টাইগারদের ফিটনেস নিয়ে হতাশ ট্রেইনার
স্পোর্টস ডেস্ক: তামিম ইকবাল মাঠে ছুটছিলেন। ট্রেইনার মারিও ভিল্লাভারায়ন মাঠে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন। ছুটতে ছুটতে হাফিয়ে ওঠা তামিমের জন্য যেন ফিটনেসের পরীক্ষাটা বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। ট্রেনারের চোখে মুখেও একটু হতাশার ছাপ ফুটে উঠছিল। এর আগের দিন কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রথম দিন মাঠে এসেও তামিম ছুটিতে চলে যান। কারণ, প্রথম দিন তামিমকে ব্লিপ টেস্ট দিতে হয় না। তার জন্য শুরুতে রানিং টেস্ট। প্রথম দিন ২৪ জনের ব্লিপ টেস্টের ফলাফলও ট্রেইনারকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। তাই ক্রিকেটারদের ট্রেনিং নিয়ে একবাক্যে জানিয়ে দেন, ‘সবাই আপ টু দ্য মার্ক না।’ তার একটি শব্দেই বোঝা যায় এখনও ফিটনেসে কতটা উন্নতির প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘দেখুন আমরা এ বছর প্রচুর ক্রিকেট খেলেছি। সত্যি বলতে এটা বেশ ভালো। মাঝখানে ফিটনেস নিয়ে কাজ করা হয়নি। আমরা এটা বিবেচনায় রেখেছি। তাদের ফিটনেস মোটামুটি ভালো আছে। উন্নতি করতে আমাদের কাজ করতে হবে। সবাই আপ টু দ্য মার্কে নেই। তবে উন্নতি করছে।’
বিশেষ করে যারা জাতীয় দলে আছেন তাদের ফিটনেস একটু ভালো। কিন্তু জাতীয় দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটারদের ফিটনেসের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। একজন ট্রেনার জানালেন, ‘জাতীয় দলে যারা নিয়মিত খেলে তাদের ফিটনেস ফিফটি-ফিফটি বলা যাবে। কিন্তু জাতীয় দলে যারা নিয়মিত নয় তাদেরটা খুবই খারাপ।’ বিপিএলে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ক্যাচ ছাড়ার মহড়াকেও ফিটনেসের ঘাটতি হিসেবে দেখছেন ট্রেনার ভিল্লাভারায়ন। তিনি বলেন, ‘বিপিএলে সবার ফিটনেস নিয়ে বলা আমার জন্য কঠিন। অনেক ক্যাচ মিস হয়েছে। সেটা হতে পারে ফিটনেসের কারণে। ফিটনেস এবং ফিল্ডিংয়ের মধ্যে গভীর একটা সম্পর্ক আছে। দুটি একসঙ্গেই আগায়। এটা দেখে উন্নতি করা দরকার।’ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অন্যান্য দেশের তুলনায় ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে থাকার কথা ট্রেইনার স্বীকার করে নিলেও তিনি বিশ্বাস করেন, এখনও উন্নতি সম্ভব। মারিও বলেন, আমরা সব সময় উন্নতি করতে পারি। আমি সেটা বলছি না যে আমরা সবার ওপরে আছি বা সঠিক পর্যায়ে আছি। কিন্তু এটাও বলছি না যে বাজে অবস্থা। ভালো, তবে আমরা আরও উন্নতি করতে পারি। রিচার্ড আগামীকাল আসছেন। দেড় বছর ধরে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি।’
জাতীয় দলের প্রায় সব পেসারই কম বেশি ইনজুরিতে আছেন। বিশেষ করে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা সারা বছরই ছোট-বড় ইনজুরি নিয়ে খেলেন। কিন্তু ব্লিপ টেস্টে মাশরাফি, আল আমিন, শফিউলরা ভালো অবস্থানে আছেন। তবে যাদের কিছু কিছু সমস্যা আছে তাদের এখনই কাজ করা দরকার বলেও মনে করেন ট্রেনার। পেসারদের ফিটনেস নিয়ে তিনি বলেন, ‘গত এক মাস বা তার চেয়ে বেশি সময় ধরে রুবেলের কাফ ইনজুরি। গত বছর অনেক ব্যস্ত সময় গেছে। ইনজুরি হতেই পারে। এটা শুধু বাংলাদেশেই নয়, আন্তর্জাতিক সব দলেই হয়ে থাকে। খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাজ করা দরকার। ঘরোয়া দলের সঙ্গেও কাজ করা দরকার। তাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে বোলিং করতে হবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ।’
ভিল্লাভারায়ন ক্রিকেটারদের ফিটনেস নিয়ে শতভাগ সন্তুষ্ট না হতে পারায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে বর্তমানে দলে থাকা ক্রিকেটাররা কতটা প্রস্তুত আসন্ন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার জন্য ট্রেইনার অবশ্য এখনও আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় তারা প্রস্তুত। অনেক ম্যাচ প্র্যাকটিস হয়েছে। বিপিএলে অনেক ম্যাচ খেলেছে তারা। প্রায় প্রতিদিনই খেলেছে। তো কারা আপ টু দ্য মার্কে নেই সেটা আমাদের বের করতে হবে। আমাদের উন্নতি করা প্রয়োজন। বিপিএলের পর আমরা বিশ্রাম পেয়েছি। ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু হচ্ছে। যারা আমার সঙ্গে নেই তাদের আলাদাভাবে কাজ করা উচিত। আর যখন তাদের পাবো তাদের নিয়ে কাজ করবো। বিসিএল শুরু হচ্ছে। তাই আলাদাভাবে হলেও তাদের কাজ শুরু করা দরকার। সূত্র : মানব জমিন
৫ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/আরিফুর রাজু/এআর