বৃহস্পতিবার, ০৪ মার্চ, ২০২১, ০৪:৪৮:০৮

বিজেপির রাজনীতিতে আসছেন না, জানিয়ে দিলেন সৌরভ গাঙ্গুলী

বিজেপির রাজনীতিতে আসছেন না, জানিয়ে দিলেন সৌরভ গাঙ্গুলী

স্পোর্টস ডেস্ক : রাতারাতি কোনও নাটকীয় পরিবর্তন না-হলে অথবা হঠাৎ করে তিনি ফের মত পরিবর্তন না-করলে সৌরভ গাঙ্গুলী এখনই রাজনীতিতে আসছেন না। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বঙ্গে বিজেপি-র মুখ হয়ে ওঠার সম্ভাবনাও কার্যত মিলিয়ে যাচ্ছে। আগামী ৭ মার্চ কলকাতার ঐতিহাতিক ব্রিগেড ময়দানে নরেন্দ্র মোদির জনসভা রয়েছে।

সেখানে সৌরভ হাজির থাকতে পারেন এবং সে দিনই আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর বিজেপিতে যোগদান সম্পন্ন হতে পারে বলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু বুধবার বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, জল্পনা আপাতত জল্পনাই থেকে যাচ্ছে। এখনই বাস্তব রূপ নিচ্ছে না। সৌরভ এখনই রাজনীতির ময়দানে ব্যাট করতে আগ্রহী নন। সূত্রের খবর, সৌরভ তার এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা বিজেপি হাইকম্যান্ডকে জানিয়েও দিয়েছেন।

রাজনৈতিক ইনিংস শুরু নিয়ে জল্পনায় ইতি টানার ব্যাপারে সৌরভ নিজে অবশ্য কোনও মন্তব্যই করেননি। তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও কোনও সাড়া দেননি। এ দিন সন্ধ্যা থেকে আবার নতুন জল্পনা শুরু হয়, সৌরভ এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সাক্ষাৎকার নিয়ে। চাউর হয়ে যায়, সৌরভ রাজভবনে যাচ্ছেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তিনি রাজভবনে যাননি।

ভারতের সর্বকালের অন্যতম সফল অধিনায়ক এবং বাংলার 'দাদা'র রাজনৈতিক ইনিংস নিয়ে গত ক'মাসে জল্পনা কম হয়নি। তাতে মশলা যোগ হয়, সৌরভ বোর্ড প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব অমিত শাহ-পুত্র জয়, সৌরভ প্রেসিডেন্ট। তার সঙ্গে শাহ পরিবারের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে চর্চা শুরু হয় দেশের ক্রিকেট ও রাজনৈতিক মহলে। বলাবলি হতে থাকে, বাংলায় নেতৃত্বের মুখ খুঁজছে বিজেপি, তাই সৌরভ হতে পারেন তাদের সেরা পছন্দ।

অন্য দিকে, অমিত-পুত্র জয় যেহেতু বোর্ড প্রশাসনে সৌরভের সতীর্থ, তাই ক্রিকেট মাঠের বৃত্ত ছাড়িয়ে পিতা-পুত্রের মাধ্যমে রাজনৈতিক সেতুবন্ধনের সম্ভাবনা জোরালো হতে থাকে। এ নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই যে বিজেপি হাইকম্যান্ড সৌরভকে বঙ্গে তাঁদের পার্টির মুখ করার জন্য খুবই আগ্রহী ছিলেন। বিজেপির উচ্চ নেতৃত্ব এ নিয়ে বেশ কয়েক বার সৌরভের সঙ্গে কথাও বলেছেন বলে শোনা যায়। 

এক সময় জল্পনা খুবই জোরালো হয়ে উঠেছিল যে, সৌরভ বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন। বঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে দাদা বনাম দিদি—এই ধুন্ধুমার দ্বৈরথের চিত্রনাট্যও কেউ কেউ লিখে ফেলেছিলেন। সৌরভ নিজেও কি একেবারে আগ্রহ প্রকাশ করেননি? রাজনৈতিক মহলের খবর, একটা সময় তিনি গুরুত্ব দিয়ে ভাবছিলেন, দেশের হয়ে ব্যাটিং করেছি। অধিনায়কত্ব হয়েছে। কমেন্ট্রি করেছি। ক্রিকেট প্রশাসনে এলাম। বোর্ড প্রেসিডেন্ট হয়েছি। এর পরে কী? 

রাজনীতির ময়দানে নামলে তো নামা যেতেই পারে। কেউ কেউ বলেছিলেন, ক্রিকেটের ময়দান আর রাজনীতির খেলা দুটো সম্পূর্ণ আলাদা ব্যাপার। একটাতে সফল হয়েছি মানেই অন্যটায় হব, এ রকম নিশ্চয়তা নেই। আবার কারও কারও মত ছিল, সৌরভ যেহেতু তার ক্রিকেট মস্তিষ্ক এবং দল পরিচালনায় মুন্সিয়ানার জন্য বিখ্যাত, তার মধ্যে এক জন ভাল জননেতার গুণও তো থাকতে পারে। তাই রাজনীতির ময়দানে এলেও তিনি খুব একটা খারাপ করবেন না।

শোনা যাচ্ছিল, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে সৌরভকে তুলে ধরতে চাইছিল বিজেপি। 'হ্যাঁ' বললে সৌরভকে প্রচারে বেরোতে হবে। জনসভা করতে হবে। পার্টির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে ডুবে থাকতে হবে। হৃদ রোগের সমস্যা দেখা দেওয়ার পরে তার যা রুটিন চলছে, সে ক্ষেত্রে তা ব্যাহত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। তাই এমন হতেই পারে যে, শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে আপাতত রাজনৈতিক ময়দানে অবতীর্ণ হওয়া থেকে পিছিয়ে এলেন সৌরভ। সূত্র : আনন্দবাজার

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে