শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:৪১:০২

৩ কারণে সৌরভকে সরিয়ে বিসিসিআই সভাপতি হতে যাচ্ছেন জয় শাহ

৩ কারণে সৌরভকে সরিয়ে বিসিসিআই সভাপতি হতে যাচ্ছেন জয় শাহ

স্পোর্টস ডেস্ক: ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিরাট স্বস্তি পেয়েছে। এই রায় অনুযায়ী বোর্ড সভাপতি হিসাবে সৌরভ গাঙ্গুলি এবং সচিব হিসাবে জয় শাহের মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়ার ক্ষেত্রে আইনগত কোনও বাধা নেই। কিন্তু এর পর সময় যত গড়াচ্ছে, তত যে প্রশ্নটা উঠছে, সৌরভ কি আবার বোর্ড সভাপতি হতে পারবেন? 

এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে সেই সম্ভাবনা ক্রমশ কমছে। এর পিছনে রয়েছে তিনটি কারণ। এক, সভাপতি হওয়ার দৌড়ে জয় অনেকটাই এগিয়ে আছেন। শেষ মুহূর্তে কোনও নাটকীয় পরিবর্তন না হলে তারই সভাপতি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। 

কারণ, এ বার সভাপতি হতে না পারলে সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী তাকে আরও ৬ বছর অপেক্ষা করতে হবে। ৩৩ বছর বয়সী জয় স্বাভাবিক ভাবেই সেটা চাইবেন না। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের পুত্র জয় এ বারই ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পদে বসতে চাইবেন। 

৬ বছর পরে বোর্ডের রাজনীতি কোন খাতে বইবে, ভারতের রাজনীতিই বা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, বিজেপি সরকার তখনও থাকবে কি না, তার পুরোটাই অনিশ্চিত। স্বাভাবিক ভাবেই জয় নিজেকে এই চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলতে চাইবেন না।

দুই, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেল, এখনই বোর্ডের নির্বাচন হলে ১৫টি রাজ্য সংস্থা চোখ-কান বুজে জয়কে ভোট দেবে। এর মধ্যে ১৩টি বিজেপি শাসিত রাজ্য আছে। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে থাকা রেল, সার্ভিসেস এবং ইউনিভার্সিটির ভোটও জয় পাবেনই। কোনও রকম তদ্বির, প্রচার ছাড়াই এই ১৮-১৯টি ভোট জয়ের পকেটে।

তিন, পুরো দুনিয়া যখন বন্ধ সেই সময় সুষ্ঠু ভাবে আইপিএল হয়েছে। অধিকাংশ রাজ্য সংস্থাই এর জন্য জয়কেই কৃতিত্ব দিচ্ছে। আইপিএল থেকে বোর্ড যে বিপুল লাভ করেছে, তার অংশও রাজ্য সংস্থাগুলি পেয়েছে। ফলে তারাও আর্থিক দিক দিয়ে লাভবান হয়েছে। যাঁর কারণে তাদের কোষাগার ফুলে-ফেঁপে উঠছে বলে রাজ্য সংস্থাগুলি মনে করছে, স্বাভাবিক ভাবেই তাঁকে চাইবে তারা। 

শুধু তাই নয়, আইপিএল-এর টেলিভিশনস্বত্ব বিক্রি হয়েছে মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া ৪৮,৩৯০ কোটি টাকায়। রাজ্য সংস্থাগুলি মনে করছে, এটিও সম্ভব হয়েছে জয়ের জন্যই। একটি রাজ্য সংস্থার কর্মকর্তা বলেই দিলেন, ‘‘এ বার জয় শাহেরই দায়িত্ব নেওয়া উচিত। প্রায় সব রাজ্য সংস্থাই ওকে সমর্থন করবে।’’

এই ৩ কারণে সৌরভকে সরিয়ে বিসিসিআই সভাপতি হতে যাচ্ছেন জয় শাহ। সৌরভ নিজেও হয়ত এগুলি জানেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তার সভাপতি হতে কোনও বাধা না থাকলেও সেই কারণেই হয়তো তিনি তেমন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেননি। মামলার নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার পরেও তিনি বলেছেন, ‘‘এটি আদালতের বিচারাধীন বিষয়। ফলে এই নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাই না।’’ 

হয়তো এড়িয়েই যেতে চেয়েছেন বিষয়টি।  ক্রিকেট প্রশাসনে যুক্ত হতে চাইলে তার সামনে এখন একটিই রাস্তা খোলা থাকছে। সেটি হল, আইসিসির চেয়ারম্যানের পদ, যা আগামী নভেম্বরে খালি হওয়ার কথা। কিন্তু সেখানেও থাকছে বেশ কিছু প্রশ্ন। কারণ, শোনা যাচ্ছে এই পদে আসার জন্য চেষ্টা শুরু করেছেন সাবেক বিসিসিআই সভাপতি এন শ্রীনিবাসন। 

তা ছাড়া এখন যিনি এই পদে রয়েছেন সেই গ্রেগ বার্কলের তিন বছরের মেয়াদ এ বার শেষ হলেও তিনি আরও দুইবছর এই পদে থাকার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। শ্রীনিবাসন বা বার্কলে বা অন্য কেউও যদি এই লড়াইয়ে না থাকেন, তা হলেও হয়তো সৌরভের পক্ষে এই পদে আসা ততটা মসৃণ হবে না। 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে