটিতে সং'ক্রমিত হওয়ার ঝুঁ'কিতে আছে। আমিই প্রথম লক্ষণগুলো টের পাচ্ছি। প্রতিদিনই আমার সং'স্পর্শে যে খেলোয়াড়েরা বা ক্লাবের লোকজন আসেন, সবাই ভাই'রাসে সং'ক্র'মিত হওয়ার ঝুঁ'কিতে থাকবে। এটা হতে দেওয়া যাবে না। প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষের সাথে আমাদের কথা বলতে হবে, ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে কথা বলতে হবে, দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।'

শুধু খেলোয়াড়-ক্লাবের কর্মকর্তাই নন, তার আশপাশের সবাই আর্তেতার মাধ্যমে ঝুঁ'কিতে পড়ে যাচ্ছেন, এমন উপলব্ধি হয় আর্তেতার। তাই ভয় কাজ করতে থাকে তার, 'তখন মনে হলো, সবাই-ই তো তাহলে আমার মাধ্যমে ঝুঁ'কিতে পড়ে যাচ্ছে। খুবই ভ'য়ং'কর ব্যাপার হতে যাচ্ছে। আমার কাছের যারা আমার সং'স্পর্শে আসছেন তারাই আ'ক্রা'ন্ত হচ্ছেন। তাদের নিয়ে চিন্তা চলে আসে তখন। আর তখনই ভ'য়ে আ'ত'ঙ্কিত হয়ে উঠি আমি।'

তবে লক্ষণ ধ'রা পড়ার পর সময়ক্ষেপন করেননি আর্তেতা। দ্রুতই আইসোলেশনে চলে যান তিনি। যাতে ভাইরাসটা তার কাছ থেকে আর কারও শরীরে ছড়াতে না পারে। এরপর আইসোলেশনে প্রা'ণঘা'তি ভাইরাসের বিপক্ষে লড়াই শুরু করেন আর্তেতা। বেঁচে থাকার লড়াই। লড়া'ইটা কেমন ছিল আর্তেতার? আর্তেতা নিজেই বললেন সেই দুঃসময়ের কথা, 'লক্ষণের দিকগুলো ভাবলে, আমার কাছে অন্য ভাইরাসের মতোই মনে হয়েছে। প্রথম তিন-চার দিন ক'ঠি'ন গেছে। জ্বর ছিল, শুকনো কাশি ছিল, অ'স্ব'ন্তি বোধ করছিলাম। খুবই বাজে কষ্টকর সময় ছিল।'

এই মহামা'রীতে আক্রা'ন্ত হবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই ব্যস্ত ছিলেন আর্তেতা। তিনি বলেন, 'আমরা এখন এমন একটা সময়ে বাস করছি, যেখানে সোশ্যাল মিডিয়াই যেন সবকিছু। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজেই যোগাযোগ হয়ে যাচ্ছে। তবে একে অপরকে ছোঁয়া, আলিঙ্গন করাটাও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি এসব মিস করেছি, আমার ভালোবাসার মানুষদের কাছ থেকে। আমাদের মানসিকভাবে আরও উন্মুক্ত হতে হবে। একে অপরের অনুভূতি বুঝতে হবে।'

এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পেলে তা ভুলে যাওয়াই উত্তম বলে জানান আর্তেতা, 'আইসোলেশনে যাবার পর আমি জানতাম না কতদিন লাগবে সুস্থ হতে। দ্রুতই সুস্থ হচ্ছি। এখন পুরোপুরি সেরে উঠেছি বলেই মনে হচ্ছে। তবে আমরা যদি শীঘ্রই এটি কাটিয়ে উঠতে পারি, তাহলে ভুলে যাওয়াই ভালো। কারণ এটাই বেশি গুররুত্বপূর্ণ।'

নিজের চেয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়েই বেশি চিন্তা হচ্ছিল আর্তেতার। নিজের বাচ্চাদের নিয়ে অনেক চিন্তায় ছিলেন তিনি। বাচ্চাদের কোন সমস্যা না হওয়ায় ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিতে ভুল করেননি আর্তেতা, 'সবচেয়ে ক'ঠিন হচ্ছে, ঘরে আরও মানুষের সাথে তিনটা বাচ্চা আছে আমার। ওদের নিয়ে চিন্তা হচ্ছিল। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, বাচ্চাদের কিছু হয়নি। তবে এখন আমরা সবাই ভালো আছি।' 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে