সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:১৫:৪৪

আজ সেই 'ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর', শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়াও এ ঘ'টনার নি'ন্দা জানিয়ে মুক্তির দা'বি জানান

আজ সেই 'ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর', শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়াও এ ঘ'টনার নি'ন্দা জানিয়ে মুক্তির দা'বি জানান

স্পোর্টস ডেস্ক : আজ ২১ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে এই দিনটি বিশেষ এক কারণে স্মরণীয় হয়ে আছে। অনেকে আবার দিনটিকে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে কালো রাত্রি বলে চি'হ্নিত করেছেন। প্রশ্ন উঠতে পারে কী এমন ঘ'টেছিল যে, দিনটিকে কালো রাত্রি বা ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর বলা যেতে পারে? 

১৯৮২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত মোহামেডান-আবাহনীর ফুটবল ম্যাচকে কেন্দ্র করে সেই বে'দনাদায়ক ঘ'টনা ঘ'টেছিল। সেবার সন্ধ্যায় সুপার লিগে চিরপ্রতিদ্ব'ন্দ্বী দুই দল মু'খোমু'খি হয়। পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে থেকে সেবার মোহামেডান আগেই শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলেছিল। কিন্তু মর্যাদার ল'ড়াই বলে দুই দলের সমর্থ'কদের কাছে ম্যাচের গুরুত্ব ছিল অনেক। এখন ফুটবলে দর্শক সমাগম না হলেও তখন দুই দলের খেলা মানেই দুপুরের আগেই গ্যালারি ভরে যাওয়া। সেই ম্যাচে কোহিনূরের গোলে প্রথমার্ধে মোহামেডান এগিয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকে পুরো ম্যাচ আবাহনীর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সমতা ফেরাতে পারছিল না। খেলা শেষ হতে যখন ১০ মিনিট বাকি ছিল তখনই হট্টগোলের সূত্রপাত ঘটে। আবাহনীর খোরশেদ বাবুল ডি-বক্সে বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক শর্ট নেন মোহামেডানের পোস্টে। গোলরক্ষক মহসিন দৃঢ়তার সঙ্গে সে শর্ট রু'খে দেন।

কিন্তু আবাহনীর দা'বি ছিল, বল ধরলেও মহসিন টাচলাইন ক্র'শ করেছেন। অর্থাৎ গোল। সালাউদ্দিন, চুন্নু, হেলালরা তাৎক্ষণিক ছু'টে যান লাইসম্যান মহিউদ্দিনের কাছে। রেফারি মুনির হোসেনও তার কাছে জানতে চান মহসিন টাচলাইন ক্রশ করেছিল কিনা। মহিউদ্দিন যখন না করে দেন তখনই দুই দলের সমর্থকদের মাঝে ভ'য়ঙ্ক'র হ'ট্টগোল বে'ধে যায়। আবাহনীও গোলের দা'বিতে বাকি সময়ে খেলতে আপ'ত্তি করলে ম্যাচটি প'ণ্ড হয়ে যায়। এরপর গ'ণ্ডগোল স্টেডিয়ামের বাইরে ছ'ড়িয়ে পড়ে।

ফুটবলে এ ধরনের ঘ'টনা অনেক ঘ'টেছে। বিশেষ করে দুই প্রধান দলের ম্যাচে হট্টগোল হওয়াটা তখন ছিল স্বাভাবিক ঘ'টনা। অথচ সে দিনের ঘ'ট'নার জন্য আবাহনীকে দা'য়ী করে তাদের ফুটবলারদের সারা রাত রমনায় অস্থায়ী আর্মি ক্যাম্পে রাখা হয়। ওই সময় দেশে ছিল সামরিক শাসন। তাই আবাহনীর পক্ষে কেউ কথা বলতে সাহস পাননি। ২২ সেপ্টেম্বর সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হলেও অধিনায়ক আনোয়ার, কাজী সালাউদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু ও গোলাম রব্বানী হেলাল_ এ চার তারকা ফুটবলারের বিরু'দ্ধে দেশদ্রো'হী মা'মলা করা হয়। সে দিনই সামরিক আদালতে রায় দিয়ে তাদের জেলে পা'ঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। দুপুরের দিকে ট্রেনযোগে হেলাল, আনোয়ারকে রাজশাহী এবং সালাউদ্দিন ও চুন্নুকে যশোর কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। 

বাংলাদেশ তো বটেই, খেলার মাঠে হট্টগোলের জন্য ফুটবলারদের জেলে পাঠানোর ঘ'টনা পৃথিবীতেও তেমন ন'জির নেই। তাই সামরিক শাসন থাকলেও চার ফুটবলারকে জেলে নেওয়ার পরই সারা দেশে নি'ন্দার ঝ'ড় বইতে থাকে।

শেখ হাসিনা, বেগম খালেদা জিয়াও এ ঘ'টনার নি'ন্দা জানিয়ে বিনাশর্তে চার ফুটবলারের মুক্তির দাবি জানান। পরিস্থি'তি উ'ত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে এ ভ'য়ে চার ফুটবলারকে বেশি দিন আর জেলে রাখতে পারেনি। দুই সপ্তাহ পরই তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। এ ঘ'টনা চার ফুটবলারের মনে যেমন দা'গ কে'টেছে, তেমনি এখনও তা মেনে নিতে পারছেন না ক্রীড়ামোদীরা। অনেকের কাছে তাই ২১ সেপ্টেম্বর দিনটি ফুটবলে কালো রাত্রি বা ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর বলেই চিহ্নি'ত হয়ে আছে। কেউ কেউ আবার দিনটিকে বি'ভীষিকার রাত বলে স্মরণ করেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে